কেরলে নিপায় মৃত ১১, পশ্চিমবঙ্গ নিপা মোকাবেলায় কতটা প্রস্তুত

"বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিপা ভাইরাস নিয়ে একজনের ভর্তির খবরটা একেবারেই ভুল"

 |  3-minute read |   24-05-2018
  • Total Shares

দক্ষিণ ভারতে পাওয়া গেছে নিপা ভাইরাস, মৃত্যু হয়েছে অনেকের। এই খবর কপালে ভাজ ফেলেছে পশ্চিমবঙ্গ তথা অন্যান্য রাজ্যের মানুষেরও। কেনই বা হবে না। এর আগে ২০০১ সালে শিলিগুড়িতে ও ২০০৭ সালেও নদিয়া জেলায় নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় অনেকে মারা যান।

যদিও আজ স্বাস্থ্য অধিকর্তা (পরিষেবা) ডা. অজয় চক্রবর্তী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে এই পর্যন্ত নিপায় আক্রান্ত হওয়ার কোনও খবর আমাদের কাছে আসেনি। যদিও আজ অনেকগুলো সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারলাম যে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিপা ভাইরাস নিয়ে একজন ভর্তি হয়েছেন। এটা একেবারেই একটা ভুল খবর।"  

body1_052418090628.jpg

তাই রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ও কলকাতা পুরসভা রাজ্যজুড়ে সতর্কতা জারি করেছে। ডা. চক্রবর্তী যেমনটা জানিয়েছেন যে, "আমরা সকলকে সচেতন করেছি ও পরিস্থিতি জানতে সবকটি জেলা ও সবকটি মেডিকেল কলেজ থেকে রিপোর্ট নেওয়া হচ্ছে। যদিও আমাদের রাজ্যে এই ভাইরাসকে দমন ও মোকাবেলা করার জন্য আমরা সব ভাবেই প্রস্তুত রয়েছে।"  

যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে নিপা ভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তা করার তেমন একটা প্রয়োজন নেই, কারণ যে ধরণের বাদুড় থেকে এই রোগটি হতে পারে সেই ফ্রুটব্যাট আমাদের রাজ্যে এখন খুব কম। তাছাড়া যেই এলাকায় এই রোগটি দেখা গেছে সেখান থেকে কেউ যদি অন্যত্র না আসে তাহলে এই রোগটা সেই এলাকার বাইরে যেতে পারে না।       

তাই যেই রোগটি নিয়ে এখন সারা দেশ হৈচৈ করেছে সেই নিপার সমন্ধে কয়েকটি তথ্য জেনে নিন। 

প্রথম কবে এই ভাইরাসটি সামনে আসে

নিপা ভাইরা বা এনআইভি মালয়েশিয়ার কামপুং সুঙ্গাই নিপাতে ১৯৯৮ সালে প্রথমবার এই ভাইরাসটি চিহ্নিত হয়। এরপর ২০০৪ সালে বাংলাদেশে আবার এই রোগটির প্রকোপ দেখা যায়। আর এবার খোদ ভারতের দক্ষিণ দিকে এই ভাইরাসের প্রকোপে মৃত্যুও ঘটে গেল। 

নিপা ভাইরাস কী?

ওয়ার্ল্ড হেল্‌থ অর্গানাইজেশন-এর রিপোর্ট অনুসারে যে সব বাদুর ফলমূল খায় তাদের থেকে নিপা হতে পারে। এই কারণেই  চিকিৎসকরা কাটা ফল খেতে ব্যারন করছেন। আবার যদি কোনও ব্যক্তির শরীরে এই ভাইরাসটি বাসা বাঁধে তাহলে সেই ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তি সংক্রমিত হতে পারে।

body3_052418090647.jpg

এটি একটি জুনোটিক রোগ।

ক্যালকাটা হসপিটালের চিকিৎসক তপন কুমার বন্দোপাধ্যায় জানান যে শুয়োর বা শুয়োরের বর্জ থেকেও এই রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি একটি বিরল ভাইরাসের মধ্যে পড়ে। অনেক সময় দেখা যায় যে গ্রামের দিকে বাঁদুরের এঁটো করা ফল বাচ্চা ছেলেমেয়েরা কুড়িয়ে নিয়ে খায়। তাই এদেরও এই রোগটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যায়।

নিপা আক্রান্তের লক্ষণগুলি কী?

ডা. বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বেশ কিছু দিন পর্যন্ত সেটা চিহ্নিত হয় না, কারণ সেই ক্ষেত্রে আমার শরীর এই ভাইরাসটির সঙ্গে যুদ্ধ করে তাকে মেরে ফেলে।

তবে সাধারণভাবে কারও শরীরে নিপা বাসা বাঁধলে প্রথমে জ্বর, হাত-পা ব্যথা, মাথা ব্যথা, ঝিমুনি, দুর্বলতা ও স্বাসকষ্টর মতো লক্ষণ দেখা যায়। এই রোগীটা আমাদের মস্তিষ্ককে আক্রান্ত করে, যা বেশ মারাত্মক। রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটলে বা সে অসম্ভব স্বাসকষ্টে ভুগতে আরম্ভ করে তাকে ইনটেনসিভ কেযার ইউনিটে রেখে চিকিৎসা করা হয়। 

body2_052418090708.jpg

চিকিৎসা পদ্ধতি

এই বিষয়ে ডা. বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, "দুর্ভাগ্যবশত এই ভাইরাসটির কোনও চিকিৎসা বা প্রতিশেধক নেই। তাই এখানে রোগের লক্ষণ দেখে চিকিৎসা করতে হবে। এই রোগটির মূলচিকিৎসা এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়েনি, যদিও বিশ্বজুড়ে এই রোগটি আর ভাইরাসটি নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা শুরু হয়েছে। তবে যেসব রোগীদের এই রোগটা বেশ বাড়াবাড়ী পর্যায় পৌঁছে যায় তখন পরীক্ষামূলক ভাবে তাঁদের একটি আন্টিভাইরাল যার নাম 'রিভাভাইরিন' দিয়ে চিকিৎসা পড়ার প্রচেষ্টা হয়। তবে এই ওষুধটির কার্যকারিতা নিয়ে দ্বিমত চিকিৎসক মহলে দ্বিমত রয়েছে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment