আবাসন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে শহরের পুজোপরিক্রমায় প্রবীণপ্রবীণারা
পুজো সকলের, প্রবীণরা কেন শুধু টিভির পর্দায় পুজো দেখবেন?
- Total Shares
দুর্গাপুজো মানেই শহর জুড়ে আলোর রোশনাই, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে মাথার ভিড়। আর এই পুজো এলেই তিতলি ভিড় এড়াতে বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে। গ্রামে ভিড়ভাট্টা নেই, ঠেলাঠেলি নেই, অথচ পুজোর উন্মাদনাটা ঠিক শহরের মতোই।
এই উপলব্ধিটা ও এবং ওর বন্ধুরা প্রাণ ভরে উপভোগ করতে চায়। আর এই বিষয়ে ওদের বক্তব্য হল, সারা বছর অফিসের কাজে ছুটে বেড়াই, এই ক’টা দিনই তো ছুটি পাই, তাই এই সময়টা নিজের মতো করেই কাটাব।
মণ্ডপের পথে প্রবীণা (নিজস্ব চিত্র)
কিন্তু সমস্যা হয় পিয়ালী দেবীর, মানে তিতলি মায়ের। কারণ ছোটবেলা থেকে উনি কলকাতার পুজো দেখে বড় হয়েছেন, তাই পুজোর দিনগুলোতে উনি কিছুতেই শহর ছেড়ে বাইরে যেতে চান না। আগে স্বামী যখন বেঁচে ছিলেন, তখন তাঁর সঙ্গে কোমর বেঁধে বেরিয়ে পড়তেন ঠাকুর দেখতে। চষে বেড়াতেন গোটা কলকাতা। কিন্তুএখন আর সেই সুযোগ নেই, তাই বাড়িতে একা একাই টিভিতে পুজো দেখে কেটে যায় সময়।
তবে এ বছর পুজোটা হঠাৎ একদম অন্যরকম হয়ে গেল। বিগত কয়েকদিন হল তিতলির সঙ্গে নতুন আবাসনে এসেছেন পিয়ালী দেবী। আজ সকালে তিতলি অফিসে বেরিয়ে যাওয়ার পর, সেই আবাসন কর্তৃপক্ষের দূত এসে জানিয়ে গেল তাঁরা নাকি বিগত অনেক বছর ধরেই পঞ্চমীর দিন বয়ষ্কদের জন্য পুজো পরিক্রমা আয়োজন করেন। কারণ তাঁরা মনে করেন মা-বাবার চোখ দিয়েই দেবীকে দেখে পুজো শুরু করা উচিত।
আর শুধু তাই নয়, ওই দিনটা নাকি ওরা মিলন উৎসব হিসেবে পালন করেন। তাই একদিকে যেমন থাকে বাউল গান, খাওয়াদাওয়ার আয়োজন। অন্যদিকে তেমনই থাকে শহরের বড় বড় পুজোগুলোকে ঘুরে এক ঝলক দেখে নেওয়া। এই অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন হয় আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা থেকে, সেখানে মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে, স্মিতা বক্সীও উপস্থিতিও থাকেন।
অন্যরকম পুজোপরিক্রমা (নিজস্ব চিত্র)
শুনেই নেচে উঠল পিয়ালী দেবীর মন। মনে হল আবার যেন যৌবনের সেই দিনগুলো ফিরে এসেছে, আনন্দে ছুটে গিয়ে তিনিতিতলিকে ফোন করে সব জানালেন। শুনে তিতলিও খুশিতে প্রায় নেচে উঠল। আসলে সে কখনও বলে না, কিন্তু প্রত্যেক বছর মাকে একা ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট তাঁকেও কুরেকুরে খায়। তাই মনে মনে সে কুর্নিশ করে আবাসন কর্তৃপক্ষকে।