'সঞ্জু'র ট্রেলারটিতে সঞ্জয় দত্তের চরিত্রের কোন দিকটি উঠে আসে?

সিনেমায় আসল সত্যিটাকে তুলে ধরা হয়েছে কী না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে

 |  3-minute read |   05-06-2018
  • Total Shares

এবার সেই তারকা ফিরলেন 'দত্ত'-এর চরিত্রে। আর এই চরিত্রে তিনি দারুণ অভিনয় করলেন। দীর্ঘ অপেক্ষার পর হিন্দি ছায়াছবি 'সঞ্জু'-র যে ট্রেলারটি প্রকাশিত হয়েছে সেটা দেখে প্রথমে আমার এটাই মনে হয়েছিল। এখানে আমি কয়েকটি শব্দ ব্যবহার করছি যেগুলো আগেও অনেকবার হয়ত ব্যবহৃত হয়েছে তাই মাফ চেয়ে নিলাম। সঞ্জয় দত্তের জীবনের উপর ভিত্তি করে যে হিন্দি ছবিটি বানানো হয়েছে সেটা সেটা শুধু ভালো দিকগুলোই তুলে ধরা হয়েছে আর রণবীর কাপুরের অভিনয় জীবনে যখন একের পর এক সিনেমা বক্স অফিসে মার খেয়েছে তখন হয়তো এই সিনেমাটি তাঁর অভিনয় জীবনে সাফল্য এনে দেবে।

বড় মাপের ব্যক্তি যাঁরা এখনও জীবিত আছেন সিনেমার পর্দায় তাঁদের জীবনকে ফুটিয়ে তোলার নানা রকম সমস্যা থাকে, সেটা জানা সত্ত্বেও রণবীর কাপুর পর্দায় সঞ্জয় দত্তের চরিত্রটিকে দারুণ দক্ষতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন। রণবীর কাপুর যথেষ্ট যত্নসহকারে পর্দায় সঞ্জয় দত্তের লাগামছাড়া ও রঙিন জীবনকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন, সিনেমায় একটি সংলাপ আছে যেখানে রণবীর কাপুর বলছেন,  "ইতনা ভ্যারাইটি-ওয়ালা লাইফ আপকো কিধর মিলেগা?"

ট্রলারের শুরুতে সঞ্জয় দত্তের ছোটবেলার দিনগুলো দেখানো হয়েছে যেখানে মাদকাসক্ত হয় পড়া, মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্ক এবং বহু চর্চিত আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে ওঁর যোগ তথা মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে নানা সমালোচনার কথা স্বীকার করেছেন। আর আমি যদি সব বিবেচনা করে ঠিক বুঝে থাকি তাহলে আমার মনে হয় যে ছবিটির নির্মাতারাও বোঝাবার চেষ্টা করেছেন যে 'ঠিক' থাকার জন্য তাঁরা কোনও সত্যই গোপন করেননি।

sanju_body_060518081218.jpg

ট্রেলারটি দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে ছবির পর্দায় সঞ্জয় দত্তের জীবনকে আরও বেশি জীবন্ত করে তুলতে তাঁর চরিত্রের এমন কিছু খারাপ দিক দেখানো হয়েছে যেগুলো দর্শকের সামনে তুলে ধরায় সঞ্জয় দত্ত এতটুকু কুণ্ঠা বোধ করেননি। ভারতীয় সিনেমা জগতের অন্যতম বিতর্কিত অভিনেতা হলেন সঞ্জয় দত্ত।

অভিনেতার আসল জীবনে না হলেও এই সিনেমায় কিন্তু সঞ্জয় দত্ত তাঁর অতীতের একটা বড় অন্ধকার দিককে তুলে ধরার সময় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করার একটা সুযোগ পেয়েছেন। 

সিনেমায় রণবীর কাপুর অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের ভূমিকায় দারুণ মানিয়েছেন। হবহু সঞ্জয় দত্তের মতো গলার স্বরে রণবীর কাপুর বলেন, "ম্যায় বেওরা হুঁ, ম্যায় ঠরকি হুঁ, ড্রাগ অ্যাডিক্ট হুঁ, সব হুঁ। ..লেকিন ম্যায় টেরোরিস্ট নাহিঁ হুঁ।"

শাস্তি ঘোষণা হওয়ার পর মিডিয়ার সামনে সঞ্জয় দত্তের সেই কান্নাটা আপনার মনে পড়ে যাবে।

এখানে বোধহয় আমার একটু সচেতন হওয়া উচিৎ, না হলে হয়তো আমিও ওই দলেই পড়ে যাব যাঁরা একজন আসামিকে হিরো হিসাবে দেখাবার চেষ্টা করেছেন। তাহলে কী সিনেমাটিকে সমালোচনার বিষয়বস্তু শুধু এই একটিই?

আমার মনে হয় একটি ভালো সিনেমাকে শুধুমাত্র একটি সমালোচনার ভিত্তিতে বিচার করাটা ঠিক হবে না।

sanju_body2_060518081231.jpg

দর্শকের মনের ভাবনাকে একজন পরিচালক তাঁর নিজের মতো করে চালিত না করে দর্শককে নিজের মতো করে ভাবতে দেওয়াই একজন চিত্রনির্মাতার অন্যতম দায়িত্ব। তাহলে রাজকুমার হিরানিও কী বড় মাপের অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে বড় পর্দায় সম্মান জানিয় যে সিনেমাটি বানিয়েছেন তাতে কী তিনি উপযুক্ত ন্যায় করতে পারবেন। কিন্তু এখানে আমি একটা কথা মনে করিয়ে দেব, সেটা হল ইতিপূর্বে রাজকুমার হিরানি ও সঞ্জয় দত্ত বহু ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করেছেন।

তাই সিনেমায় খাঁটি সত্যিটাকে তুলে ধরা হয়েছে কী না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

ব্র্যান্ড হিরানি যখন তাঁর সিনেমার হিরো হিসাবে রণবীর কাপুরকে নিলেন তখন সেই সিনেমাটা ঠিক কীরকম দেখতে হতে পারে সেটাই আসলে 'সঞ্জু'-র ট্রেলারে দেখানো হয়েছে।

হিরো সঞ্জয় দত্ত থেকে ১৯৯০-তে প্রতিটি খবরের কাগজের শিরোনামে পৌঁছে যাওয়ার এই গোটা যাত্রাটা দারুণ নৈপুণ্যের সঙ্গে রণবীর কাপুর সিনেমার পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন।

সিনেমাটির মধ্যে দিয়ে যে শুধু সঞ্জয় দত্তের চরিত্রের বিভিন্ন দোষের স্বীকারোক্তি ঘটেছে ঠিক তেমন ভাবেই রণবীর কাপুরের চার বছরের অভিনয় জীবনে তাঁর গায় যে ব্যর্থতার তকমা লেগেছিল সেটাও হয়তো মুছে যাবে। আশা করব সিনেমাটি সাফল্যের মধ্যে দিয়ে অভিনেতা হিসাবে রণবীর কাপুরের ভাগ্য ফিরবে। আর তাও যদি নাও হয় তাহলে এ বার হয়তো তাঁর জন্য স্ত্রীভাগ্য কাজ করে যেতে পারে। আর যদি এই সবকিছু ব্যর্থ হয় তা হলে সিনেমাটি নিশ্চয়ই 'ভট ন্যাচারালি'-তে সফল হবেই।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

GRIHA ATUL GRIHA ATUL @grihaatul

Author is special correspondent with India Today television.

Comment