সিবিআই বনাম সিবিআই: কার ভাবমূর্তি নষ্ট?

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সঙ্ঘাতে যাওয়ার সাহস অলোক ভার্মা কোথায় পেলেন?

 |  2-minute read |   27-10-2018
  • Total Shares

যুধিষ্ঠিরের পরেই অলোক ভার্মা। ভারতের পুলিশতন্ত্রের ইতিহাসে সততার এমন নিদর্শন আর দেখা যায়নি। অন্তত বিরোধীপক্ষের উচ্ছ্বাস দেখে তাই মনে হচ্ছে।

দেখে মনে হচ্ছে রাকেশ আস্থানাই প্রথম এবং শেষ এমন অধিকর্তা যিনি রাজনৈতিক নেতৃত্বের ইয়েস বস হিসাবে কাজ করেন। সিবিআই দফতরের অন্দরমহলের বিতর্ক এখন আদালতের বিচারাধীন। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ তদন্তকারী সংস্থা এবং তার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

cbi-story_102718050421.jpgপ্রশ্নের মুখে গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই! (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে)

কিন্তু চায়ের দোকানের আলোচনায় একটা প্রশ্ন ঘুরপার খাচ্ছে যে, অলোক ভার্মা এত সাহস পেলেন কাথা থেকে! স্বাধীন ভারতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব যে যখন যাই দাবি করে থাকুক না কেন, এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের মনে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই যে কেন্দ্রীয় স্তরে সিবিআই এবং রাজ্যস্তরে সিআইডি শাসকদলের নিয়ন্ত্রণাধীন। সেটা কেমন এবং কী ভাবে সে বিষয়ে মানুষের মনে কোনও স্পষ্ট ধারনা নেই, কিন্তু ঘটনার গতিপ্রকৃতি তাদের মনে এটাকেই সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করেছে।

এই রকম একটা ধারনার প্রেক্ষাপটে অলোক ভার্মা এমন সাহসটা পেলেন কোথা থেকে যে তিনি সরাসরি দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সঙ্ঘাতে গেলেন? শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের মান-সম্মান এবং মর্যাদা ধুলোয় মিশিয়ে দিলেন!

রাকেশ আস্থানার মতো চরিত্র পুরো পুলিশ মহলে আরও বহু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সাধারণ মানুষের কোনও সন্দেহ নেই। কেন্দ্রীয় স্তরে আছে, রাজ্যে রাজ্যে আছে। একটা যুক্তি খাড়া করবার চেষ্টা হচ্ছে যে অলোক ভার্মার মাত্র দু’মাস চাকরি আছে, তাই তিনি সম্মানের প্রশ্নে বেপরোয়া।

cbi-story-1_102718050516.jpgকলঙ্কিত হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটিও (ইন্ডিয়া টুডে)

আমলা বা পুলিশ কেউ তাঁরা কোনও না কোনও সময় অবসর নেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই সাহস কেউ দেখাতে পারেননি। তা হলে অলোক বর্মা কলিযুগে সততার পরাকাষ্ঠা!

রাকেশ আস্থানাকে একটা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে সিবিআই দপ্তরে আনা হয়েছে, তিনি কাজে বাধা সৃষ্টি করছেন। তিনি সিবিআইকে বিপথে পরিচালিত করছেন – এ সবকিছু অভিযোগ মেনে নিয়ও বলা যায় যে, অলোক ভার্মা কী এটা অনুভব করছেন তাঁর অবসরের দু’মাস আগে তিনি রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছেন? সেটা কি তাঁর সততার এবং সম্মানের প্রশ্নের সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে?

এই ব্যক্তির দীর্ঘ পেশাগত জীবনে এমন তথাকথিত অসম্মানিত কি তিনি আগে হননি? আমরা যারা বিভিন্ন পেশায় আছি তাদের পক্ষে এটা মেনে নেওয়া অসম্ভব যে এতদিনের পেশাগত জীবনে এমন অসম্মানিত তিনি আগে কখনও হননি। কিন্তু তাঁর দীর্ঘ পেশাগত জীবনে কোনও প্রতিবাদ দেখা যায় না, অন্তত প্রকাশ্যে নয়। তা হলে কী ভাবে ব্যাখ্যা করা যায় তাঁর এই আচরণ? তিনি একদিকে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সম্মান জলাঞ্জলি দিলেন, অন্য দিকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহৃতও হলেন! তা হলে হলটা কী?

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

PRASENJIT BAKSI PRASENJIT BAKSI @baksister

The writer is a veteran journalist.

Comment