লোকসভা নির্বাচন ২০১৯: এসপি-বিএসপি সমঝোতা বিজেপির দুশ্চিন্তা, কংগ্রেস ঠান্ডাঘরে

...এটা সম্ভবত মহাজোটের পথ খোলা রাখার জন্যই করা হয়েছে

 |  3-minute read |   13-01-2019
  • Total Shares

ভারতের সবচেয়ে বড় নির্বাচনী যুদ্ধের দামামা বেজে গেল, আর এই দামামা বাজল দেশের সবেচেয়ে বড় ও সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যে উত্তরপ্রদেশ থেকে, দেশের লোকসভায় সবচেয়ে বেশি – ৮০ জন সাংসদ পাঠায় এই রাজ্যটিই।

মায়াবতী ও অখিলেশ যাদব ঘোষণা করে দিলেন ২০১৯ সালে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে তাঁদের আসন সমঝোতার কথা, বহুজন সমাজ পার্টি বা বিসএপি লড়বে ৩৮টি আসনে, সমাজবাদী পার্টি বা এসপি লড়বে ৩৮টি আসন থেকেই এবং দু’টি আসন তারা ছেড়ে রাখছে রাষ্ট্রীয় লোকদল বা আরএলডির জন্য। বুয়া-ভাতিজা (বাংলায় পিসি-ভাইপো) জোট কংগ্রেসের জন্যও দু’টি আসন ছেড়ে রাখছে – নেহরু পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন যে আসন থেকে লড়ে আসছেন সেই রায় বরেলি ও আমেথি আসন দুটি – যদিও এই দুই আসনের ব্যাপারে দেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দলটির সঙ্গে তাঁদের কোনও রকম বোঝাপড়া হয়নি। এটা সম্ভবত মহাজোটের পথ খোলা রাখার জন্যই করা হয়েছে, যাতে এই বার্তা দেওয়া যায় যে নির্বাচনপর্ব মিটে গেলে প্রয়োজনে কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের সমঝোতা করা সম্ভব। সমাজবাদী পার্টির সাইকেল এবং এবং বহুজন সমাজ পার্টির হাতির চিহ্নওয়ালা পতাকা এবার লোকসভা ভোটে একসঙ্গে উড়তে দেখা যাবে, এর ফলে বিজেপির রাতের ঘুম উড়ে যেতে পারে, কারণ এই জোটের ফলে অন্তত উত্তরপ্রদেশে বিজেপির জয় আর সহজ হবে  না।

আসন সমঝোতার কথা ঘোষণার পরে বিএসপির প্রধান নেত্রী মায়াবতী বলেন, “এই জোটের ফলে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের রাতের ঘুম উড়ে যাবে।”

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের হিসাব দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, যদি শেষ পর্যন্ত এই জোট সুসম্পন্ন হয় তা হলে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে এটাই হবে সবচেয়ে চিন্তার ব্যাপার।

up_lok-sabha_0112190_011319084257.jpg

সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজপার্টির ভোট যদি এক জায়গায় পড়ে তা হলে অন্তত ৪২.২ শতাংশ ভোট তারা পাবে, ভোটের লড়াই বিজেপির পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে এবং ফুলপুর ও গোরক্ষপুর উপনির্বাচনের মতো বিজেপি আর কোনও দিশা খুঁজে পাবে না।

অনেক বিশেষজ্ঞই ওই দুই উপনির্বাচনের ফলাফলকে ২০১৯ সালের ভোটযুদ্ধের আভাস বলে মনে করছেন।

সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির একজোট হয়ে লড়াই করা থেকে একটা ব্যাপার স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে ৭১টি আসন পাওয়ার পরে এবং ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তারা ৩২৫টি আসন পাওয়ার পরে তাদের যে অপ্রতিরোধ্য বলে মনে করা হচ্ছিল, সেই ধারণা ঠিক নয়।

একে অপরের মূল তীব্র বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও ২৩ বছর পরে দুই দল নির্বাচনী সমঝোতা করেছিল ফুলপুর ও গোরক্ষপুরে এবং এই জোট বিজেপির থেকে দু’টি আসনই ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছিল। তাই কৈরানা উপনির্বাচনেও আবার দেখা গেল যে এসপি-বিএসপি-আরএলডি একসঙ্গে লড়াই করছে।

জয়ের স্বাদ পাওয়ার পরে দুই দল স্থির করে ফেলল যে ২০১৯ সালে তারা একজোট হয়েই লড়াই করবে।

maya-1_011219010352_011319084120.jpgসমাজবাদী পার্টির সাইকেল ও বহুজন সমাজপার্টির হাতি-চিহ্ন সম্বলিত পতাকা এ বার একসঙ্গে উড়তে দেখা যাবে (ছবি: পিটিআই)

সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজপার্টি বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলে দিলেও, কংগ্রেসকে একেবারে ঠান্ডাঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি মূলত বিজেপিকই আক্রমণ করেছে, তবে কংগ্রেসকেও ছেড়ে কথা বলেনি। মায়াবতী বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে কংগ্রেস ও তার জোটসঙ্গীরা মিলে সবেচেয়ে দীর্ঘ সময় দেশ শাসন করেছে কিন্তু তারা দরিদ্র ও প্রান্তিকদের জন্য কিছুই করেনি। তারা শুধুমাত্র দুর্নীতিতে ডুবে থেকেছে।”

বহুজন সমাজ পার্টির শীর্ষ নেত্রী বলেন, “কংগ্রেসের শাসনকালেই আমরা দেশে জরুরি অবস্থা জারি হতে দেখেছি আর বিজেপির জমানার আমরা দেখছি অঘোষিত জরুরি অবস্থা।”

এর উপরে ভিত্তি করেই তিনি বহুজন সমাজপার্টি ও সমাজবাদী পার্টি মধ্যে হওয়া জোটের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন।

২০১৯ সালের নির্বাচনের সব অঙ্ক ওলটপালট করে দেবে এই জোট?

তা আমরা খুব শীঘ্রই জানতে পারব।

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment