সিনেমাটোগ্রাফির জগতে এখনও এগিয়ে পুরুষরাই

এই মুহূর্তে সিনেমাটোগ্রাফি ও এর সঙ্গে জড়িত জগতের সঙ্গে প্রায় ৮০ জন মতো মহিলা যুক্ত আছেন

 |  3-minute read |   10-05-2018
  • Total Shares

তাঁর দ্বিতীয় ছবি 'ইদাক'-কের জন্য চলচিত্রগ্রাহক অর্চনা বোরহাদেকে মহারাষ্ট্রের অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে সোলাপুর ও ভীমাশঙ্করে শুটিং করতে হয়েছিল। শুটিংয়ের সময় যেমন কম ছিল, আলোও তেমনই কম ছিল, আবহাওয়ারও ছিল যথেষ্ট অসহনীয়। ছবির প্রধান চরিত্রগুলোর মধ্যে একটি ছাগল হওয়াতে পুরো পরিস্থিতিটা আরও একটু বেশি জটিল হয় পড়ে। বোরহাদে বলেন যে, "এক রকমের দুটো ছাগল ছিল-সোম্য ও গোম্য- এরা দুজনেই খুব খেলাধুলো করত এবং শুটিংয়ের সময় এদের সঙ্গে আমরা অনেক মজাও করতাম। কিন্তু ক্যামেরার সামনে এদের অভিনয় করানোটা শঙ্কর আন্নার* পক্ষ্যে বেশ একটু কঠিন ব্যাপার ছিল।" চলচ্চিত্রগ্রাহক হিসাবে বোরহাদের প্রথম ছবি হল একটি মারাঠি সাই-ফাই সিনেমা যার নাম হল 'ফুনট্রু'।

বোরহাদে বলেন, "ছাগলটা মাঝে মধ্যেই নিজের মনে রাস্তা দিয়ে হাঁটা দিত আর আমাদের ওর পেছন পেছন যেতে হত। আর অভিনয়ের প্রতি ছাগলটিকে মন দেওয়ানো এবং ওকে আমাদের অনবরত কাজে মনোযোগী করে রাখতে হত।"

মারাঠি সিনেমায় তাঁর অবদানের জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের দ্বারা তিনি পুরস্কৃত হন। এটাই ছিল বোরহাদের ধৈর্য্য ও একনিষ্ঠতার আসল পুরস্কার। শরদ কেল্কার ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রজোজিত এই ছবিটি সেরা সিনেমা ও সেরা চিত্রনাট্যের জন্যও মনোনীত হয়। দীপক গোয়াড়ে এই ছবিটির পরিচালক। ছবিটিতে দেখান হয়েছে যে কী ভাবে একজন ৩০ বছর বয়সী একজন লোক একটি ধর্মীয় মেলায় কয়েকজন মানুষের ভুল পরামর্শে পুণ্যলাভের লোভে একটি ছাগলকে বলি দেয়। মারাঠি ভাষায় ছাগলকে ইদাক বলা হয়।

কান চলচিত্র উৎসবে যে তিনটি মারাঠি ছবি দেখানো হয় সেগুলির মধ্যে ইদাক অন্যতম।

সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করার আগে বোরহাদে মুম্বাই ইউনিভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক করে উইপ্রো টেকনোলজিএসে কর্মরত ছিলেন।

mailtoday_051018083444.jpgছবি সৌজন্যে: মেল টুডে

সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করার আগে বোরহাদে মুম্বাই ইউনিভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক করে উইপ্রো টেকনোলজিএসে কর্মরত ছিলেন। বিখ্যাত পরিচালক ও চলচিত্রগ্রাহক রাজীব মেননের প্রশিক্ষণ পেয়ে চেন্নাইয়ের মিডস্ক্রিন ফিল্ম ইনস্টিটিউট (এমএফআই) থেকে একটি স্বল্পদৈঘ্যের কোর্স করে বোরহাদে ২০১২ সালে 'আমির' ছবিটির পরিচালক আলফোনসে রায়ের সহায়ক চলচিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন।

সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করার আগে বোরহাদে মুম্বাই ইউনিভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক করে উইপ্রো টেকনোলজিএসে কর্মরত ছিলেন। বিখ্যাত পরিচালক ও চলচিত্রগ্রাহক রাজীব মেননের প্রশিক্ষণ পেয়ে চেন্নাইয়ের মিডস্ক্রিন ফিল্ম ইনস্টিটিউট (এমএফআই) থেকে একটি স্বল্পদৈঘ্যের কোর্স করে বোরহাদে ২০১২ সালে 'আমির' ছবিটির পরিচালক আলফোনসে রায়ের সহায়ক চলচিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন। ২০১০ সাল থেকে কয়েকটি কর্পোরেট ছবির শুটিং দিয়ে তিনি স্বতন্ত্রভাবে কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি চলতে থাকে লেখালেখির কাজ ও নির্দেশনা। ২০১২ সালে তিনি 'ভোপাল ডায়েরিজ'-পরিচালনা করেন। ছবিটি অজস্ৰ পুরুষ্কার পায়। ছবিটি বহু আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসবেও দেখানো হয়।

যদিও বোরহাদে মনে করেন যে সিনেমাটোগ্রাফির জগৎতে এখনও পুরুষদের রমরমা অনেক বেশি হলেও সময় যত পাল্টাচ্ছে মহিলারাও কিন্তু নিজেদের জমিটা বেশ ভালোভাবেই তৈরি করতে পারছেন। কিন্তু আজ থেকে ১১ বছর আগে তিনি যখন কাজ শুরুকরেন তখন মহিলাদের জন্য এতটা অনুকূল পরিস্তিতি ছিল না। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় সিনেমাটোগ্রাফির জগতে লিঙ্গ বৈষম্য অনেক অংশে মুছে গেছে।" ২০১৭ সালে যে ইন্ডিয়ান উওমেন সিনেমাটোগ্রাফেরস কালেকটিভ বলে যে প্রতিষ্ঠানটি শুরু হয়েছিল তার সদস্য হলেন বোরহাদে।

এই মুহূর্তে সিনেমাটোগ্রাফি ও এর সঙ্গে জড়িত জগতের সঙ্গে প্রায় ৮০ জন মতো মহিলা যুক্ত আছেন। অদূর ভবিষতে এই কাজে আরও অনেক মহিলা যোগ দেবেন। "আইডাবলুসিসি-তে আমরা দেশের বিভিন্ন মিডিয়া প্রতিষ্ঠান থেকে প্রচুর তরুণীরা এই কাজ ও কাজের দুনিয়া সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে চায়। আর এত থেকেই মনে হয় যে অদূর ভবিষতে আরও অনেক মহিলারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হবে। তাই খুব শিগগিরই আমাদের কাজের জায়গায় আমরা একটা লিঙ্গ বৈষম্য দেখতে পাবো," তিনি জানান।

কিন্তু বোরহাদে আশা করেন যে এমন একদিন আসবে যখন একজন গুণী মানুষকে সে পুরুষ না নারী তা দিয়ে বিচার না করে শুধুমাত্র মেধার নিরিখেই বিচার করা হবে। আর লিঙ্গ অবৈষম্যের মতো একটা বাজে ধারণাকে একটা পুরোনো মানসিকতা বলে বর্জন করা হবে।”

বোরহাদের পরের ছবিটি 'এক নির্ণয়'-এর পরিচালনা করবেন শ্রীরঙ্গ দেশমুখ।

(সৌজন্যে মেল টুডে) মূল লেখাটি ইংরেজিতে পড়ুন 

* আন্না শব্দের অর্থ দাদা

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

SUHANI SINGH SUHANI SINGH @suhani84

The writer is Senior Associate Editor, India Today.

Comment