কুরুমবেড়া: পাষাণ প্রাচীরে ঘেরা অতীত ও ঐতিহ্য
‘কুরুম’ মানে কচ্ছপের খোলের ন্যায় পাথরের প্রাচীর, পাথর ঘেরা স্থানকে বলা হয় ‘কুরুমবেড়া’
- Total Shares
আমরা সবসময় আমাদের অতীত সম্পর্কে আরও জানতে গভীর ভাবে আগ্রহ প্রকাশ করে থাকি। কি ঘটেছিল... কখন... কোথায়... এবং কী ভাবে...? আমাদের আজ নির্মিত হয় গতকাল দ্বারা এবং এটি আগামীকালের পথনির্দেশ করে। ইতিহাস হল আমাদের শিক্ষক, আর এখানেই তার মূল্য। ইতিহাস কখনোই 'বিদায়' বলে না... এটি আমাদের পুরোনো দিনকে 'ফিরে দেখতে' বলে। ইতিহাসের প্রত্যাবর্তন আছে। ইতিহাস ফিরে ফিরে আসে, শুধু তার রূপটুকুই বদলায়। আমরা আমাদের অতীতকে অনুসন্ধান করতে গিয়ে এমনই এক প্রাচীন সেনানিবাসের সন্ধান পেলাম, স্থানটির নাম কুরুমবেড়া।
ইতিহাস
‘কুরুম’ শব্দের অর্থ কচ্ছপের খোলের ন্যায় দুর্ভেদ্য শক্তিশালী পাথরের প্রাচীর। অর্থাৎ পাথরদ্বারা ঘেরা স্থানকে বলা হয় ‘কুরুমবেড়া’। পঞ্চদশ শতাব্দীতে ওড়িশার রাজা কপিলেন্দ্র দেব (১৪৩৪-১৪৬৭) এই সেনানিবাসটি নির্মাণ করেন। উত্তর ভারত থেকে আগত মোগল আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য এই আশ্রয়স্থলটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সেকালে ওড়িশার সীমানা ছিল কপিশা নদী অর্থাৎ আজকের কাঁসাই নদীর দক্ষিণ তীর পর্যন্ত। সুবর্ণরেখা অতিক্রম করে অগ্রবর্তী সেনাবাহিনী সীমান্ত রক্ষার জন্য এই স্থানটিকে উপযুক্ত মনে করেছিল। এটি অপেক্ষাকৃত উচ্চভূমিতে অবস্থিত। তাই বর্ষার সময়ে বন্যার জল সমস্যা সৃষ্টি করে না। এই আশ্রয়স্থলের পশ্চিমদিকের প্রাচীরের গাত্রে উৎকীর্ণ ওড়িয়া লিপি থেকে এই তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।আয়তাকার এই নিবাসটি পূর্ব পশ্চিমে ৩০০ ফুট লম্বা ও উত্তর দক্ষিণে ২২৫ ফুট চওড়া। প্রাচীরের দেওয়াল ১২ ফুট উঁচু ও ৩ ফুট চওড়া। স্থানীয় মাঁকড় পাথর দিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ভিতরের দিকে ৮ ফুট চওড়া খিলানযুক্ত সারিসারি অনেক প্রকোষ্ঠ ‘লহরা’ পদ্ধতিতে দাঁড়িয়ে আছে। দুটি খিলানের মাঝের ছাদের জায়গাটি চারিদিক থেকে পাথর বসিয়ে সাজানো রয়েছে। প্রতিটি প্রকোষ্ঠের কেন্দ্রস্থলে একটি পদ্মফুলের নকশাযুক্ত অলঙ্করণ রয়েছে।
দুর্গের গায়ে ওড়িয়া হরফে ফলক
ওড়িশার হিন্দু রাজারা সেনানিবাস ও জনপদের আশেপাশে মন্দির নির্মাণ করতেন। কুরুমবেড়ার অদূরে কেশিয়াড়িতে অবস্থিত সর্বমঙ্গলা মন্দির ওড়িয়া রাজার কীর্তি। মন্দিরের দেওয়ালে উৎকীর্ণ ওড়িয়া লিপি তার প্রমাণ। তেমনি কুরুমবেড়ার মধ্যবর্তী আয়তাকার ফাঁকা জমির পূর্বভাগে একটি শিবমন্দির নির্মাণ করেছিলেন রাজা কপিলেন্দ্র দেব। শিবমন্দির থাকলেই পাশে একটি জলাশয় থাকবে। এক্ষেত্রেও কুরুমবেড়ার উত্তর পাশে একটি সুবিশাল জলাশয় রয়েছে, যা উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত। প্রত্যেক হিন্দু রাজা জলাশয় খননের ক্ষেত্রে এই নিয়ম অনুসরণ করতেন। এই জলাশয়গুলি অনেকক্ষেত্রে পানীয় জলের চাহিদাও পূরণ করতো। রাজারা পানীয় জলের জন্য জলাশয় খননকে পুণ্যকর্ম বলে বিবেচনা করতেন। কুরুমবেড়া এলাকার মধ্যে থাকা শিবের নাম ছিল গগনেশ্বর। মোগল আক্রমনের সময় মন্দিরের পূজকগণ বিগ্রহটিকে কুঁয়োর মধ্যে ফেলে চলে যান। পরবর্তী কালে গ্রামের অধিবাসীরা বিগ্রহটিকে উদ্ধার করে গ্রামের অভ্যন্তরে স্থাপন করেন। বিগ্রহের নামেই গ্রামের নাম গগনেশ্বর।
সাধারনভাবে পঞ্চদশ শতকে শীতের শেষ থেকে বর্ষা শুরু হওয়ার পূর্ব সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহ হতো। কৃষকদের ঘরে ফসল ওঠার পর তার দখল নিতেই মোঘল ও পাঠান সৈন্যেরা এই এলাকা দিয়ে যাতায়াত করতো। আর বাকি সময়ে কুরুমবেড়ায় আশ্রয় নিতেন তীর্থযাত্রী ও সন্ন্যাসীর দল। ষোড়শ শতকের গোড়া থেকে নারায়নগড়, দাঁতন ও জলেশ্বর হয়ে পুরী যাওয়ার পথটি জনপ্রিয় হওয়ায় কুরুমবেড়া লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যায়। তাই ১৫৩৩ খ্রীষ্টাব্দে চৈতন্যদেবের মৃত্যুর ১৫ বছর পরে রচিত ‘চৈতন্যভাগবত’ গ্রন্থে নীলাচল যাত্রাপথে কুরুমবেড়ার উল্লেখ পাওয়া যায় না।
১৬৯১ খ্রীষ্টাব্দে মোঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলে জনৈক সেনাপতি তহির খাঁ কুরুমবেড়া দখল করেন। বিজয়ী সেনাপতি নিজের ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য আশ্রয়স্থলের মধ্যে থাকা মন্দিরটি ধ্বংস করেন। বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরটির ভিত্তিভূমিটি অক্ষত রয়েছে, যা দেখে মন্দিরটি আয়তন সম্পর্কে অনুমান করা যায়। সৈন্যনিবাসটির মধ্যবর্তী প্রান্তরের পশ্চিমাংশে মন্দিরের ভেঙে ফেলা পাথর দিয়ে ঠিক মন্দিরের বিপরীত দিকে একটি সুদৃশ্য মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। নির্মিত মসজিদটির তিনটি গম্বুজ। যা ইসলামিক স্থাপত্যের ক্ষেত্রে একটি বৈচিত্রপূর্ণ উদাহরণ। সেনাপতি তহির খাঁ এই আশ্রয়স্থল কে দুর্গে পরিণত করেন। মোঘল সাম্রাজ্যের পতনের পর মারাঠা দস্যুরা কুরুমবেড়া দখল করে নেয়। ১৭৫১ খ্রীষ্টাব্দে আলীবর্দী খাঁয়ের সঙ্গে মারাঠাদের সন্ধি চুক্তির পর এই এলাকা পুরোপুরি মারাঠাদের নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধে পরাজয়ের আগে পর্যন্ত এই এলাকায় মারাঠাদের নিয়ন্ত্রন বজায় ছিল। ১৭৯০ খ্রীষ্টাব্দে নারায়নগড় থেকে পুরী পর্যন্ত পথের সংস্কার করেন ইন্দোরের রানী অহল্যাবাঈ হোলকার। ১৮২৫ খ্রীষ্টাব্দে ইংরেজরা এই পথের নামকরণ করেন ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোড। উনবিংশ শতকের শেষে পুরী পর্যন্ত রেললাইন চালু হয়ে যাওয়ার পর কুরুমবেড়া পরিত্যক্ত হয়ে যায়। সুবর্ণরেখার উত্তর তীর সংলগ্ন দাঁতনগামী যে পথের পাশে কুরুমবেড়া অবস্থিত, সেই পথে তৎকালীন পথিকদের যাতায়াত সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।
কুরুমবেড়া দুর্গটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ি ব্লকের অন্তর্গত গগনেশ্বর গ্রামে অবস্থিত
মোঘল আক্রমন রোধ করার জন্য ত্রয়োদশ শতকে ওড়িয়া রাজারা সুবর্ণরেখার পশ্চিম পাড়ে প্রথমে রাইবনিয়া ও পরে চন্দ্ররেখা এবং দোলগ্রামে দুর্গ নির্মাণ করেন। সুবর্ণরেখা অতিক্রম করে কুরুমবেড়া ছাড়া পূর্ব পাড়ে আর কোথাও সেনানিবাস নির্মাণ করা হয়নি। মোঘল আমলে কেশিয়াড়ি এলাকা ছিল বানিজ্য কেন্দ্র। কুরুমবেড়া দুর্গ থেকে বানিজ্যকেন্দ্রকে নিরাপত্তা দেওয়া হতো।
স্বাধীনতা পরবর্তী কালে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ কুরুমবেড়া দুর্গটিকে জাতীয় সংরক্ষিত সৌধের মর্যাদা প্রদান করে। বর্তমানে আয়তাকার সেনানিবাসের সব কয়টি দরজা বন্ধ করে উত্তর দিকের দরজাটি খোলা রাখা হয়েছে পর্যটকদের প্রবেশের জন্য।
কুরুমবেড়ার ঐতিহ্য বহু মানুষের অজানা, যেখানে ইতিহাসকে নতুন ভাবে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ রয়েছে
যাত্রাপথের বিবরণ
কুরুমবেড়া দুর্গটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশিয়াড়ি ব্লকের অন্তর্গত গগনেশ্বর গ্রামে অবস্থিত। কি ভাবে পৌঁছবেন কুরুমবেড়াতে? ভাবছেন তো? কলকাতার খুব কাছেই তো কুরুমবেড়া। কলকাতা থেকে সড়ক পথে অতি সহজেই পৌঁছানো যায় কুরুমবেড়া। বিদ্যাসাগর সেতু থেকে কুরুমবেড়ার দূরত্ব প্রায় ১৬৫ কিলোমিটার অর্থাৎ সম্পূর্ণ ভাবে আপনার নাগালের মধ্যে। বিদ্যাসাগর সেতু হয়ে প্রবেশ করতে হবে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বামদিকে মোড় নিয়ে ৬ নং জাতীয় সড়কে প্রবেশ করতে হবে। যাত্রাপথে ধুলাগড়, উলুবেড়িয়া, কোলাঘাট, দেউলিয়া, মেছোগ্রাম, ডেবরা পার হয়ে কিছু দূর অতিক্রম করার পর মাদপুরের কাছে ৬ নং জাতীয় সড়ক দু-ভাগে বিভক্ত হয়েছে। প্রথমটি উড়ালপুলের উপর দিয়ে খড়গপুর হয়ে মুম্বাইয়ের দিকে গিয়েছে। অন্যটি বামদিকে বেঁকে গিয়ে ৬০নং জাতীয় সড়ক বা এশিয়ান হাইওয়ে ৪৫-এ গিয়ে মিশেছে। এই পথ ধরে ৪২ কিলোমিটার অতিক্রম করলেই পৌঁছানো যাবে বেলদা শহরে। বেলদা থেকে ডানদিকে কেশিয়াড়ি যাওয়ার রাস্তায় ৫ কিলোমিটার গেলেই পড়বে কুকাই বাসস্ট্যান্ড। কুকাই থেকে বামদিকে লাল মাটির রাস্তা ধরে ৩ কিলোমিটার এগোলেই কুরুমবেড়া দুর্গ। এছাড়াও অন্য একটি পথেও কুরুমবেড়া পৌঁছানো যায়। খড়গপুর শহর থেকে খড়গপুর আই. আই. টি. হয়ে কেশিয়াড়ি ৩১ কিলোমিটার। কেশিয়াড়ি থেকে বেলদাগামী পথে ৪ কিলোমিটার গেলেই কুকাই বাসস্ট্যান্ড। কুকাই থেকে বামদিকে লাল মাটির রাস্তা ধরে ৩ কিলোমিটার এগোলেই কুরুমবেড়া দুর্গ।
ইতিহাসের প্রয়োজনীয়তা আছে কি নেই এ নিয়ে নানান বিতর্ক রয়েছে
শুধুমাত্র সড়ক নয় কলকাতা (হাওড়া স্টেশন) থেকে রেলগাড়ির(ট্রেন)মাধ্যমে পৌঁছানো যাবে মোগলমারিতে। হাওড়া স্টেশনের নতুন প্ল্যাটফর্ম থেকে সকাল ৬.০০টায় ছাড়ে ট্রেন নং ১২৮২১ হাওড়া পুরী ধৌলি এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটি ধরে খড়গপুর অতিক্রম করে নামতে হবে বেলদা (সকাল ৮টা ১৫মি.)স্টেশনে। বেলদা থেকে নিত্য যাতায়াতের বাস বা গাড়ী ভাড়া করে কুরুমবেড়া ঘুরে আসা যায়। এছাড়াও হাওড়া থেকে যে কোন ট্রেনে খড়গপুর স্টেশনে নেমে খড়গপুর শহর থেকে উপরে বর্ণিত পথে নিত্য যাতায়াতের বাস বা গাড়ী ভাড়া করেও কুরুমবেড়া দেখে নেওয়া যায়।
কুরুমবেড়া পরিদর্শন করে পাশাপাশি কয়েকটি স্থানও (মোগলমারি বৌদ্ধ মহাবিহার, দাঁতন, শরশঙ্কা দিঘি, সুবর্ণরেখা নদীর মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মনোহরপুর রাজবাড়ী, কাকরাজিত প্রভৃতি) পরিদর্শন করে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। আর একই দিনে ফিরে যেতে চাইলে ঠিক বেলদা স্টেশনে বিকাল ৫টা ২৫ মিনিটে ট্রেন নং ১২৮২২ পুরী হাওড়া ধৌলি এক্সপ্রেসে চাপলেই রাত্রি ৮টা ১৫মিনিটে হাওড়া স্টেশন।
দেশ বা বিদেশের উৎসাহী পর্যটকরা কুরুমবেড়া আসতে চাইলে প্রথমে নামতে হবে কলকাতা নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। তারপর উপরে বর্ণিত যে কোন একটি পরিষেবা গ্রহণ করলেই পৌঁছানো যাবে কুরুমবেড়া। পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য বেলদা বা খড়গপুর শহরে হোটলের ব্যবস্থা রয়েছে। আরেকটি দিন সময় নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মন্দিরময় পাথরা এবং ঝাড়গ্রাম জেলার ঐতিহ্যও পরিদর্শন করে নিতে পারেন।
এখানে একদিন যেমন শিবের পূজার মন্ত্র উচ্চারিত হয়েছে,তেমনি একসময় নামাজের আজানও প্রতিধ্বনিত হয়েছে
উপসংহার কুরুমবেড়ার ঐতিহ্য বহু মানুষের অজানা, যেখানে ইতিহাসকে নতুন ভাবে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ রয়েছে। ইতিহাসের প্রয়োজনীয়তা আছে কি নেই এ নিয়ে নানান বিতর্ক রয়েছে। তবে ইতিহাসকে না ভালবাসলে আমাদের অতীত, আমাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক তথ্যই অজানা থেকে যাবে। কুরুমবেড়া এমন একটি প্রাচীন সেনানিবাস যেখানে হিন্দু ও ইসলামিক স্থাপত্যের চিহ্ন এখনো বর্তমান। কালের নিয়মে অনেক কিছুই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে, কিন্তু যে টুকু অক্ষত রয়েছে, তা দেখে আমরা আমাদের অতীতকে নতুন করে মূল্যায়ন করতে পারি। এখানে একদিন যেমন শিবের পূজার মন্ত্র উচ্চারিত হয়েছে, তেমনি একসময় নামাজের আজানও প্রতিধ্বনিত হয়েছে। স্তব্বধবাক কুরুমবেড়া গত পাঁচশ বছর ধরে নানা বিবর্তনের সাক্ষী। ওড়িয়া লিপির কল্যাণে কিছু ইতিহাস জানা গেলেও আরো অনেক কিছুই অজানা থেকে গেছে। সৈন্য ও সন্ন্যাসীদের আশ্রয়স্থল ঘিরে অনেক লোককথা প্রচলিত। পাষানগাত্রে চাপা পড়ে আছে অনেক জয়ের উল্লাস ও পরাজয়ের গ্লানি, তবুও কালের করাল গ্রাস সহ্য করে আজও টিকে আছে ‘কুরুমবেড়া’।

