গণতন্ত্রের অপব্যবহার করে পাকিস্তান কী ভাবে সন্ত্রাসের মদত দিয়ে থাকে

পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে, পাশাপাশি পাকিস্তান জঙ্গিসংগঠনগুলোর আঁতুরঘর

 |  3-minute read |   17-03-2019
  • Total Shares

গণতন্ত্রের অপব্যবহার পাকিস্তানের পুরোনো চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। আর, জম্মু ও কাশ্মীরে ভয়াবহ জঙ্গিহামলা কিন্তু এই গণতন্ত্রের অপব্যবহারের ফলেই হয়েছে।

তথ্যের দিকে নজর দিলেই জানা যাবে যে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক নীতি ভাঙা ও ভারতের মাটিতে জঙ্গিহামলার ঘটনা কিন্তু সরাসরি সমানুপাতিক।

ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্ট ইউনিটের সাম্প্রতিকতম ডেমক্রেসি ইনডেক্স ২০১৮-তে বলা হয়েছে, শেষ পাঁচ বছরে পাকিস্তানের ডেমক্রেসি ইনডেক্স ১০ শতাংশ ভেঙে পড়েছে। সেই সময়তে জঙ্গিহামলা প্রায় ১৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

body_031719060349.jpg

এই সময়তে, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের মৃত্যসংখ্যার হার ৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই সমীক্ষায় পাকিস্তানের স্থান ১১২। পাঁচ বছর আগে, ২০১৪ সালে পাকিস্তান কিন্তু ১০৮ নম্বর স্থানে ছিল।

এই ইআইইউ ইনডেক্স ভারত সহ ১৬৫টি দেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে সমীক্ষা চালায়।

২০১৪ সালের পাকিস্তান দশের মধ্যে ৪.৬৪ স্কোর করেছিল - এবার পাকিস্তানের স্কোর ৪.১৭।

ইআইইউ রিপোর্টে বলা হয়েছে, "২০১৮ সালের নির্বাচনে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ), বা পিএমএল (এন), ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর কাছে পরাজিত হয়ে ক্ষমতা হারায়। পরাজিত দল নির্বাচনে ব্যাপক রিগিং হয়েছে বলে অভিযোগ জানায়।"

body1_031719060505.jpgখুলেআম জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে মদত দিয়ে থাকে পাকিস্তান [ছবি: রয়টার্স]

ইআইইউ রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট পিএমএল(এন)-এর নেতা নওয়াজ শরিফকে ২০১৭ সালে দুর্নীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। পানামা নথি প্রকাশ্যে আসার পরেই নওয়াজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়।

ধর্ম থেকে শুরু করে হিংসা - পাকিস্তানের সবকটি আলোচনা কাশ্মীরকে কেন্দ্র করেই হয়ে থাকে। 'জিহাদের' নাম দিয়ে পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে অঘোষিত যুদ্ধ করেই যাচ্ছে।

আর, এর ফলে, গত তিরিশ বছরে পাঁচ হাজারেরও বেশি নিরাপত্তারক্ষী কাশ্মীরে মারা গিয়েছে।

এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ ১৪ ফেব্রুয়ারির পুলওয়ামা জঙ্গিহামলা, যে হামলায় ৪০জন সিআরপিএফ জওয়ান শহীদ হয়েছে। এই হামলার দায়ে স্বীকার করে নিয়েছে জৈশ-ই-মহম্মদ। এই জঙ্গিগোষ্ঠী কিন্তু পাকিস্তানের মাটিতে বেশ সক্রিয়।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা জানাচ্ছে, কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ জারি রাখতে পাকিস্তান প্রচুর পরিমাণ অর্থ খরচ করে।

২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাখ্যাৎকারে পারভেজ মুশারফ জানিয়েছিলেন, আইএসআই লস্কর-ই-তৈবা ও জৈশ জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। ভারতের মাটিতে সন্ত্রাসবাদ সেদিনই বন্ধ হবে যেদিন ভারত কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করবে।

তিনি জানিয়েছে, "কাশ্মীর এখনও পাকিস্তানকে আবেগপ্রবণ করে তোলে। কাশ্মীরের হয়ে কেউ লড়াই করা মানে তাকে স্বাধীনতা সংগ্রামীর মান্যতা দেওয়া হয়ে থাকে।"

ভারত যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঙ্গিহামলার অভিযোগ এনে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে মাসুদ আজহারকে ব্ল্যাকলিস্ট করার দাবি জানিয়েছিল তখন চিন নিজের ভেটো ক্ষমতা প্রদান করে মাসুদ আজহারকে ব্ল্যাকলিস্টেড হতে দেয়নি।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানে চিনের অর্থনৈতিক ভূমিকা প্রবল, এমনকি পাকিস্তানের গণতন্ত্র ব্যবস্থাতেও।

ডেমোক্রেসি ইনডেক্সটা ঠিক কী?

বিশ্বের ১৬৫টি দেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক অবস্থা ইআইইউ পরিচালিত এই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।

২০১৮ সালে যে ৪২রি দেশের নম্বর কমেছে তার মধ্যে পাকিস্তান একটি।

এই ইনডেক্স মূলত পাঁচটি ক্ষেত্রে উপর নির্ভরশীল - নির্বাচনী প্রক্রিয়া, মানবাধিকার, সরকারি ব্যবস্থা, রাজনৈতিক ও দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি।

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000
Comment