পুরোনো রেখেই নতুন সাজ, ইতিহাস ও আধুনিকতার সংমিশ্রণে উদ্ভিদবিদ্যা বীথিকা

মূল স্থপতিদের প্রতিকৃতি ভারতীয় জাদুঘরের অন্য কোনও বীথিকায় নেই

 |  2-minute read |   10-05-2018
  • Total Shares

সম্প্রতি ভারতীয় জাদুঘরে যে কটি বীথিকা খুলেছে, তা মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেকশন বা অর্থকরী উদ্ভিদ বিভাগটির একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। জাদুঘরের অন্য কোনও বীথিকা বা গ্যালারিতেই সেই বিভাগের মূল স্থপতিদের প্রতিকৃতি নেই। তাই এমন একটা ব্যাপার নিশ্চয়ই প্রশংসনীয়। উৎসাহীরা চাইলে একটু সময় নিয়ে অনেক বিষয়ে লেখাও পড়ে ফেলতে পারেন। কিন্তু তা বলে এই গ্যালারি স্বয়ংসম্পূর্ণ, এমনটি বলা যাবে না।

বিভিন্ন গাছের অংশ, যেগুলি সিঁড়িতে রাখা আছে, সেগুলি সুন্দর ভাবে পালিশ করে দেওয়ায়, ওই সব নিদর্শনের আয়ু বেড়েছে বটে, কিন্তু সেগুলির প্রকৃত রং কী, তা দেখা থেকে শুধু সাধারণ দর্শকরা নন, বঞ্চিত হবেন আগ্রহী ও গবেষকরাও। তবে প্রতিটি গাছের নাম বাংলায় এবং সেই গাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম রোমান হরফে লেখা থাকার ফলে, ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখে নিতে পারেন কৌতূহলীরা।

bsiiiii_051018090510.jpgউদ্ভিদ জগতের নানা বৈচিত্র্য এখানে রয়েছে

এই গ্যালারির স্থপতি স্যার জর্জ ওয়াট সাধরণের জন্য ইকোনমিক বট্যানি গ্যালারি নামে এই প্রদর্শনকক্ষ প্রথমবার খুলে দেন ১৯০১ সালের ২৯ মে। তখন এখানে ছিল ১৫,১৮৫টি নিদর্শন। তবে আজ যে অবস্থায় এই গ্যালারিটিকে দেখা যায়, তার কৃতিত্ব এসএন বল এবং কেএস শ্রীনিবাসন।

ভারতীয় জাদুঘরের এই বিভাগের আরেকটি অনন্য বৈশিষ্ট্য আছে। কেউ যদি এখানে কোনও গাছের পাতা বা অন্য কোনও অংশ নিয়ে আসেন, সেই নিদর্শনটি কোন গাছের, সেই তথ্য জানানোর ব্যবস্থা এখানে আছে।

bsi_body2_051018090633.jpgবিশ্বের সবচেয়ে বড় ফল, যাকে জোড়া-নারকেল বলা হয়

জাদুঘরের এই অংশটির দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের অধীন বট্যানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। প্রায় বছর চারেকের প্রচেষ্টায় নতুন করে খোলা হয়েছে এই গ্যালারি। এখানে বিভিন্ন ফল-ফসল যেমন রয়েছে, তেমনই যেগুলো এ ভাবে রাখা সম্ভব নয়, সেগুলির মাটির প্রতিরূপ রাখা হয়েছে।

নীলল বিদ্রোহের কথা কে না জানে। নীলবাঁদরে সোনার বাংলা কী ভাবে ছারখার করেছিল, সে কথাও জানা সকলের। কিন্তু কেমন দেখতে ছিল সেই নীল কারকানা, কেমন ভাবেই বা উৎপাদন করা হত নীল, তার ঊনীকৃত মডেল তৈরি করে পুরো প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পাটনায় বারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের যে সাইট মিউজিয়াম রয়েছে, সেখানেও একটি কক্ষে আকবরের সময়ে হওয়া বৌদ্ধ ধর্ম মহাসম্মেলনের ত্রিমাত্রিক রূপ রাখা রয়েছে, যাতে দর্শকের বুঝতে সুবিধা হয়।

bsi_body3_051018090658.jpgদক্ষিণ আমেরিকা থেকে এই গাছ ব্রিটিশরা এ দেশে এনেছিল

উদ্ভিদ জগতের নানা বৈচিত্র্য এখানে রয়েছে। যেমন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফল, যাকে জোড়া-নারকেল বলা হয়, সেটি। এই ফলটির ওজন হয় ৪২ কিলোগ্রাম পর্যন্ত, বীজের ওজন হয় ১৭.৬ কিলোগ্রাম পর্যন্ত আর তাল-নারকেল জাতীয় গাছের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড়।

ম্যালেরিয়া বললেই সবার আগে যে ওযুধের নাম মনে আসে, তা হল কুইনিন। ভয়ানক তেতো সেই বড়ি। সিঙ্কোনা গাছের ছাল থেকে এই বড়ি তৈরি হত। সিঙ্কোনা অবশ্য এ দেশী গাছ নয়। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এই গাছ ব্রিটিশরা এ দেশে এনেছিল। সেই গাছের ছাল আর কুইনিন বড়ি তৈরির যন্ত্র রাখা হয়েছে সংগ্রহালয়ের এই অংশে। উপযুক্ত কারণ জানালে এই সংগ্রহালয়ের আগারে রাখা অমূল্য সম্পদ দেখার সুযোগ পাওয়া যেতে পারে, ব্যবহার করতে পারেন গ্রন্থাগারও।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

SUMITRO BANDYOPADHYAY
Comment