মিটু আন্দোলন: অভিযোগকারীরা কতটা নিরাপদ

যাঁরা অভিযোগ করছেন তাঁরা প্রশ্নবাণে জর্জরিত, অভিযুক্তদের কেউ কোনও প্রশ্নই করছেন না

 |  2-minute read |   16-10-2018
  • Total Shares

নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে যৌন্য হেনস্তার অভিযোগ তুলেছিলেন অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত। আর, এর সঙ্গে সঙ্গেই আসমুদ্রহিমাচল জুড়ে মিটু আন্দোলনের হিড়িক পরে গেল।

সেপ্টেম্বর মাসে তনুশ্রী জানিয়েছিলেন যে ২০০৮ সালে তিনি শুধুমাত্র যৌন্য হেনস্তার শিকার হননি, ঘটনাটির পর তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করতে নানা একটি রাজনৈতিক দলের শরণাপন্নও হয়ে ছিলেন।

কিন্তু, এর পরেও প্রথমেই একটি অস্বস্তিকর সামনে পড়তে হয়েছিল তনুশ্রীকে: "ঘটনার দশ বছর পরে কেন তনুশ্রী এই অভিযোগ করছেন?"

আসলে আমাদের সমাজটাই বোধহয় এরকম। এখানে একজন মহিলার সাহসকে কৃতিত্ব দেওয়ার লোক খুব কম। উল্টে মহিলার সাহস নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য প্রচুর লোক রয়েছে।

body_101618032412.jpgতনুশ্রীর সাহসকে কুর্নিশ জানানো উচিত

এর থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে আমাদের সমাজ এখনও মহিলাদের যোগ্য সম্মান দিতে প্রস্তুত নয়। আমরা নিজেরা যতক্ষণ না নিজেদের মানসিকতা বদল করছি ততক্ষন কিন্তু এই পরিস্থিতির বদল হবে না।

তনুশ্রী দত্তের মতো জনপ্রিয় মহিলাই যদি প্রশ্নবাণের সম্মুখীন হতে পারে তাহলে আর পাঁচটা সাধারণ মহিলার অবস্থা কী হবে তা একবার ভেবে দেখুন। যে কোনও ধরণের নিগ্রহের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই লড়া মহিলাদের জন্মগত অধিকার। কিন্তু তাঁদের সেই অধিকার রক্ষা কি আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। দেশ হিসেবে ভারত কিন্তু মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত সংসার বা সুরক্ষিত কর্মস্থলের ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়েছে। যাঁরা প্রতিবাদ করার সাহস দেখিয়েছেন এখন আমরা তাদের কণ্ঠরোধের যিনি উদগ্রীব হয়ে উঠেছি।

ইতিমধ্যে, অবশ্য একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে - পেশা নির্বিশেষে ভারতেও হার্ভে ওয়েইনস্টেইনদের অভাব নেই। কিন্তু যাঁরা অত্যাচারের শিকার হয়েছেন তাঁদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা যাঁরা করে চলেছেন তাঁরাও কিন্তু সমান দোষী।

যাঁরা অত্যাচারের শিকার হয়েছেন তাঁদেরকে সকলে প্রশ্ন করে চলেছেন। অথচ, অভিযুক্তদের কেউ কোনও প্রশ্নই করছেন না।

body1_101618032529.jpgঅভিযোগকারীর কণ্ঠরোধের চেষ্টা চলছে [সৌজন্যে; টুইটার]

তনুশ্রীর ঘটনায় তাঁর সহকর্মীরা সকলেই মনে করছেন যে অভিযুক্ত একজন বর্ষীয়ান অভিনেতা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তিনি কোনও দোষ বা অন্যায় করতে পারেন না।

আমাদের দেশে বিভিন্ন সামাজিক শ্রেণী ও বয়সের মহিলারা প্রতিনিয়ত নিগ্রহের শিকার হন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা যদি অত্যাচারিতদেরই প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতে থাকি তাহলে অপরাধীরা সাজা পাবেন কী ভাবে?

১০১২ সালে দিল্লিতে ঘটে যাওয়া একটি ধর্ষণ কাণ্ডের আতঙ্ক আজও আমাদের তাড়া করে বেড়ায়। অথচ,এর পরেও, আমরা একজন মহিলাকে বিশ্বাস করতে পারছি না কারণ তিনি ১০ বছর আগের অভিযোগ তুলেছেন বলে।

এই পুরো ঘটনা থেকে একটা প্রশ্নের উদয় হয়েছে - আমরা কি এমন একটি সমাজ চাই যেখানে ভালোবাসা বন্ধ ঘরে হবে আর নিগ্রহের মতো ঘটনাগুলো প্রকাশ্যে হবে?

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

MAYURESH GANAPATYE MAYURESH GANAPATYE @mayuganapatye

Special Correspondent, India Today TV

Comment