না, এই লোকসভা ভোটের আগে মধ্যপ্রদেশে ইভিএম কারচুপির কোনও ঘটনা ঘটেনি
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল পোস্টটি পুরনো ঘটনা এবং বিভ্রান্তিকর
- Total Shares
ভোটের স্টেজে প্র্যতেকবারই ইভিএম হয়ে উঠে মুখ্য চরিত্র যাকে নিয়ে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের দিস্তা ফাইল জমা পড়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
২০১৯ লোকসভার প্রথম দফার ভোট পর্বের আগেই ইভিএম বিতর্ক শুরু হয়ে গেল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারীর অভিযোগ, ইভিএম কারচুপি করে বিজেপি ভোট তুলছে এবং ৮০-২০ অনুপাতে বিজেপির পক্ষে ভোট তোলার ব্যবস্থা সারা হয়ে গেছে। ইন্ডিয়া টুডে আন্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম তদন্ত করে দেখেছে যে পোস্টটি সম্পূর্ণ ভুল।
১০ এপ্রিল অর্থাৎ ভোট শুরুর ঠিক আগের দিন শেখ সফি নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী পোস্ট করেছেন যে মধ্যেপ্রদেশে কংগ্রেসের দাবিতে ইভিএম পরীক্ষা করা হয়েছে, জানা গেছে যে ইভিএম মেশিনে কারচুপি ছিল এবং সমস্ত ভোটই বিজেপির পদ্মফুল চিহ্নে পড়ছে। পোস্টটির উপরে লেখা আছে, ''বিজেপির ভরসা বিজেপির কুচক্র আবার সামনে আসছে। ভিভিপ্যাডে জালিয়াতি ১০০ ভোট পড়লে ৮০ টা ভোট বিজেপির ৮০ ২০ অনুপাতে।''
পোস্টটির আর্কাইভ দেখতে পারেন এখানে।
রাজীব ঘোষাল নামের আরও এক ফেসবুক ব্যবহারকারী এই একই পোস্ট করেছেন।
তাঁর পোস্টটির ওপরে লেখা, ''ধরা পড়ে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন ও ফেকুশার ইভিএম কারসাজি।
ভোট যাতেই দিন, ছাপ পড়ছে পদ্মফুলে। দেশের লক্ষ লক্ষ ইভিএমে এই কারসাজি করা আছে, কটা আর ধরা পড়বে, ফাঁস হবে মিডিয়ায়!''
এই পোস্টটির আর্কাইভ এখানে দেওয়া হল।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত একটি লেখা শেয়ার হয়েছে ১৫০০ বারের বেশি আর একটি পোস্ট শেয়ার হয়েছে ৭০০ বারের কাছাকাছি।
ইন্ডিয়া টুডে আন্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম এই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টটি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করে।
প্রথমত, পোস্টগুলিতে যে দাবি করা হয়েছে যে, ''মধ্যপ্রদেশে প্রথম দফার নির্বাচনের আগেই কারচুপি ধরা পড়ল ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট মেশিনে''-এই দাবিটিই ভুল, কারণ মধ্যপ্রদেশে প্রথম দফার ভোটই হবে ২৯ এপ্রিল। এরপরে যথাক্রমে মে ৬, ১২ এবং ১৯-এ বাকি দফার ভোট হবে। পোস্টটি করা হয়েছে ১০ এপ্রিল । তাই যে দাবিটি করা হয়েছে যে নির্বাচনের ২৪ ঘন্টা আগে কারচুপি ধরা পড়েছে, তা সর্বৈব মিথ্যা।
দ্বিতীয়ত, এবারের লোকসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশে ইভিএম কারচুপি সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ এখনও কোথাও জমা পড়েনি। আমরা বিষয়টি জানতে গুগল-এ গিয়ে ''ইভিএম ট্যাম্পেরিং ইন মধ্যপ্রদেশ বিফোর লোক সভা ইলেকশন ২০১৯'' টাইপ করি। ২০১৯ নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশে ইভিএম কারচুপি সংক্রান্ত কোনও খবরই আমরা পাইনি।
যা পাওয়া গেছে তা হল মধ্যপ্রদেশে ২০১৮ সালের ইভিএম কারচুপির ঘটনার বেশ কিছু প্রতিবেদন। যা পুরোপুরি জড়িত মধ্যপ্রদেশের সংসদীয় নির্বাচন এবং উপ-নির্বাচনের সঙ্গে। এযাবৎ এব্যাপারে বেশ অনেকগুলি নিউজ রিপোর্ট বেরিয়েছে।২০১৮ সালের মার্চ মাসে নিউজ মিডিয়ায় রিপোর্ট বেরোয় যে মধ্যপ্রদেশে ইভিএম কারচুপির ঘটনা ঘটেছিলো, যার জেরে মধ্যপ্রদেশ সরকার জেলা কালেক্টর এবং এসপিকে সরিয়ে দেয়, এব্যাপারে রিপোর্টও চায় নির্বাচন কমিশন।
গত ১ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে ইন্ডিয়াটুডে একটি রিপোর্ট বার করে যেখানে বলা হয় যে কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি-র সদস্যরা ইভিএম কারচুপি হতে পারে, এমন সন্দেহ করে রাতভর মেশিন পাহারা দিয়েছে।
পরে এও রিপোর্টেড হয় যে, ভোটের আগে নির্বাচন কমিশন স্বীকার করেছে যে ইভিএম মেশিনের ঘরে এক ঘন্টার উপর লাইট চলে গিয়েছিলো।
মধ্যপ্রদেশে সংসদীয় নির্বাচনে ইভিএম কারচুপির অভিযোগ বারবারই উঠেছে।
মধ্যপ্রদেশে আগে বেশ কয়েকবার ইভিএম সংক্রান্ত ব্যাপারে অভিযোগ উঠলেও, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে এরকম কোনও খবর এখনও পর্যন্ত সেখান থেকে আসেনি।
বিষয়টি আরও নিশ্চিত করতে আমরা যোগাযোগ করি আমাদের মধ্যপ্রদেশ প্রতিনিধি হেমেন্দ্র শর্মার সঙ্গে। হেমেন্দ্র জানান এধরণের কোনও অভিযোগ গোটা মধ্যপ্রদেশের কোথাও জমা পড়েনি। ফলে আমরা নিশ্চিত হই যে ফেসবুকে যে পোস্ট করা হয়েছে সেটি পুরোপুরি মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE
The number of crows determines the intensity of the lie.
- 1 Crow: Half True
- 2 Crows: Mostly lies
- 3 Crows: Absolutely false