সিবিআই ডিরেক্টর হিসেবে আলোক ভার্মার প্রত্যাবর্তন: বিজেপি কী ভাবছে
সিবিআই-কে সরকার ব্যবহার করছে, ভার্মার প্রত্যাবর্তনে কি ফের এই অভিযোগ উঠবে?
- Total Shares
সুপ্রিম কোর্ট অলোক ভার্মাকে সিবিআইয়ের ডিরেক্টর পদে পুনররায় বহাল করেছে। গত বছর ২৩ অক্টোবর মোদী সরকার তাঁকে সিবিআইয়ের ডিরেক্টর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। ভার্মার সঙ্গে সিবিআইয়ের বিশেষ অধিকর্তা রাকেশ আস্থানার সংঘাত শুরু হওয়ায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিল।
এর পরেই সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হন ভার্মা।
সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য জানিয়েছে যে সিবিআইয়ের কোনও গুরত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত ভার্মা নিতে পারবেন না। তা সত্ত্বেও, ডিরেক্টর পদ ফিরে পাওয়ায় ভার্মার জয় হয়েছে বলেই অনেকেই মনে করছেন।
এমনিতেই ৩১ জানুয়ারি ভার্মার অবসর নেওয়ার কথা। তার আগে দফতর ফিরে পেতে হলে তাঁকে আরও একটি বাধা অতিক্রম করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে ও প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে নিয়ে গঠিত কমিটি এবার সিদ্ধান্ত নেবে যে ভর্মা ডিরেক্টর হিসেবে নির্বিঘ্নে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন নাকি তাঁর বিরুদ্ধে কমিটির তরফ থেকে অন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ফের নিজের দফতরে প্রবেশ করতে পারবেন অলোক ভর্মা [ছবি: পিটিআই]
এছাড়া, গুরত্বপূর্ণ সিধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট ভার্মার উপর যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে তা ভার্মা কতটা মেনে চলবেন সেটাও এখন দেখতে হবে। ভার্মার অপসারণের পর নাগেশ্বর রাওয়ের হাতে সিবিআইয়ের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর উপরেও একই রকম বিধিনিষেধ আরোপ করেছে আদালত। কিন্তু বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি গুরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
রাও ইতিমধ্যেই সিবিআই আধিকারিকদের জন্য আর্ট ও লিভিংয়ের ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ ছাড়া এজেএল জমি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত দুই কংগ্রেস নেতা ভূপিন্দর হুডা ও মোতিলাল ভোরার চার্জশিট পেশ করেছেন তিনি, উত্তরপ্রদেশের বেআইনি খনির মামলায় (যেখানে অখিলেশ যাদবের উপরেও নজর রয়েছে তদন্তকারীদের) একটি প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্টকে এফআইআরে পরিণত করেছেন, দিল্লির আপ মন্ত্রী সত্যেন্দর জৈনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছেন, বেশ কয়েকজন সিবিআই আধিকারিককে বদলি করেছেন এবং একটি মামলা বন্ধ করে দিয়েছেন যে মামলায় চেন্নাইয়ের একজন আইআরএস আধিকারিক জড়িত ছিলেন।
ভার্মাও যে একই পথের পথিক হবেন কিনা, সে বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। বিশেষ করে এমন একটা সময়ে যখন সিবিআই আধিকারিকদের সরকারের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে।
In its last weeks in office, Modi govt shamelessly unleashing CBI on @yadavakhilesh is a reminder to all that we must not forget what Modi's political opponents have faced during last five years. Time to throw out this dictatorial & undemocratic regime
— Arvind Kejriwal (@ArvindKejriwal) January 7, 2019
ভার্মাকে জোর করে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছিল বিরোধীরা। কংগ্রেসের দাবি ছিল, সরকার ইচ্ছে করেই ভার্মার বিরুদ্ধাচরণ করেছে কারণ তিনি রাফাল চুক্তি নিয়ে প্রশান্ত ভূষণের অভিযোগ তদন্ত করে দেখবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
ভার্মা-আস্থানার সংঘাত চরমে ওঠে যখন আস্থানা ভার্মার বিরুদ্ধে সিবিআইতেই একটি এফআইআর দায়ের করেন। সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিটির সুপারিশে ২৩ অক্টোবর দু'জনকেই ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। অলোক ভর্মার প্রত্যাবর্তনে এই লড়াইয়ের এক নতুন অধ্যায় এবার শুরু হল।
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে