টেলিভিশনের পর্দায় তৃতীয় লিঙ্গের জন্য স্বয়ংবর সভা, এতে কিসের অস্বস্তি

ব্যক্তিগতভাবে আমি অনুষ্ঠানটিকে স্বাগত জানাই

 |  2-minute read |   12-09-2018
  • Total Shares

সংবাদমাধ্যমে জানতে পারলাম যে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৭ ধারাটিকে সুপ্রিমকোর্ট অবৈধ বলে ঘোষণা করার পর এবার টিভির পর্দায় এই প্রথমবার তৃতীয় লিঙ্গের স্বয়ম্বর সভার আয়োজন করে একটি অনুষ্ঠান দেখান হবে।

ব্যক্তিগতভাবে আমি অনুষ্ঠানটিকে স্বাগত জানাই।

body1_091218035340.jpgব্যক্তিগতভাবে আমি অনুষ্ঠানটিকে স্বাগত জানাই

বলাই বাহুল্য যে টিভির পর্দায় এই অনুষ্ঠানটি দেখান হলে বহু দর্শকই একটু অস্বস্তিতে পড়বেন। ভাবলে খুব অদ্ভুত লাগে যে আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও অনেকসময় স্বাধীনভাবে নিজেদের মত প্রকাশ করতে পারি না। সেই অধিকার থেকে আমরা অনেককেই অবঞ্চিত। এই অধিকার থেকে কেউ কাউকে বঞ্চিত করতে পারে কী?

body4_091218035537.jpg"রাহুল দুলহানিয়া লে জায়গা"

এইধরণের স্বয়ম্বর সভা ভারতীয় টেলিভিশিনের পর্দায় আমরা আগেও দেখেছি। স্বয়ম্বর সভার মাধ্যমে সেলেব্রিটিরা নির্বাচন করে নিয়েছেন তাঁদের হবু স্বামী এবং স্ত্রীকে। ২০০৯ সালে বলিউড অভিনেত্রী রাখি সাওয়ান্ত এমনি একটি স্বয়ম্বরের "রাখি কে স্বম্বর"-এর মাধ্যমে নিজের স্বামীকে নির্বাচন করেছিলেন। অবশ্য পরে যদিও তাঁদের সম্পর্কটি ভেঙে যায়। তারপর ২০১০ সালে রাহুল মহাজন "রাহুল দুলানীয়া যে জায়গা" অনুষ্ঠানে নিজের স্ত্রী নির্বাচন করেন। বঙ্গ ললনা ডিম্পি গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাহুলের বিয়ে হয়। এমনকি কলকাতার একটি চ্যানেলেও এইধরণের একটি অনুষ্ঠান হয়েছিল।

সেইসব অনুষ্ঠানগুলো যখন দর্শক পছন্দ করেছে তখন তৃতীয় লিঙ্গের স্বম্বরের অনুষ্ঠান হতে বাধা কোথায়?

body3_091218035654.jpg"রাখী কা স্ব্যাম্বার"

একটি রিয়ালিটি শো-তে যেটা বাস্তব সেটাই দর্শকের সামনে তুলে ধরা হয়। রিয়ালিটি শো-গুলো আমাদের সমাজের আয়না।

তাছাড়া আর একটা কথা মাথায় রাখতে হবে সেটা হল সব রিয়ালিটি শো সবার দেখা জন্য নয়। যদিও রিয়ালিটি শো-গুলো শুরু হওয়ার আগে বয়স সম্পর্কিত কোনও সতর্কীকরণ বার্তা দেওয়া থাকে না তবে অনুষ্ঠানগুলির সময় এমন ভাবেই নির্বাচন করা হয় যখন স্বাধারণত বাড়ির বাচ্চারা পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকে কিংবা ঘুমিয়ে পড়ে। অনুষ্ঠানগুলো একটু রাতের দিকে দেখান হয়।

আমার মনে হয় আমাদের সমাজের এই অতিরিক্ত রক্ষণশীল মনোভাবটা এবার কাঁটিয়ে বেরোবার সময় এসেছে এবং তার জন্য আমাদের স্কুলগুলিতেও যথেষ্ট 'সেক্স এজুকেশনের' প্রয়োজন রয়েছে। যেটা স্বাভাবিক তা আমাদের স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করতে শিখতে হবে। 

body2_091218035429.jpgরিয়ালিটি শো-তে বাস্তবটাই দর্শকের সামনে তুলে ধরা হয়

যে দেশে 'কামসূত্র' লেখা হয়েছে সেই দেশে যৌনতার বিষয়টা নিয়ে বহু মানুষের মধ্যে অহেতুক আড়ষ্টতা রয়েছে। আমাদের সেটা কাটিয়ে উঠতে হবে। অপ্রিয় হলেও এটা সত্যি কথা যে আমাদের সমাজে এইধরণের বহু মানুষ আছেন যাঁরা অনেক সময় যথেষ্ট সাহসের অভাবে নিজেদের পছন্দ বা অপছন্দর কথা বলতে পারেন না।

যে চ্যানেল এই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করবে তাঁদের শুধু অনুষ্ঠানের বাণিজ্যিক সাফল্যের দিকটাই দেখলে চলবে না অনুষ্ঠানটির যাতে দর্শকের কাছে একটা সুন্দর এবং সুস্থ সামাজিক বার্তা পৌঁছে দিতে পারে সেদিকেও নজর দিতে হবে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment