আয়ুষ্মান ভারত-এ ভরসা নেই, এমন কথা বলেননি দিলীপ ঘোষ
ফেসবুকে দাবি, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে ভরসা নেই বলে তিনি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করতে চান
- Total Shares
নির্বাচন যখন দোরগোড়ায় তখন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দাবি-পাল্টা দাবি চলতেই থাকবে। আর, এই ধরণের দাবি ও পাল্টা দাবি নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় জুড়ে শোরগোল পরে যায়।
'আমার দিদির অনুগামী' নামের একটি ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করেছে যে "মোদীর আয়ুষ্মান ভারতের উপর ভরসা নেই বিজেপির রাজ্য সভাপতির, তাঁর ভরসা সেই দিদির স্বাস্থ্য সাথী কার্ড।" ভিডিওটি-তে দিলীপ ঘোষকে বলতে শোনা যাচ্ছে, "স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে আপত্তি কি আছে। দিদিমণি তো ১০কোটি লোককে দেবেন বলেছেন। যদি, সুযোগ পাই তো আমিও করে নেব।"
এখানে পোস্টটির আর্কাইভ দেখতে পাবেন।
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে এই পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর।
তদন্ত করতে গিয়ে আমরা প্রথমেই দিলীপ ঘোষ তার মূল বক্তব্যে ঠিক কী বলেছিলেন তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি।
দেখা যাচ্ছে, ১৩ই জানুয়ারি এই মন্তব্যটি করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। দিলীপ ঘোষের পরিবারের কিছু লোক ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের একটি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের বুথে দাঁড়িয়ে নিজেদের স্বাস্থ্য সাথী কার্ড সংগ্রহ করেছিলেন। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে দিলীপ ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে জানান, "আমি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের বিরুদ্ধে নয়। আমি তৃণমূল সরকারের প্রতারণার বিরুদ্ধে। সুযোগ পেলে আমিও স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আবেদন করব।"
এই বক্তব্যের সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, "রাজ্যের দশ কোটি লোকের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশও যদি এর সুবিধা চান তাহলে বছরে রাজ্যসরকারকে ৫০ হাজার কোটি টাকা গুনতে হবে। অথচ, স্বাস্থ্য বাজেটে রাজ্যের বরাদ্দ মাত্র ১২ হাজার কোটি টাকা। তাহলে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের খাতে যে অর্থ খরচ হবে তা কোথা থেকে আসবে।"
তাঁর বক্তব্যে কোথাও তিনি বলেননি যে মোদীর আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের উপর তাঁর আস্থা নেই তাই তিনি আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে আবেদন করেননি। বরঞ্চ, এর পরেও তিনি স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সমালোচনা করেছেন।
আজ তকের ইউটুব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দিলীপ ঘোষকে বলতে শোনা যাচ্ছে, "এ রাজ্যের বাসিন্দা হিসেবে আমার পরিবারের সরকারি সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু, আমি আবারও বলছি, এটা তৃণমূলের ফাঁদে পা দেওয়া। এখান থেকে সুবিধা পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।"
এখানে উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের তরফে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে চালু করতে দেওয়া হয়নি। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যদি আয়ুষ্মান প্রকল্পের পুরো ১০০ শতাংশ অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার বহন করে তবেই পশ্চিমবঙ্গে আয়ুষ্মান ভারত চালু করা সম্ভব। এই প্রকল্পের ৪০ শতাংশ খরচ রাজ্য বহন করবে না।"
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প সম্পর্কিত কিছু পরিসংখ্যান দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষবর্ধনও জানিয়েছিলেন, "দিল্লি, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও তেলাঙ্গানা - এই চারটি রাজ্যে এই প্রকল্প চালু করা সম্ভব হয়নি।"
আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সরকারি ওয়েবসাইটেও দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কিত তথ্যের পেজটি একেবারে ফাঁকা।
সুতারং, সব দিক বিচার করলে, ফেসবুকের এই দাবি যে বিভ্রান্তিকর তা বলাইবাহুল্য।
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE
The number of crows determines the intensity of the lie.
- 1 Crow: Half True
- 2 Crows: Mostly lies
- 3 Crows: Absolutely false