না, ছবিগুলোর সঙ্গে কোচবিহার নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই
ছবিগুলোর সঙ্গে যে দাবি করা হয়েছে তা মিথ্যে এবং বিভ্রান্তিকর
- Total Shares
নির্বাচনী মরশুমে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট ভাইরাল হয়েই থাকে। কিন্তু ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন সংবাদমাধ্যম কিংবা সাংবাদিকদের নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট ভাইরাল হয়ে উঠছে।
সম্প্রতি, 'Md Nurulla Mondal' নামের জনৈক ফেসবুক ব্যবহারকারী পাঁচটি ছবি পোস্ট করে দাবি করেছেন যে কোচবিহারে ভোটের দিন এবিপি আনন্দের সাংবাদিক প্ৰকাশ সিনহা সাংবাদিকতার বদলে 'গুন্ডাগিরি' করছিলেন। ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়াররুম তদন্ত করে দেখেছে এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যে। পোস্টে ব্যবহৃত পাচঁটির মধ্যে তিনটির ছবির সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই। ২০ এপ্রিল 'পশ্চিমবঙ্গ মুসলিম বুদ্ধিজীবী মঞ্চ (গ্রূপ)' নামের একটি ফেসবুক পেজে এই পোস্টটি করা হয়। পোস্টে মোট পাঁচটি ছবি ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে প্রথম দুটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে দু'জন হাতাহাতিতে লিপ্ত। তৃতীয় ছবিতে একজন এবিপি আনন্দকে সাখ্যাৎকার দিচ্ছেন। চতুর্থ ও পঞ্চম ছবিতে দেখা যাচ্ছে কোনও এক মন্দির প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে দু'জন সেলফি তুলছেন।
এই পোস্টের সঙ্গে একটি ক্যাপশনও দেওয়া হয়েছে, "কোচবিহার ভোটের দিন সাংবাদিকতার বদলে গুন্ডাগিরি, বিচিপির ক্যাডারদের হয়ে কাজ করেছিল ABP আনন্দের প্রকাশ সিনহা।" ক্যাপশনে 'বিচিপি' লেখা হলেও এই পোস্টের কমেন্ট বক্সে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যে অনেকেই "বিচিপি" শব্দটিকে "বিজেপি" বলে ধরে নিয়েছেন।
ইতিমধ্যে, পোস্টটি ১৩০ বারের বেশি শেয়ার হয়ে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ঠ গ্রূপে প্রায় বেশি সদস্য রয়েছেন।
এখানে দেখতে পাবেন পোস্টটির আর্কাইভ।
আমরা প্রথম দুটি ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখেছি যে ছবি দুটি ২০১৬ সালের। ছবিতে যে দু'জনকে মারামারি করতে দেখা যাচ্ছে তাঁদের একজন হলেন এবিপি আনন্দের সাংবাদিক প্রকাশ সিনহা। অন্যজন, তৎকালীন ইটিভি নিউজ (বাংলা)-র সাংবাদিক সোমরাজ ব্যানার্জি। এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে একটি খবরও প্রকাশ করা হয়েছিল।
খবরের দাবি, সেই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম হন স্বাগতম হালদার। ফল প্রকাশের পর সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা স্বাগতমের বাড়ির সামনে ভিড় করেন। সেই সময়ই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন প্রকাশ ও সোমরাজ। স্বাগতমকে কে প্রথম তাঁর অফিসের নিউজ ষ্টুডিওতে নিয়ে যাবেন তা নিয়েই এই হাতাহাতির সূত্রপাত।
প্রকাশ ও সোমরাজ দু'জনেই এই ঘটনার ও ছবিগুলোর সত্যতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।
পোস্টে ব্যবহৃত দ্বিতীয় ছবিতে একজনকে মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে সাখ্যাৎকার দিতে দেখা যাচ্ছে। ছবিটি এএবিপি আনন্দের সাংবাদিক পার্থ প্রতিম ঘোষের।উত্তর দিনাজপুরের কাঁটা ফুলবাড়ির একটি নির্বাচনী কেন্দ্রে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর পর তাঁকে আহত অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বসেই তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন।
পোস্টে ব্যবহৃত শেষ দুটি ছবিতে প্রকাশ সিনহাকে দেখা যাচ্ছে কোনও মন্দির চত্ত্বরে আর একজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। প্রকাশ দাবি করেছেন, "ছবি দুটি বছরখানেক আগেকার যখন আমি অসমে অফিসের কাজে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে আমি কামাখ্যা মন্দিরেও গিয়েছিলাম এবং সহকর্মী ক্যামেরাম্যানের সঙ্গে এই ছবিটি তুলে ছিলাম।"
সুতারং দেখা যাচ্ছে, Md Nurulla Mondal তাঁর পোস্টে যে দাবি করেছেন তা সত্যি নয় এবং যথেষ্ট বিভ্রান্তিকর।
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE
The number of crows determines the intensity of the lie.
- 1 Crow: Half True
- 2 Crows: Mostly lies
- 3 Crows: Absolutely false