ইন্ডিয়া টুডের বুথফেরত সমীক্ষার ফলে কেন উজ্জীবিত হতে পারে কংগ্রেস

দেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দলটি পেতে পারে ১০৪-১২২টি আসন, আর বিজেপি ১০২-১২০টি আসন

 |  3-minute read |   09-12-2018
  • Total Shares

নির্বাচনী রাজনীতির নিরিখে ২০০৩ সাল থেকে যে মধ্যপ্রদেশ ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কঠিন গড়, এবার সেখানে লড়াইটা হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি।

symbol-690_120718072_120918080256.jpgমধ্যপ্রদেশে বুথফেরত সমীক্ষা দেখাচ্ছে যে রাজ্যে কংগ্রেস ও বিজেপির ভাগ্য এখন সুতোয় ঝুলে রয়েছে। (ছবি: রয়টার্স)

দি ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়া বুথফেরত সমীক্ষার ফল অনুযায়ী, গত ১৫ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন থাকা শিবরাজ সিং চৌহানের কাছে এবারের লড়াইটা ভীষণ কঠিন।

বুথফেরত সমীক্ষার ফল অনুযায়ী, কংগ্রেস পেতে পারে ১০৪ থেকে ১২২টি আসন, বিজেপি প্রায় তার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে, মনে করা হচ্ছে তারা পেতে পারে ১০২ থেকে ১২০ মতো আসন।

এই দুই সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী মোট প্রাপ্ত ভোটের যথাক্রমে ৪১ ও ৪০ শতাংশ করে পেতে চলেছে।

২০০৩ সালে বিজেপি পেয়েছিল ৪৪.৮৮ শতাংশ ভোট এবং কংগ্রেস পেয়েছিল ৩৬.৩৮ শতাংশ ভোট।

mp-690_120718072227_120918080410.jpg

বুথফেরত সমীক্ষায় বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) ১টি থেকে ৩টির মধ্যে আসন পাবে, গণ্ডোয়ানা গণতন্ত্র পার্টি এবং নির্দল প্রার্থীরা ৩ থেকে ৮টি আসন পাবে বনে এই সমীক্ষায় মনে করা হচ্ছে।

এই সমীক্ষায় মনে করা হচ্ছে যে বিসএপি পেতে পারে ৪ শতাংশ ভোট এবং অন্যরা ১৫ শতাংশ মতো ভোট পেতে পারে।

ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়া বুথফেরত সমীক্ষাটি করা হয়েছিল ১,৯৭,৬০০ জনের উপরে এবং গত পাঁচ বছরে ৩১টি নির্বাচনের মধ্যে ২৮টিতে তাদের সমীক্ষার ফল ৯০ শতাংশ মিলে গিয়েছিল।

যাই হোক, টাইমস নাও-সিএনএক্স বুথ ফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী বিজেপি পেতে চলেছে ১২৬টি আসন এবং টাইমস নাওয়ের সমীক্ষা অনুযায়ী কংগ্রেস পেতে চলেছে ৮৯টি আসন। বিএসপি এবং অন্য দলগুলি যথাক্রমে ৬টি ও ৯টি আসন পাবে বলে এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে।

২০১৩ সালে ১৬৫টি আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি এবং কংগ্রেস জিতেছিল ৫৮টি আসনে। বিসএপি পেয়েছিল চারটি ও অন্য দলগুলি পেয়েছিল তিনটি আসন।

একাদিক্রমে প্রায় দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি আর তাদের বিরুদ্ধে গিয়েছে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া।

তারপরেও সেই হাওয়া নিজেদের কাজে লাগাতে কংগ্রেস ব্যর্থ হয়েছে এবং জনতার মন থেকে বিজেপির মোহ দূর করতে পারেনি, এর কারণ হল তারা ছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত এবং পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এমন কাউকে তুলে ধরতে পারেনি যাকে দেখে রাজ্যের মানুষ ভোট দেবেন।

shivraj.jpeg-690_120_120918080449.jpgবিধানসভা নির্বাচনে তীব্র প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ার মুখে পড়েছেন শিবরাজ সিং চৌহান (ছবি:  ইন্ডিয়া টুডে)

এই মুহূর্তে কৃষকদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন শিবরাজ সিং চৌহান, কৃষকরা এখন তাঁদের ফসলের জন্য আরও বেশি দাম চাইছেন। ২০১৭ সালে মন্দসৌরে পুলিশের গুলিতে ৬ কৃষকের মৃত্যু শিবরাজের বিরুদ্ধে তাঁদের ক্রোধের আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে।

রাজ্যের যুবসম্প্রদায়ও শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের উপরে বিরক্ত, কারণ তিনি কর্মসংস্থান করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

বিগত ১৪ বছরে এই রাজ্য গড়ে বছরে মাত্র ১৭,৬০০টি করে কর্মসংস্থান করতে পেরেছে সরকার।

রাজ্য সরকারি কর্মীদের অবসরের বয়স ৬০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬২ বছর করে দেওয়ার জন্য রাজ্যের যুবকরা শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের উপরে অত্যন্ত বিরক্ত। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমবে বলে মনে করে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন তরুণরা।

তবে এর ফল কী হবে সে জন্য আমাদের ১১ ডিসেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

তবে বুথফেরত সমীক্ষার ফল যা দেখাচ্ছে তাতে বিজেপির দৃষ্টিকোণ দিয়ে বিচার করলে আগামী বছর দেশে সাধারণ নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ তাদের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে কারণ এই রাজ্যে ২৯টি লোকসভা আসন রয়েছে।

poll-690_12071807254_120918080555.jpg

কংগ্রেসের দিক দিয়ে বিচার করলে বুথফেরত সমীক্ষার এই ফলে তাদের উল্লসিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে, কারণ তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার বেড়েছে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা ভেবেও কংগ্রেস স্বস্তি পেতে পারে। কারণ এর আগে সাড়ে চার বছরে একের পর এক রাজ্যে পরাজিত হয়েছে কংগ্রেস।

এই অবস্থায় বিজেপির উচিত সমস্যাগুলি খুঁজে বার করে দ্রুত তার সমাধান করার চেষ্টা করা।

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment