বুথফেরত সমীক্ষায় ছত্তীশগড়ে জিতছে কংগ্রেস, তা হলে কীসের মূল্য চোকাচ্ছে বিজেপি?

ইন্ডিয়া টুডে-মাই অ্যাক্সিস সমীক্ষা অনুযায়ী ৯০টি আসনে বিজেপি পাচ্ছে ২১-৩১টি

 |  2-minute read |   09-12-2018
  • Total Shares

ছত্তীশগড়ে বিজেপির ১৫ বছরের রাজত্ব কি শেষ হতে চলেছে? ইন্ডিয়া টুডে-মাই অ্যাক্সিস ইন্ডিয়ার বুথফেরত সমীক্ষা সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে – এই সমীক্ষা অনুযায়ী ৯০ আসনের ছত্তীশগড় বিধানসভায় কংগ্রেস পেতে চলেছে ৫৫-৬৫টি আসন।

এই সমীক্ষার ফল অনুযায়ী বিজেপি পেতে চলেছে ২১-৩১টি আসন এবং বাকি ৪-৮টি আসন পেতে পারে অজিত যোগী ও মায়াবতীর জোট।

plate1_120918030310.jpg

এই বুথফেরত সমীক্ষার সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ যে দিক উঠে এসেছে তা হল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে প্রাপ্ত ভোটের পার্থক্য মোটামুটি ৭%। সাধারণত ছত্তীশগড়ে প্রাপ্ত ভোটের পার্থক্যের হার থাকে থুবই কম, যেমন ২০১৩ সালে এই পার্থক্য ছিল ০.৭%।

plate2_120918030404.jpg

তা হলে কী এমন ঘটল যাতে ভোটদাতারা সুস্পষ্ট ভাবে বিজেপি এবং দীর্ঘদিনের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী রমণ সিংয়ের থেকে দূরে সরে গেল?

উত্তরটা হয়তো প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা, সার্বিক ভাবে রাজ্যের দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং রাজ্যে নকশাল-আতঙ্ক।

দেশের মধ্যে ছত্তীশগড়ে মাওবাদীদের প্রভাব সবচেয়ে বেশি এবং এ রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি মাওবাদী হামলা হয়েছে, রাজ্যের আটটি জেলার ১৮টি বিধানসভা আসনে মাওবাদীপ্রভাব রয়েছে। ভোট শুরুর আগে ভোট বয়কটের জাক দিয়েছিল মাওবাদীরা এবং হামলাও আগের চেয়ে বাড়িয়েছিল – ১৫ দিনে ৬টি হামলায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এই বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে নির্বাচনী প্রচারের সময় দুই রাজনৈতিক দলই একে অপরের উপর দোষারোপ করেছে এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে একটি নির্বাচনী সভায় বলেন যে “শহুরে নকশালরা দূর থেকে এই বিদ্রোহে ইন্ধন জোগাচ্ছে।” কংগ্রেসের পাল্টা অভিযোগ, এই বিদ্রোহ দমনে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি সরকার।

রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি, স্বভাবতই কংগ্রেসের আক্রমণ বেশি মাত্রায় ঝাঁঝালো হবে।

এর পরেই রাখা যায় রাজ্যের বেকারত্ব ও দারিদ্র্য সমস্যা।

বেকারত্বের হারের বিচারে ছত্তীশগড় দেশের মধ্যে ছনম্বরে, আর এ রাজ্যের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি দারিদ্র্যসীমার নীচে।

raman_120718085345_120918030455.jpgরমণ সিং অবশ্যই বেশ কিছু ভালো কাজ করেছেন – তবে ১৫ বছরের প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ায় তা ঢেকে যেতে পারে। (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে)

মূলত এই সব তথ্য-পরিসংখ্যানের উপরে ভিত্তি করেই ছিল কংগ্রেসের ভোটের প্রচার, তাদের অভিযোগ ছিল, রেশনে অনিয়মের ফলে অনেকেই প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং এর পাশাপাশি তারা দারুণ লোভনীয় প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে – প্রতি কুইন্টান ধানে ন্যূনতম সহায়কমূল্য ২৫০০ টাকা তারা দেবে, প্রতি পরিবারকে সপ্তাহে ৩৫ কেজি করে চাল দেবে ১ টাকা দরে এবং ঋণ মকুব করে দেবে।

ছত্তীশগড়ের ভোটের ময়দান এবার বেশ অন্যরকমই ছিল, যেমন অজিত যোগীর জনতা কংগ্রেস ছত্তীশগড় (জেসিসি) এবং মায়াবতীর বিএসপি-র এক সঙ্গে লড়াই করা।

এই জোট কংগ্রেসের ভোটের উপরে প্রভাব ফলবে, কারণ তফশিলি জাতি-উপজাতির ভোটের বড় অংশ এদের ঝুলিতে ঢুকবে। তবে কংগ্রেস খুব বুদ্ধি করে এই সমস্যা কাটিয়ে অন্য অনগ্রসর শ্রেণীর ভোটের উপরে জোর দিয়েছিল।

এ ছাড়াও বহু আসনেই বিজেপি যেখানে যে জাতের/ গোষ্ঠীর প্রার্থী দিয়েছে, জোটও সেকানে সেই জাতের/ গোষ্ঠীর প্রার্থী দিয়েছে।

যদি বুথফেরত সমীক্ষার ফল সত্যি হয় তা হলে কংগ্রেসের উল্লসিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment