ফ্যাক্ট চেক: কাশ্মীরি মেয়েটির জন্য সেহরির আয়োজন করা হিন্দু মহিলাকে আরএসএস আক্রমণ করেনি

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বিভ্রান্তিকর দাবী

 |  3-minute read |   02-05-2020
  • Total Shares

সম্প্রতি দুটি ছবির এক কোলাজ ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।তাতে দাবী করা হল রমজানের সময় আরএসএসের গুন্ডারা এক হিন্দু মহিলাকে এক কাশ্মীরি মুসলিম মেয়ের জন্য সেহরির আয়োজন করাতে আক্রমণ করে।

কোলাজে থাকা একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একজন মহিলা হিজাব পরা একটি মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ও মেয়েটি খাবার খাচ্ছেন।অন্য ছবিতে এক আহত মহিলাকে কাঁদতে দেখা যাচ্ছে।ওই মহিলা তার রক্তাত্ত নাকের উপর হলুদ লাগিয়েছেন।

screenshot_050220094517.png

ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) দেখেছে দাবীটি ভুয়ো এবং কোলাজে থাকা ছবি দুটির একে অপরের সাথে সম্পর্ক নেই।বামদিকের মহিলাটি জম্মুতে গত সপ্তাহে কাশ্মীরি মুসলিম মেয়েটির জন্য সেহরির আয়োজন করেছিলেন কিন্তু তার উপর আক্রমণ করা হয়নি।অন্যদিকে, ডানদিকে থাকা মহিলাটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে গুজরাটের খাম্বাটে সাম্প্রদায়িক হিংসায় আহত হয়েছেন।

ফেসবুক পেজ জেকে অফিসিয়াল ছবি দুটির কোলাজ পোস্ট করে লেখে, "সম্প্রতি আরএসএসের গুন্ডারা এক হিন্দু মহিলাকে এক মুসলিম কাশ্মীরি মেয়ের জন্য সেহরির প্রচেষ্টা করায় আক্রমণ করে।ভারত আরএসএসের দখলে। মিডিয়া, বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী এবং জাতীয় সুরক্ষার উপর তাদের পুরো নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে এই দেশ কি স্থিতিশীল থাকবে? !!!!" 

আপনারা এর আর্কাইভ ভার্শনটি এখানে দেখতে পাবেন।এই পোস্ট ফেসবুকটুইটারে ভাইরাল।  

রিভার্স ইমেজ ও কীওয়ার্ড সার্চ করে আমরা কাশ্মীরের কিছু টুইটার ব্যবহারকারীর টুইট থেকে বামদিকে থাকা ছবিটির সম্পূর্ণ অংশের হদিস পাই।রাফকাৎ শোনওয়ারে নামক এমন একজন ছবিটি ফেসবুক ব্যবহারকারী প্রেদুমান গোজার নাম দিয়ে ছবিটি টুইট করেন।

এই সূত্র থেকে আমরা প্রেদুমান গোজা নামক সেই ফেসবুক ব্যবহারকারীকে খুঁজে বার করি।ইনি প্রথম সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিটি পোস্ট করেছিলেন।

আমরা কাশ্মীরি পন্ডিত সেই প্রেদুমান গোজার সাথে ছবিটির ব্যাপারে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করি।প্রেদুমান স্পষ্টভাবে বলেন ভাইরাল এই পোস্টটি সম্পূর্ণ ভুয়ো এবং ছবিতে উপস্থিত তার বৌকে আক্রমণ করা হয়নি।ভাইরাল পোস্টের আহত মহিলাটি অন্য কেউ বলে তিনি জানান।

গোজা আমাদের বলেন ছবিতে থাকা ছোট মেয়েটি কাশ্মীরের সোপোরের বাসিন্দা ও সে এখন তাদের সাথেই আছেন। মেয়েটি জম্মুতে মেডিকেল এন্ট্রান্সের পরীক্ষা দিতে এসেছিল এবং লকডাউনের কারণে আটকে যায়।

গোজা বলেন একদিকে রমজান মাস ও অন্যদিকে মেয়েটি তার পরিবারের সাথে না হওয়ার কারণে তাকে সেহরি দেওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি উঠে পড়েন। তিনি জানান, বহু বছর ধরে দুই পরিবার একে অপরকে চেনে।আতিথেয়তার এই সুন্দর নিদর্শন সংবাদমাধ্যমও তুলে ধরে।

body_050220094556.png

এরপর দ্বিতীয় ছবিটি রিভার্স সার্চ করে আমরা দেখতে পাই কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা সেটি এই বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে পোস্ট করেছিলেন।তাতে দাবী করা হয় মহিলাটি গুজরাটের খাম্বাট শহরে সাম্প্রদায়িক হিংসায় আহত হয়েছেন। 

একটি গুজরাটি নিউজ চ্যানেলও এক ইউটিউব ভিডিওতে ছবিটি ব্যবহার করে এটিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হওয়া খাম্বাটের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা বলে।

এই ছবিটি তখনও ভাইরাল হয়েছিল।এজন্য আমরা আমাদের স্থানীয় রিপোর্টারের সহায়তায় ছবিতে থাকা আহত মহিলার ছেলের সাথে যোগাযোগ করি।

খাম্বাট শহরের বাসিন্দা এই মহিলার নাম হর্ষাবেন ভাভাসার।তার ছেলে পরেশ আফয়াকে জানান ভাইরাল এই পোস্টটি ভুয়ো।তিনি বলেন তার মায়ের আহত হওয়ার এই ছবিটি এবছরের ফেব্রুয়ারীর শেষদিকে শহরে হওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়কার।

তার মা এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলে পরেশ জানান।তিনি তার মায়ের একটি সাম্প্রতিক ছবিও আমাদের পাঠান।

body-2_050220094630.png

সুতরাং, এটি পরিষ্কার যে কাশ্মীরি মুসলিম মেয়েটির জন্য সেহরির আয়োজন করার কারণে আরএসএসের একজন হিন্দু মহিলাকে মারধর করার ভাইরাল দাবীটি ভিত্তিহীন।ছবি দুটির একে অপরের সাথে সম্পর্ক নেই এবং তাতে থাকা মহিলারাও আলাদা।এটাও নিশ্চিত যে কাশ্মীরি মুসলিম মেয়েটির জন্য সেহরির আয়োজন করা মহিলার উপর হামলা করা হয়নি।

(খাম্বাটের নাচিকেত মেহতার ইনপুট সমেত)

 

 

 

ফ্যাক্ট চেক: কাশ্মীরি মেয়েটির জন্য সেহরির আয়োজন করা হিন্দু মহিলাকে আরএসএস আক্রমণ করেনি
Claimরমজানের সময় আরএসএসের গুন্ডারা এক হিন্দু মহিলাকে এক কাশ্মীরি মুসলিম মেয়ের জন্য সেহরির আয়োজন করাতে আক্রমণ করে Conclusion ছবি দুটির একে অপরের সাথে সম্পর্ক নেই। যেখানে কোলাজের বামদিকের ছবিতে থাকা মহিলা এক কাশ্মীরি মুসলিম মেয়ের জন্য সেহরির আয়োজন করেছিলেন, অন্যদিকে তার পাশের ছবির মহিলা গুজরাটের খাম্বাটের দাঙ্গায় আহত হয়েছিলেন।
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE

The number of crows determines the intensity of the lie.

  • 1 Crow: Half True
  • 2 Crows: Mostly lies
  • 3 Crows: Absolutely false
If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment