মোদী বনাম দিদি: গণতন্ত্র সত্যিই সঙ্কটে, কেন?
সংসদের নথিতে দাবিগুলি লেখা হবে, কিন্তু নেপথ্য কাহিনিটা?
- Total Shares
গণতন্ত্র যে সংকটে তা নিয়ে আর কোনও সংশয় রইল না। কয়েকদিন আগে গণতন্ত্র বাঁচাতে উঠেপড়ে লেগেছিল বিজেপি। গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার আয়োজন করেছিল, যা গণমাধ্যমে সংক্ষেপে হয়ে গিয়েছিল রথযাত্রা। আদালতে গিয়েই আটকে যায় রথের চাকা।
বিরোধীরা সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করছে বলে ধর্নায় বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখোপাধ্যায়। প্রশাসন কথা শুনছে না বলে গত বছর মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে ধর্নায় বসেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
এবার গণতন্ত্র বাঁচাতে পথে বসেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ আগে বলেছিল ওখানে (মেট্রো চ্যানেলে) আর কাউকে সভা করতে দেবে না, এখন কিছু বলছে না, কারণ কলকাতার নগরপাল, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক, নেতা, মন্ত্রী – দলবেঁধে মুখ্যমন্ত্রীকে সঙ্গ দিচ্ছেন।
গণতন্ত্র বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্নায় পুলিশ আধিকারিকরাও। (ছবি: সুবীর হালদার)
রাজ্যে গণতন্ত্র বাঁচাতে, দিদির অপশাসনের অবসান ঘটাতে লড়ছে বিজেপি, আর দেশে গণতন্ত্র বাঁচাতে, মোদীর অপশাসনের অবসান ঘটাতে লড়ছেন দিদি। রাজ্যের মন্ত্রী, দলের সাংসদ, বিধায়ক এমনকি তৃণমূলঘনিষ্ঠ রুপোলি জগতের ব্যক্তি গ্রেফতার হতেও যে তৎপরতা দেখা যায়নি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে, এখন সেই তৎপরতা দেখা যাচ্ছে তাঁর মধ্যে। তা নিয়ে রাজ্যের বিরোধীরা কটাক্ষ শুরু করেছেন। তবে ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেড মঞ্চে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা পাশে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
What happened in #WestBengal is an attack on a state's federal rights guaranteed by our constitution.We stand with West Bengal CM @MamataOfficial
— H D Kumaraswamy (@hd_kumaraswamy) February 4, 2019
भाजपा सरकार की उत्पीड़नकारी नीतियों और CBI के खुलेआम राजनीतिक दुरुपयोग के कारण जिस तरह देश, संविधान और जनता की आज़ादी ख़तरे में है, उसके ख़िलाफ़ ममता बनर्जी जी के धरने का हम पूर्ण समर्थन करते हैं. आज देश भर का विपक्ष और जनता अगले चुनाव में भाजपा को हराने के लिए एकजुट है.
— Akhilesh Yadav (@yadavakhilesh) February 3, 2019
The BJP wants to stay in power by hook or by crook. They are so scared of losing that CBI is being used as election agentsThis is undemocratic and against spirit of the constitution. We demand due process be followed so that CBI is not used as a tool of political interference.
— Akhilesh Yadav (@yadavakhilesh) February 3, 2019
बीते कुछ महीनो में CBI पर BJP दफ्तर के दवाब में लिए गए राजनीतिक निर्णयों के कारण राज्य सरकारों को ऐसा निर्णय लेना पड़ेगा।अगर अब भी CBI भाजपा के गठबंधन सहयोगी की तरह कार्यरत रही तो किसी दिन न्यायप्रिय आम अवाम अपने तरीक़े से इनका हिसाब ना कर दे। लोकतंत्र में जनता से बड़ा कोई नहीं
— Tejashwi Yadav (@yadavtejashwi) February 3, 2019
Prime minister is determined to destroy all the institutions of democracy. Now he destroying the federal structure of our country. Wake up and stop it before it is too late.
— Yashwant Sinha (@YashwantSinha) February 3, 2019
কলকাতায় আসার কথা বলেছেন আরজেডি নেতা তথা লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে তেজস্বী যাদব, যদিও লালুপ্রসাদের পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা।
Spoke to respected @MamataOfficial ji. Extended RJD’s support, BJP has not only venomous & nefarious agenda against opposition leaders but Indian Administrative Service & Police Officers. Might visit Kolkata tomorrow
— Tejashwi Yadav (@yadavtejashwi) February 3, 2019
সর্বোচ্চ আদালত কী বলবে, সে অন্য কথা, তবে রাজনৈতিক যুদ্ধ এখন চরমে। ব্রিগেডের মঞ্চে লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে উপস্থিত ছিলেন। আজ সেই কংগ্রেসের নেতাই লোকসভায় দাবি করছেন পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার। রাজ্যে তৃণমূলের অত্যাচার নিয়ে সংসদে বলেছেন বিষ্ণুপুরের তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খান। তবে লোকসভার রেকর্ডে যে কথা লেখা থাকবে না তা হল, প্রথম জন আর কেউ নন, রাজ্য রাজনীতিতে কট্টর মমতা-বিরোধী বলে পরিচিত প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। দ্বিতীয়জন এখন আর তৃণমূলে নেই।
ব্রিগেডে এক পক্ষের মধ্যে দু’বার মোদী হঠানোর ডাক শোনা গেল। প্রথম বার ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর মঞ্চে ছিলেন দেশের ২৩টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। পরের বার ডাক দিয়েছিল সিপিএম। সেই মঞ্চে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিয়ে মহম্মদ সেলিম প্রশ্ন করছিলেন, রাজ্যের মানুষ সততার প্রতীক দিদিকে বিপুল ভাবে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছিলেন, কিন্তু এখন তিনি দিদি থেকে পিসি হয়ে গেলেন কী করে?
ব্রিগেডের মঞ্চে দিদি থেকে পিসি হয়ে যাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেন মহম্মদ সেলিম। (ছবি: ডেইলিও)
চৌকিদার চোর বলে রাহুল গান্ধী যে ভাষায় নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেছেন, সেই একই ভাবে বিদ্ধ হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা সারদার কথা ভুলতে বসেছিলেন তাঁরাই এখন প্রশ্ন তুলছেন, পুলিশ অফিসারকে বাঁচানোর জন্য কেন মরিয়া হয়ে উঠেছেন রাজ্যের। মুখ্যমন্ত্রী?
এই প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তর রয়েছে সর্বোচ্চ আদালতে সিবিআইয়ের আশঙ্কার মধ্যে – তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করে ফেলার আশঙ্কা। বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) প্রধান হিসাবে সব নথি থাকার কথা রাজীব কুমারের কাছে। সেই নথি প্রকাশ হলে কি এমন অনেক তথ্য সামনে চলে আসবে যাতে অস্বস্তিতে পড়তে পারে বর্তমান শাসকদলের অনেকে? রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর ধর্না দেখতে ভিড় মেট্রো চ্যানেলে। (ছবি: সুবীর হালদার)
রাজনৈতিক ময়দানে তৃণমূল পুরো বিষয়টিকে কেন্দ্র-বনাম রাজ্য হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করলেও বিজেপি এখানে প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল নেত্রীর সততা নিয়ে। সবক’টি রাজনৈতিক দলের অভিযোগ একজায়গায় করলে মনে হচ্ছে সব চৌকিদারই চোর। যদি তাই হয়, তা হলে গণতন্ত্র সত্যিই সঙ্কটে।