নেটফ্লিক্সের লিটল থিংস কিন্তু জীবন সম্পর্ক বেশ বড় শিক্ষাই দেয়
দ্বিতীয় পর্বের বার্তাটা বেশ পরিষ্কার, জীবনের ছোট ছোট ঘটনাগুলোর সঙ্গে মানিয়ে চলতে শিখুন
- Total Shares
জন্ম-মৃত্যুর মাঝের সময়টাকে জীবন বলে। আর, এই জীবন ছোট ছোট ঘটনায় ভরপুর। নেমটফ্লিক্সের "লিটল থিংস" সিরিজের দ্বিতীয় ভাগে এই ঘটনাগুলোকে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যে ঘটনাগুলোকে আমরা উপভোগ করে থাকি, যে ঘটনাগুলো আমাদের স্মৃতিতে চিরকালের জন্য থেকে যায়।
অলস রবিবার কী ভাবে কাটানো যায়, স্নানের ঘর কে আগে ব্যবহার করবে তা নিয়ে প্রতিদিনের ঝগড়া, ঘরে বসে গ্রিন টি উপভোগ করা, সারা সপ্তাহ অক্লান্ত পরিশ্রমের পর ছুটির দিনে 'ল্যাদ' খাওয়া - বছর কুড়ির শহুরে দম্পতির জীবনের রোজনামচাই তুলে ধরা হয়েছে 'লিটল থিংস'-এ। এই দম্পতি ধীর-স্থির। লিভ ইন সম্পর্কের মধ্যেও এদের নিজেদের মধ্যে একটা অসাধারণ কেমিস্ট্রি রয়েছে।
ধ্রুব বৎস (ধ্রুব সেহগল) ও কাব্য কুলকার্নি (মিথিলা পলকর) মুম্বাইতে থাকেন। একটি সম্পর্ক যতটা সুস্থ ও আধুনিক হওয়া উচিত এদের দু'জনের পারস্পরিক সম্পর্কটা ঠিক সেই রকম।
মুম্বাইয়ের এক বছর কুড়ির দম্পতির জীবন কাহিনী 'লিটল থিংস'
এরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করেন আবার এরা নিজেদের মধ্যে গড়ে ওঠা ভুল বোঝাবুঝিগুলো আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে নিতে পারেন।
ধ্রুব ও কাব্য দু'জনেই মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন যে তাঁরা আর পাঁচটি দম্পতির মতোই নিতান্তই সাধারণ এবং জীবন উপভোগ করতে হলে তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে। তাঁরা পরিশ্রম করেন সফলও হন. একই সঙ্গে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব ও ভালো মানুষদের সঙ্গে মানিয়ে চলতেও পছন্দ করেন।
সিরিজটির প্রথম ভাগে দেখা গিয়েছিল এই দম্পতি কী ভাবে তাদের নৈশ্যজীবন বা সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজেদের জীবন উপভোগ করছিলেন। এই ভাগে অবশ্য তাদের কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যাগুলোর কথা, তাঁদের জীবনের বড় বড় সিদ্ধান্তগুলোর কথা এবং তাঁদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পছন্দ অপছন্দগুলোর কথা তুলে ধরা হয়েছে।
দ্বিতীয় ভাগে ধ্রুব ও কাব্যের বয়স বেড়েছে, সঙ্গে সময়সগুলোও বৃদ্ধি পেয়েছে। ধ্রুবের বড় হয়ে ওঠার কোনও লক্ষ নেই। উল্টোদিকে, কাব্য নিজের ক্যারিয়ার সম্পর্কে বেশ সচেতন। তাই ধ্রুব যখন হটাৎ করে চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেন কাব্য কিন্তু তখন আরও বেশি করে কাজের মধ্যে ডুব দিলেন। এর ফলে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হল ঠিকই, কিন্তু পরিস্থিতি হাতে বাইরে চলে যাওয়ার আগে দু'জনেই খুব দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেললেন।
প্রত্যেক শহুরে লোকই যে বড় স্বপ্ন দেখেন এমনটা কিন্তু নয়। আবার, প্রত্যেকই যে ১৪ ঘণ্টা অক্লান্ত পরিশ্রমের পর নিজের কাজকে ঘৃণা করতে শুরু করেন এমনটাও নয়। তাঁরা কিন্ত পরিশ্রমটাকে উপভোগ করেন। আর, এই দুই ধরণের মানসিকতার মধ্যে ঠিক বা ভুলের কিছুই নেই। এই বার্তাটাই 'লিটল থিংস'-এ তুলে ধরা হয়েছে।
এই গল্পটির পরিষ্কার কোনও প্লট নেই, ঠিক আমাদের জীবনের মতো
সিরিজটি দেখতে দেখতে একটা সময় আপনার উপলব্ধি হবে যে এই গল্পটির কোনও প্লট নেই - ঠিক যেন আমাদের জীবনের মতো। প্রতিটি এপিসোডে একটি করে নতুন গল্প রয়েছে যা মনকে নাড়া দিতে বাধ্য।
সকালে উঠে অফিসের যাওয়ার সময় ধ্রুবকে তারা দিয়েছিলেন কাব্য তা নিয়ে ঝগড়ার সূত্রপাত। শেষমেশ বিস্তর চিৎকার চেঁচামেচি পর স্নানের ঘরের শাওয়ারের পরিবর্তে বালতি মগ দিয়ে স্নান পর্ব সেরে নেওয়া। এই ধরণের ছোট ছোট ঘটনাগুলোতো আমাদের জীবনের রোজনামচা।
এই ছোট ছোট ঘটনাগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিখুন - 'লিটল থিংস' আমাদের এই শিক্ষাটাই দেয়।
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে