শুধু কলকাতা নয়, দিল্লি থেকেও সরাসরি বিমান সংযোগ চায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো
অনুপ্রবেশ সমস্যা থাকলেও এনআরসি চালু করতে নারাজ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো
- Total Shares
'ছোড়ো কাল কি বাত, কাল কি বাত হ্যায় পুরানি' - শনিবার ইন্ডিয়া টুডের ইস্ট কনক্লেভে এসে গানটি গেয়ে গেলেন অরুণাচলপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু।
অনেকেই মনে করছেন যে অরুণাচল প্রদেশে চিনের অগ্রাসনের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে বার্তা পাঠাতে হয়ত এই মঞ্চে এই গানটিকে হাতিয়ার করেছেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ১৯৬১ সালে মুক্তি পাওয়া 'হাম হিন্দুস্তানী' ছবির এই গানটির পরবর্তী লাইনগুলোতে তো নতুন ভারত গড়ার কথা বলা হচ্ছে। আর, স্বাধীনতার সাত দশক বাদে নতুন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো।
ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে উত্তরপূর্ব ভারতের চারটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰীরা উপস্থিত ছিলেন - খান্ডু বাদে, মেঘালয়ের কনরাড সাংমা, ত্রিপুরার বিপ্লব দেব ও মণিপুরের এন বীরেন সিং। এঁদের প্রত্যেকের মুখেই ছিল উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে নতুন দিশা দেখানোর কথা।
কিন্তু, গোটা দেশের সঙ্গে উত্তর পূর্বাঞ্চলের 'দূরত্ব' ঘুচিয়ে দেওয়া কী ভাবে সম্ভব?
প্রথমেই আক্ষরিক অর্থে দিল্লির সঙ্গে রাজ্যগুলোর 'দূরত্ব' ঘোচাতে চান মুখ্যমন্ত্রীরা।
ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী [সৌজন্য: ইন্ডিয়া টুডে]
খাণ্ডু যেমন বললেন যে অরুণাচল প্রদেশের প্রধান সমস্যা 'কানেক্টিভিটি', অর্থাৎ পরিবহণ সমস্যা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, সড়ক, বিমান সংযোগ ও ডিজিটাল সংযোগের উপর জোর দিচ্ছে তাদের সরকার। রাজধানীর আশপাশে নতুন একটি বিমানবন্দর স্থাপন করতে চায় তাঁর সরকার। শুধু কলকাতা নয়, ওই বিমানবন্দরে দিল্লি থেকেও সরাসরি বিমান নামার ব্যবস্থা করা হবে।
একই কথা মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী সাংমার মুখে। রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের শহরতলিতে একটি বিমানবন্দর রয়েছে। কিন্তু কিছু সমস্যার জন্য ওই বিমানবন্দরে বিমান ওঠা-নামার উপর কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। সাংমা জানালেন যে তাঁর সরকার খুব দ্রুত ওই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে চলেছে। মেঘালয়েরও দাবি শুধু কলকাতা নয়, দিল্লি থেকে সরাসরি বিমান সংযোগ হোক ওই রাজ্যেও।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার এন বীরেন সিংও জানাচ্ছেন যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্প্রসারণই তাঁর সরকারের মূল লক্ষ্য। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "কেন্দ্র ২২,০০০ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে আমাদের রাজ্যে সড়ক যোগাযোগ সম্প্রসারণের জন্য। আমরা যত দ্রুত সম্ভব ওই টাকা খরচ করতে চাই।"
এই চারটি রাজ্যের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সবচেয়ে ভালো ত্রিপুরায়। কিন্তু ত্রিপুরার অন্য সমস্যা রয়েছে। মাদক সমস্যায় জর্জরিত এই রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, "আমি রাজ্যকে মাদকমুক্ত করতে চাই। আর এটাই আমার প্রধান লক্ষ্য।"
উন্নয়নের বাইরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোকে ভাবাচ্ছে অসমের এসআরসি সমস্যা। কিন্তু এনআরসি নিয়ে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেলেন এই চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰীরা। তাঁদের একটাই বক্তব্য, যে তাঁদের রাজ্যও অনাধিকার প্রবেশের সমস্যা রয়েছে এবং তাঁরা নিজেদের মতো করে এই সমস্যার মোকাবিলা করছে। কিন্তু এনআরসির মতো কোনও প্রক্রিয়া এই মুহূর্তে তাঁদের চিন্তায় নেই।