দশমীর পরের দু’দিন শনি-রবিবার, এখনও কাজে ফেরেনি কলকাতা

ডিএ তো দিচ্ছে না, অন্তত ছুটিটা দিক – বলছেন রাজ্যসরকারি কর্মীরা

 |  2-minute read |   21-10-2018
  • Total Shares

পুজো শেষ। মণ্ডপ অর্ধেকটা খোলা হয়ে গিয়েছে। বাকিটা খোলা হবে লক্ষ্মীপুজোর পরে। ঢিমে তালে চলছে লক্ষ্মীপুজোর জোগাড়। তবে শনিবার পর্যন্ত নিত্যবাজার ঠিকমতো বসেনি কোথাও। বাসি যা দু-চারটে বাজার ছিল তাই বেচতে বসেছিলেন অনেক বাজারি।

কলকাতা শহরের একটা ধারা আছে, পুজোর ভিড় যাঁরা এড়াতে চান তাঁরা একাদশীতে ঠাকুর দেখেন। আগে বড় বড় পুজোকমিটিগুলো লক্ষ্মীপুজোর পরেই একেবারে প্রতিমা ভাসান দিত। পরে সরকারি নির্দেশে সেই পুজোকমিটিগুলো নির্ধারিত দিনে বিসর্জন দিতে শুরু করে, দিন বেঁধে দেওয়া হয়। এখন কলকাতার বড় ৭৫টি প্রতিমা রেড রোডের কার্নিভ্যালে যোগ দেয়। মঙ্গলবার কার্নিভ্যালের পরে ভাসান। এক কথায় বহু মণ্ডপে এখনও প্রতিমা রয়েছে।

পুজোর সময় বন্ধ থাকে না ছোট ব্যবসা। পুলিশ-দমকল-হাসপাতাল-সংবাদমাধ্যমেরও ছুটি থাকে না। আজকাল পুজোর মধ্যে অফিস করতে হয় অনেক বেসরকারি চাকুরেকে। এ ভাবেই তাঁরা অভ্যস্ত। পুজো মিটলেও তাঁদের মধ্যে এখনও ক্লান্তি ও গাছাড়া ভাব রয়েছে। যাঁরা রাত জেগে ঠাকুর দেখেছেন আর দিন জেগে আনন্দ করেছেন এখন তাঁরা ক্লান্ত। শনি-রবিবার ছুটি থাকায় কিছুটা নিশ্চিন্ত। অফিস থাকলেও কাজে পুরোপুরি মন দিতে পারতেন না অবশ্য।

kolkatabandh-pti_730_102118061117.jpgএখনও কাজের মেজাজে ফেরেনি কলকাতা (ফাইল চিত্র: পিটিআই)

এ রাজ্যে আগে প্রায় এক মাস বন্ধ থাকত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখন স্কুল-কলেজে পুজোর ছুটি কমেছে, একই সঙ্গে রাজ্যসরকারি অন্য দফতরে ছুটি বেড়েছে। পূর্ত দফতরে কর্মরত এক ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে দিন কয়েক আগে দেখা। পুজোয় ছুটির কথা তুললেই তাঁর জবাব, “তেরো দিন ছুটি। ডিএ তো দিচ্ছে না, অন্তত ছুটিটা দিক। পুজোর মধ্যে অফিসে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।”

শুক্রবার বিজয়াদশমী, তার পরের দুটো দিন শনিবার ও রবিবার হওয়ায় সেই দুই দিনও পুজোর মধ্যেই ঢুকে গিয়েছে। তাই বিসর্জনের গেরোয় আটকে পড়েছেন শহরতলির ই-রিকশা বা টোটোগাড়ির চালকরা। এখনও তাঁরা বিকেল চারটে থেকে রাত একটা পর্যন্ত টোটো চালাতে পারছেন না।

সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ হলেও এখনও অনেক জায়গাতেই বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিজয়াদশমীর প্রণাম জানানোর চল রয়েছে। তাই মিষ্টির দোকানগুলোতে এখনও চন্দ্রপুলির মতো পুরোপুরি দুর্গাপুজোর মিষ্টি পাওয়া যাচ্ছে।

kolkata-road_102118061217.jpegরাস্তাঘাট এখনও ফাঁকা (পিটিআই)

বাস কম, যাঁরা নিরুপায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে তাঁদের বাস ধরতে হচ্ছে। সেই বাসেও যে খুব ভিড় হচ্ছে তা অবশ্য নয়। বৃহস্পতি বার থেকে শহর আবার পুরোনো ছন্দে ফিরবে বলে আসা করা যায়।

রাস্তার ধারে বসা রোল-চাউমিন-বিরিয়ানির দোকানগুলো উঠে গিয়েছে। ঢাকিরা বাড়িতে ফিরেছেন পাওনা বুঝে নিয়ে। ডেকরেটাররাও পাওনা প্রায় পেয়েই গিয়েছেন। তাই এখন তাঁদের আনন্দ করার সময়। এবার তাঁদের পরিবারের সকলের নতুন পোশাক হবে।

কলকাতার অবস্থা এখন অনেকটা সদ্য ঘুম ভাঙার মতো। কাজ আছে তবে সেই কাজে মন নেই, চাড় নেই। পুজোর আমেজটা এখনও শহরকে জড়িয়ে রয়েছে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment