সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যদি দাদা হয়, তাহলে বঙ্গ ক্রিকেটের ছোট দাদা মনোজ তিওয়ারি

বাংলার হয়ে ভারতীয় ক্রিকেটকে শাসন করেছে, জাতীয় দলে আরও বেশি সুযোগ পাওয়া উচিত ছিল বাংলার অধিনায়কের

 |  2-minute read |   15-11-2018
  • Total Shares

২০০১ সালের ঘটনা। প্রথমবারের জন্য মনোজ তিওয়ারিকে দেখলাম। সেই বছর অনুর্দ্ধ-১৯ বাংলা দলের হয়ে অনবদ্য খেলছিলেন তিনি। আর, সেই সুবাদে সিনিয়র বাংলা দলের নেটে ডাক পেয়েছিলেন। প্রথম দিনেই তাঁকে দেখে আমি যারপরনাই মুগ্ধ। কী অসামান্য দক্ষতায় সেদিন ডেভিডদাদের (উৎপল চট্টোপাধ্যায়) বিরুদ্ধে ব্যাট করছিলেন তিনি। প্রথম দর্শনেই বুঝতে পেরেছিলাম যে এই ছেলে একদিন ভারতীয় ক্রিকেটকে শাসন করবে।

আমি যে ভুল বুঝিনি তার প্রমান ১৭ বছর পর পরিষ্কার বুঝতে পাচ্ছি। অন্তত, রেকর্ড তো সেই কথাই বলছে। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে সদ্য শেষ হওয়া ম্যাচটির আগে মনোজ ১০৭ টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। রান সংখ্যা ৭৭০৯। গড় অত্যন্ত ঈর্ষণীয় - ৫০.৩৮। ২৪টি শতরান তার সঙ্গে আবার ৩২টি অর্ধশতরান। গত ১৪ বছর ধরে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন। বাংলাকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলা গত বছর রঞ্জি সেমিফাইনাল খেলেছে। একে যদি শাসন না বলা হয়, তাহলে আর কাকে বলা হবে?

body_111518053856.jpgবাংলা ক্রিকেটের ছোট দাদা মনোজ তেওয়ারি [ছবি: পিটিআই]

তবে সামান্য একটু ভুল বলে ফেলেছিলাম। আমার ধারণা ছিল শুধু ভারতীয় ক্রিকেট নয়, বিশ্ব ক্রিকেট শাসন করার ক্ষমতা রাখে এই ছেলেটা। প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে এত ভালো খেলেও টেস্ট দলে কোনও দিনও সুযোগ পাননি। এটা দুর্ভাগ্য। দেশের হয়ে একদিনের ক্রিকেট খেলেছেন যৎসামান্য। আর সেই 'যৎসামান্য' সুযোগেই নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছেন। একদিনের ক্রিকেটে ১২টি ইনিংসে একটি শতরান ও একটি অর্ধশতরান রয়েছে মনোজের। ভাবতে অবাক লাগছে, যেভাবে রোহিত শর্মা বা শিখর ধাওয়ানরা ব্যর্থ হয়েও ম্যাচের পর ম্যাচ সুযোগ পান বা পেয়েছিলেন সেই সুযোগ কিন্তু বাংলার অধিনায়ককে কোনও দিনও দেওয়া হয়নি।

তাই মনোজ তিওয়ারি বাংলার ক্রিকেটের 'ছোট দাদা' রয়ে গেলেন। দাদা যদি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় হয় তাহলে ছোট দাদার স্বীকৃতি মনোজেরই প্রাপ্য। অরুণ লালের পর বাংলার ক্রিকেট আবির্ভূত হয়েছিলেন সৌরভ। তিনি দেশের অধিনায়ক হয়েছেন। তাঁর অধিনায়কত্বে তো ভারত তো বিশ্বকাপ ফাইনালও খেলেছে। কিন্তু সৌরভ যখন দেশের হয়ে খেলতে ব্যস্ত বা সৌরভ পরবর্তী যুগে বাংলার ক্রিকেটকে তো মনোজই টেনেছেন।

body1_111518053933.jpgফোটে ১৪ বছর ধরে সার্ভিস দিয়ে চলেছেন বাংলার ক্রিকেটকে [ছবি: পিটিআই]

গত দেড় দশক ধরে কী অসামান্য সার্ভিসই না দিয়ে গেলেন বাংলাকে। বয়স এখন ৩২। জাতীয় দলে আর ফেরা হবে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও মোটিভেশনের কোনও অভাব নেই। আমি দলের অধিনায়ক, তাই আমাকেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে - আর ঠিক এই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কাজটাই এখনও করে চলেছেন মনোজ।

মধ্যপ্রদেশ ম্যাচটা দেখুন। খেলার আগে বিতর্ক কম হয়নি মনোজকে ঘিরে। বলা হয়েছিল, রান না পেলে দল থেকে সরতেও হতে পারে। দ্বিশতরান করে নিন্দুকদের মোক্ষম জবাব দিলেন তিনি। এই না হলে চ্যাম্পিয়ন। এই না হলে জাত ক্রিকেটার।

মনোজের নেতৃত্বে গত বছর রঞ্জি সেমিফাইনাল খেলেছি আমরা। এ বছর কি চ্যাম্পিয়ন হতে পারব। না হওয়া কিছুই নেই। দেখা যাক রঞ্জি ট্রফি হাতে ছোট দাদার ছবিটা এবছর দেখতে পাওয়া যায় কিনা।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

SAFI AHMED SAFI AHMED

Former Ranji Trophy cricketer for Bengal. BCCI pitch curator.

Comment