শিশুদের পরীক্ষা সংক্রান্ত ব্যর্থতা সামলাবেন কী করে?

ভুলেও ভালো নম্বর পাওয়া ছেলেমেয়েদের সঙ্গে শিশুর তুলনা করবেন না

 |  2-minute read |   16-09-2018
  • Total Shares

তাতানের মন খুব খারাপ। গতকালই বোর্ড পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে। তাতে তাতানের নম্বর মোটেই আশানুরূপ হয়নি। তাতানের ফলাফল নিয়ে ওর বাড়ির সবারই মন খারাপ। যদিও বা তা কোনক্রমে সামলান যেত বাদ সাধল পাশের ফ্ল্যাটের সোহিনী। পরীক্ষায় দারুন ফলাফল করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে সবাইকে। সোহিনীর বাড়িতে এখন প্রায় সবসময় খবরের কাগজ আর চ্যানেলের সাংবাদিকদের ভীড়। সবাই সোহিনীর একটা বাইট নেওয়ার জন্য হা পিত্যেশ করে বসে আছে।

তাতান আর সোহিনী খুব ভালো বন্ধু হলেও এই চাপটা কিছুতেই নিতে পারছে না তাতান। ওর বারে বারে কেবল একটা কথাই মনে হচ্ছে এ পৃথিবী ব্যর্থদের জন্য নয়।

তাই হয়তো ব্যর্থদের বেঁচে থাকারও কোন অধিকার নেই।

তাতানের মতো সমস্যা অনেকেরই হয়। তাই অভিভাবকদের বিশেষভাবে সচেতন থাকা উচিত এই সময়গুলোতে।

১। ছোট্ট থেকেই শিশুকে খুব সহজভাবে সাফল্য ও ব্যর্থতা মোকাবেলা করার পন্থাগুলো বোঝান। ছোট থেকেই বাচ্চারা যদি বিভিন্ন রকম দলবদ্ধ খেলাধূলোর মধ্যে দিয়ে শৈশব কাটায়, তাহলে বড় হয়ে অনেক সহজে ব্যর্থতাকে মেনে নিতে পারবে তারা।

exam_body_091618090110.jpgশিশুরা অধিকাংশ সময় পারিপার্শ্বিক প্রভাবে ব্যর্থতার চাপ নিতে পারে না

২। ওই বিশেষ সময়গুলোতে অভিভাবকেরা কখনই উত্তেজনা প্রকাশ করবেন না, বরং শিশুর সঙ্গে সঙ্গে থাকুন, ওকে যথেষ্ট সময় দিন। ওকে বোঝান সাফল্য বা ব্যার্থতা, এই বিষয়গুলো খুবই স্বল্পকালীন প্রভাব সৃষ্টি করে। বরং ব্যর্থতা থেকে পাঠ নেওয়াই জীবনের প্রকৃত শিক্ষা।

৩। যদি বাড়ীর পরিবেশে দমবন্ধ লাগে, বাচ্চাকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন কাছে-পিঠে। এতে নতুনভাবে ও পড়াশোনা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার সময় এবং সুযোগ দুই পাবে।

৪। এই সময়গুলোতে ওকে বলুন বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব যাঁরা জীবনের চরম বিপর্যয়কে মোকাবিলা করে জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়েছেন তাঁদের জীবনী পড়তে।

৫। বিভিন্ন রকম মোটিভেশনাল বক্তৃতা বা মেডিটেশন করতে শিশুকে উৎসাহ দিন। দেখবেন আস্তে আস্তে ও মনের জোর ফিরে পাচ্ছে।

৬। কোনভাবেই ওই সময়গুলোতে ভুলক্রমেও ভালো নম্বর পাওয়া ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ওর তুলনা করবেন না। সে সময় ওই ধরণের আলোচনা ওদের মনকে আরও বেশী দুর্বল এবং নেতিবাচক করে তোলে।

শিশুরা অধিকাংশ সময় পারিপার্শ্বিক প্রভাবে ব্যর্থতার চাপ নিতে পারে না। তাই আমরা যাঁরা তাদের আশেপাশে সর্বক্ষণ রয়েছি আমাদের দায়িত্ব ওদের পাশে থাকা এবং  উৎসাহ দেওয়া যাতে নতুন উদ্যমে পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য তারা প্রস্তুত হতে পারে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

PAYEL GHOSH PAYEL GHOSH

Parenting Consultant, educates young parents on positive parenting

Comment