সাধারণ মানুষের ফোনে সরকার কি আড়ি পাততে পারে?

জাতীয় স্বার্থে আড়ি পাতলে গোপনীয়তা ভঙ্গ হবে না?

 |  2-minute read |   17-07-2018
  • Total Shares

সম্প্রতি একটি খবর নিয়ে বেশ শোরগোল পড়ে গেছে সেটা হল খুব দ্রুত সরকার সাধারণ মানুষের সোশ্যাল মিডিয়ার সমস্ত খুঁটিনাটির উপর নজরদারি করবে।

হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম সহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা কে কী মেসেজ চালাচালি করছি কিংবা কী ধরণের পোস্ট করছি সেই সব কিছুর উপর গোপনে অতন্দ্র প্রহরা বসাবে সরকার। এই নজরদারির জন্য কেন্দ্র সরকার 'সোশ্যাল মিডিয়া হাব' গঠনের কথাও ভেবেছে। 

body_071718025808.jpg

বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছেন। মামলাটির পরিবর্তী শুনানির দিন অর্থাৎ ৩ আগস্টের মধ্যে সরকারকে উত্তর দিতে নির্দেশ দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে তিন বিচারপতির একটি বেঞ্চ মামলাটি শুনবে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, "সরাসরি কোনও রাজ্য সরকার এই ধরণের নজরদারি চালাতে পারবে না তবে কেন্দ্র সরকার দেশের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এই ধরণের নজরদারি চালাতে পারে। শুধুমাত্র বিশেষ কোনও কারণেই কোনও রাজ্য সরকার এই নজরদারি করতে পারে। এখানে আবার আরও একটি বিষয় যেটা মাথায় রাখতে হবে সেটা হল কেন্দ্র সরকারের সবকটি বিভাগ ইচ্ছে করলেই আড়িপাততে পারে না, শুধু মাত্র অ্যান্টি টেরোরিজম স্কোয়াডের হাতেই এই ধরণের ক্ষমতা থাকে।" তিনি বলেন বেশ কয়েক বছর আগে এমনই একটি বিষয় নিয়ে ভারত সরকারের কানাডিয়ান সংস্থা 'ব্ল্যাকবেরি'র সঙ্গে মতপার্থক্য হয় এবং তার জেরেই ব্ল্যাকবেরি ভারত থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেয়।

body2_071718025820.jpg

এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো, সেটা হল সম্প্রতি ইউরোপীয়ান ইউনিয়ানের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের গোপনীয়তা রক্ষার্থে যে জেনারেল ডেটা প্রোটেকশন রেগুলেশন (জিডিপিআর)-আইন রয়েছে সেখানেও একটি ধারায় বলা আছে যে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার এইধরণের নজরদারি চালাতে পারবে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে দেশের ও দেশের সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে সরকার যদি এ হেন সিদ্ধান্ত নেয়ে তা হলে তার পক্ষে যুক্তি খাটে। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিত্তশালী মানুষজন পর্যন্ত কেউই এর আওতার বাইরে থাকবেন না। তাই একজন ব্যক্তির উপরেই নির্ভর করবে যে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় কী ধরণের মন্তব্য করবেন কিংবা হোয়াটস্যাপ-এ কাকে কী মেসেজে করবেন।

body3_071718025831.jpg

সরকারের এ হেন সিদ্ধান্তের কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মহলে তর্কের ঝড় উঠেছে যে আমাদের সংবিধানে ব্যক্তির ভাব প্রকাশের অধিকারের কথা বলা আছে তাই যদি সরকার সাধারণমানুষের সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালায় তাহলে আমাদের তা যেমন সংবিধানের বিরুদ্ধে যাবে তেমনই জনসাধারণের গোপনীয়তা খর্ব হবে। 

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment