ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি বিজেপির আমদানি, এ রাজ্যে ধারার প্রচলন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে

তৃণমূল নেতাদের ক্লাবগুলোকে পুজো অনুদান দেওয়ার অর্থ অভিসন্ধি রয়েছে

 |  2-minute read |   11-10-2018
  • Total Shares

একটা বিষয় আর কোনও সন্দেহ রইল না যে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি সত্যি সত্যি মেরুকরণের শিকার হয়ে উঠেছে। সেই ছেলেবেলা থেকে জেনে এসেছি, রাজনৈতিক জগতে প্রবেশের সময় থেকে দেখে এসেছি শুধুমাত্র উন্নয়নের মাধ্যমেই দেশ চলে। কিন্তু গত সাত বছর ধরে দেখতে পাচ্ছি যে গৈরিকীকরণের রাজনীতির মধ্যে দিয়েই এ রাজ্য চলেছে।

উন্নয়ন ছাড়া ধর্মের ভিত্তিতে দেশ চালানোর রাজনীতি বিজেপি আমদানি করেছিল। আর এ রাজ্যে, এই ধারার প্রচলন হয়েছে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। তবে এতে আমি বিন্দুমাত্র অবাক নেই। পশ্চিমবঙ্গে এই দু'টি দল যতই একে অপরের বিরোধিতা করুক না কেন দিল্লিতে অবশ্য বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা রেখে চলে তৃণমূল।

সাম্প্রদায়িক সংহতির কথা বলেন আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু তাঁর নয়নের মণি তো রাজ্যের ৩৩ শতাংশ ভোট। আর তাই দিয়ে নির্বাচনী যুদ্ধ জয়ের স্বপ্ন দেখেন তিনি। যখন দেখে পরিস্থিতি প্রতিকূল তখন বাকি ৬৭ শতাংশের মন জয় করতে উদ্যোগী হয়েছেন।

body1_101118045734.jpgধর্মীয় রাজনীতির আমদানি করেছিল বিজেপি [ছবি: পিটিআই]

আর তার ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। কখনও তিনি ইমামদের জন্য ভাতার আয়োজন করেন, আবার কখনও তিনি দুর্গাপুজোর কমিটিগুলোর জন্য অনুদানের কথা ঘোষণা করেন। চোখের সামনে স্পষ্ট একটি দিন দেখতে পাচ্ছি, যেদিন আমাদের রাজ্যের অর্থমন্ত্রী রাজ্যে ফিনান্সিয়াল ইমার্জেন্সি ঘোষণা করবেন। রাজ্যের রাজস্ব যে ভাবে হ্রাস পাচ্ছে সেই দিন আর খুব বেশি দূরে নয়।

শুধুমাত্র দুর্গাপুজোর অনুদান নয়, আমরা ইমামদের ভাতা দেওয়ারও বিপক্ষে। কোনও ধর্মীয় উৎসবে টাকা না ঢেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত ছিল সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ এবং পেনশনভোগীদের পেনশনার ব্যবস্থা করা।

কিন্তু সেটা করলেও তো দেশের সংবিধান স্বীকৃতি পেয়ে যাবে আর তাই সেটি কখনোই চাইবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে। তিনি মনে করেন যে তিনিই সবচেয়ে বেশি জানেন এবং তিনিই একমাত্র যিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনিই এ রাজ্যের সংবিধান।

body_101118050056.jpgপরিস্থিতি প্রতিকূল দেখলে ৬৭ শতাংশের মন জয় করতে উদ্যোগী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় [ছবি: পিটিআই]

প্রশ্ন হচ্ছে, টাকা যদি দিতেই হবে তা হলে সব পুজো কমিটিগুলোকে কেন? এ রাজ্যে একডালিয়া এভারগ্রিনের মতো কয়েকটি পুজো কমিটি রয়েছে যে কমিটিগুলোর হাতে থাকা অর্থের পরিমাণ নেহাত কম নয়। তাহলে এই কমিটিগুলোকে ১০,০০০ টাকা করে দেওয়ার অর্থ কী? এই পুজো কমিটিগুলোর পৃষ্ঠপোষকরা আবার তৃণমূল করেন। সুতরাং সে ক্ষেত্রে গভীর অভিসন্ধির আশঙ্কা যথেষ্ট প্রবল।

কোনও ধর্মীয় উৎসব কালিমালিপ্ত হোক তা আমরা কখনোই চাইনা। কিন্তু তাই বলে মধ্যবিত্তদের বঞ্চিত করা উচিত নয়। তা বলে সংবিধানকে অমান্য করে নয়।

সুষ্ঠ সামাজিক উৎসব হোক। আর, রাজনীতির গৈরিকীকরণ বন্ধ হোক।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

ANINDYA ROYCHOWDHURY ANINDYA ROYCHOWDHURY

Advocate. Spokesperson, West Bengal Pradesh Congress Commitee.

Comment