ফ্যাক্ট চেক: পাকিস্তানী সৈন্যের পুরনো ছবি নিয়ে বিভ্রান্তিকর দাবি সোশ্যাল মিডিয়ায়

দাবি কাশ্মীরের দিকে ধেয়ে আসছে পাক সৈন্য

 |  3-minute read |   13-08-2019
  • Total Shares

অনুচ্ছেদ ৩৭০-হীন কাশ্মীরের বদলে যাওয়া সময়কে মানুষ মানিয়ে নিতে পেরেছেন কি? কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে তর্ক বিতর্ক চলছেই। তার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তৎপর কিছু মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই ছবি পোস্ট করেছেন যে কাশ্মীরের বিশেষ স্টেটাস সরিয়ে দেওয়ার পর পাকিস্তানী সৈন্য ধেয়ে আসছে কাশ্মীরের দিকে। ইন্ডিয়া টুডে আন্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম খোঁজ খবর করে দেখেছে পোস্ট করা ছবিগুলি সবই পুরনো। 

গত ৬ অগাস্ট এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মহম্মদ ইব্রাহিম হাওলাদার একটি ছবি পোস্ট করেন যেখানে দেখা যাচ্ছে বেশ কিছু সৈন্য মার্চ করছেন। ছবির ক্যাপশন, ''কাশ্মীর সীমান্তে ধেয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান বাহিনী l ওদিকে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠলে কাশ্মীর সীমান্তে মোতায়েন ভীত সন্ত্রস্ত ভারতীয় সেনারা যাতে উপত্যকা ছেড়ে পালিয়ে আসতে না পারে,সেজন্য ভারত তার পলায়নকামী সেনাদের স্রোত ঠেকাতে আরো ২০হাজার সেনা মোতায়েন করেছে।''

kashmir-photo-body_081319073510.jpg

এখানে দেখতে পারেন পোস্টটির আর্কাইভ।

আমেনা বিনতে আজিজুর রহমান-ও এই একই ছবি শেয়ার করেছেন। তিনি ছাড়াও পোস্টটি ফেসবুকে বহু মানুষ শেয়ার করেছেন।  

ইন্ডিয়া টুডে এই দাবিটি নিয়ে খোঁজ খবর করতে শুরু করে। আমরা দেখি পাকিস্তান কাশ্মীরের দিকে সৈন্য নিয়ে ধেয়ে আসছে এমন কোনও খবর সরকারের তরফ থেকে কোথাও নেই। কোনো নিউজ মিডিয়াতে তো নেইই, সাম্প্রতিক কোনও সরকারি বয়ানেও নেই। দ্বিতীয়ত: যে ছবিগুলি ব্যবহার করা হয়েছে এই দাবি করে সেই সব ছবিগুলিই পুরনো।

ভারত কাশ্মীরে সৈন্য পাঠিয়েছিল ঠিকই কিন্তু সে সংক্রান্ত সব রিপোর্টই এসেছে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের পর।

এছাড়া আগস্টের ৪ তারিখ ভারতীয় সৈন্য, পাক সৈন্যদের একটি ছোট আক্রমণ চুরমার করে দেয়। ভারতীয় সৈন্যদের হাতে চার থেকে পাঁচ জন অনুপ্রবেশকারী মারাও যায় বলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানায। কিন্তু ভয়ে ভারতীয় সৈন্য পালিয়ে আসছে এই দাবি সম্পর্ণ মিথ্যা।

আমরা খুঁজে দেখি মহম্মদ ইব্রাহিম প্রথম যে ছবিটি ব্যবহার করেছেন সেই ছবিটি alamy.com নামের একটি ওয়েবসাইটে স্টক ফটো হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ওয়েবসাইটটির অফিস ইংলান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারে। কেরালাতেও এদের অফিস রয়েছে।

ওয়েবসাইটে ছবিটি আপলোড করা হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৮ মার্চ। ছবিটি তুলেছেন ওয়াইস আসলাম আলি। ছবিটির নিচে লেখা রয়েছে যে, ২০১৬ সালে আফগানিস্তান-পাকিস্তান বর্ডার রোডের চামান নামক জায়গায় পাকিস্তান রিসোলিউশন ডে-তে এই ফ্ল্যাগ মার্চ পাস্ট হয়েছিল। ছবিটির নিচে লেখা আছে যে ছবিটি সঠিক নাও হতে পারে। তবে ছবিটি কোনও ঐতিহাসিক ঘটনা অথবা কোনও নিউজ রিপোর্টিংয়ের। কিন্তু ছবিটি তিন বছর পুরোনো এবং সাম্প্রতিক কালের নয় সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে আফওয়া।

দ্বিতীয় ছবিটি সেই ছবিটিও পুরোনো বলে আফওয়া খোঁজ নিয়ে জেনেছে। ছবিটি ইউক্রেনের মিরর উইকলি খবরের কাগজে ২০১৪ সালের, ১২ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল। ছবিটির নিচে ক্যাপশনে লেখা আছে 'রাশিয়া থেকে মিলিটারি এবং অস্ত্রশস্ত্র ইউক্রেনিয়ান বর্ডার পার হচ্ছে। এই ছবিটি নিয়ে আবার কয়েকটি মার্কিন ওয়েবসাইট ফ্যাক্টচেক করেছে, এবং তাও ২০১৫ সালে।

ফোর্ট্ট্রেসআমেরিকা নামের একটি ওয়েবসাইট একটি ফ্যাক্টচেক আর্টিকেল প্রকাশ করে জিম ইনহোফের শেয়ার করা কয়েকটি ছবি নিয়ে। ওকলাহমা থেকে রিপাবলিকান পার্টির সেনেটর জিম ইনহফে একবার এই ছবিগুলি শেয়ার করেন এই বলে যে সে সময় রাশিয়া ইউক্রেনে আরও মিলিটারি পাঠাচ্ছে। সুতরাং আমেরিকার উচিত ইউক্রেনকে আরও মিলিটারি সাহায্য পাঠানো। এরপর 'দা ওয়াশিংটন ফ্রিবেকন'-ও এই ছবিগুলির সময়কাল নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তারা লেখে জিম যে ছবিগুলি শেয়ার করেছেন সেই ছবিগুলি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে।  ফ্রি-বেকনের দাবি অনুযায়ী ছবিগুলি রাশিয়া এবং জর্জিয়ার মধ্যে অশান্তি চলাকালীন ২০০৮ সালে তোলা। জিমের অফিসের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করলে জানা যায় ইউক্রেনের কোনও পার্লামেন্ট সদস্যদের থেকে ছবিগুলি পাওয়া গেছে। 

পরে বাজফিড নিউজ-ও একটি খবর করে যে ইউক্রেনের পার্লামেন্টের সদস্য যে ছবিগুলি দিয়েছিলেন সেগুলির মধ্যে কিছু ছবি ২০০৮ সালে রাশিয়া জর্জিয়া যুদ্ধের সময়ের। এই ছবিটিই ঠিক সেই ছবি কিনা তা বলা না গেলেও এটা স্পষ্ট যে ছবিটি অনেক পুরোনো এবং কাশ্মীরের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।

 

 

ফ্যাক্ট চেক: পাকিস্তানী সৈন্যের পুরনো ছবি নিয়ে বিভ্রান্তিকর দাবি সোশ্যাল মিডিয়ায়
Claimকাশ্মীর সীমান্তে ধেয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান বাহিনীl Conclusion আমরা দেখি পাকিস্তান কাশ্মীরের দিকে সৈন্য নিয়ে ধেয়ে আসছে এমন কোনও খবর সরকারের তরফ থেকে কোথাও নেই। সব ছবিগুলিই পুরনো।
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE

The number of crows determines the intensity of the lie.

  • 1 Crow: Half True
  • 2 Crows: Mostly lies
  • 3 Crows: Absolutely false
If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

RATNA RATNA @blowinindwind

The writer is citizen of planet earth, journalist, documentary filmmaker

Comment