এই উপন্যাসগুলো পড়লে বোঝা যাবে মহিলারা কেন ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন

#মি-টু# টাইমসআপ-এর মতো ক্যাম্পেনগুলোও দেখলাম, ক্ষোভটা এখন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে

 |  3-minute read |   09-04-2018
  • Total Shares

'গন গার্ল' ছবিটিতে মহিলা চরিত্র যে সব রাগের শব্দ ব্যবহার করে নিজের রাগ প্রকাশ করেছিলেন তা আমাদের জানা। জিলিয়ান ফ্লাইনের স্মরণীয় উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এই ছবিটিতে দেখান হয় যে ঠিক কী ভাবে বিয়র পরে একটা সুন্দর সম্পর্ক ক্রমশ নষ্ট হতে থাকে।

সম্প্রতি আমরা #মি-টু # এবং টাইমসআপ-এর মতো ক্যাম্পেনগুলোও দেখলাম। ক্ষোভটা এখন সর্বত্র- সিনেমায়, টেলিভিশনে ও নানা বিনোদন মাধ্যমে। নারীরা প্রচণ্ড রেগে আছেন। 'হ্যান্ডমেডস টেল টু বিগ লিটল লাইজ' থেকে শুরু করে সবাই বলছেন, অনেক হয়েছে আর সহ্য করবেন না তাঁরা।

খুব নির্ভুল ভাবে ও কিছুটা মজার ছলেই মহিলাদের এই ক্ষোভ তুলে ধরেছে তিনটে নতুন বই । এই তিনটে বই একে অপরের থেকে একদম আলাদা। লেইলা স্লিমানির 'লালাবাই' বইটিতে একজন মহিলার কথা বলা হয়েছে যিনি একটি ফরাসি পরিবারের দেখাশোনা করেন। দম্পতি ও তাঁদের দুটি সন্তানকে খুশি মনেই সঙ্গে দেখভাল করেন এই মহিলা।

সেবিকা বিধবা লুইসি খুব শান্ত প্রকৃতির মহিলা ছিলেন তাছাড়া তিনি ছিলেন খুব পরিষ্কারপরিচন্নও এবং বাচ্চাদের খুব ভালোবাসতেন। প্রয়োজনে তিনি বাড়ির সবার জন্য রান্নাবান্নাও করতেন। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল তবে লুইসি পরিবারের সবার সেবাযত্ন করা সত্ত্বেও কেউ কিন্তু লুইসির একেবারেই খেয়াল রাখত না। ব্যাপারটা নিয়ে ধীরে ধীরে লুইসির মনে ক্ষোভ জমা হতে থাকে এবং তিনি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন। তিনি এমন কাণ্ড ঘটান যে যে পুরো পরিবারটি ধ্বংস হয়ে যায়।

novel_body_040918071220.jpg

এম্মা গ্লাসের 'পিচ' একটি সাহসী বই। গল্পটা বেশ ছোট হলেও বইটা পাঠককে আকর্ষণ করবে। তাই বইটির সম্পর্কে বেশি কিছু না বলে শুধু এটুকুই বলব যে এই বইটি একজন অল্প বয়সী নারীর সম্বন্ধে যাঁকে বীভৎস ভাবে ধর্ষণ করা হয়। অনেক চেষ্টা করা করেও মানসিক যন্ত্রণা থেকে কোনও ভাবেই বেরোতে পারছিল না মেয়েটি। গল্পে লেখিকা কখনও তাঁকে অনুসরণ করা হয়েছে, কখনও বা তাঁর উপর নজরদারি করা হয়েছে, আবার কখনও তাঁকে নানা পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মেয়েটি প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেই নিজের সমস্যাগুলোকে মোকাবিলা করার পথ খুঁজে নেয়।

গ্লাসের হিরোইনের মা-বাবা নিজেেদর প্রণয় ও তাঁদের সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে সর্বক্ষণ এতটাই মগ্ন হয়ে থাকতেন যে বড় মেয়ের কষ্টের দিকে কোনও রকম খেয়াল ছিল না। যেহেতু বইটি আমার এখনও পড়া হয়নি তাই বইটিতে ধর্ষণ এবং তার ফলে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে এবং তার যে পীড়াদায়ক বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, সেটা জানা নেই।

'হাস আ বায় বেবি: দা ক্রেডল উইল ফল'-লেখা এই থ্রিলারটির লেখক দীপাঞ্জন পাল। আমার অতি প্রিয় পুরোনোপন্থী মহিলা পুলিশ রেশমি গাবুজিকে সম্ভবত কোনও সিরিজে পাওয়া যাবে। গল্পে আরও একজন মহিলা ডাক্তার রয়েছেন, যাঁকে সবাই পচ্ছন্দ করেন এবং শ্রদ্ধাও করেন, কিন্তু তিনি অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের হবু সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ করে দেন এবং কন্যা সন্তান জন্মাবে জানলে পারলে সেই হবু মায়েদের গর্ভপাত করিয়ে দিতেন।

novel_body2_040918071233.jpg

একজন মহিলা যিনি মহিলাদের অধিকার নিয়ে সরব হয়েছেন, এ হেন মহিলার এই ধরণের কার্যকলাপ অবৈধ ও অনৈতিক। অবশেষে দক্ষিণ মুম্বাইয়ের একজন ধনী মহিলা, যাঁকে এই মহিলা ডাক্তার সারিয়ে তুলে ছিলেন, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এই ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশ কমিশনারের কোনওরকম হেলদোল তো ছিলই না বরং তিনি তখন ব্যস্ত ছিলেন একজন ধনী রিয়েল এস্টেট সংস্থার মালিকের সঙ্গে গল্ফ খেলায়। ধর্ষণ, সত্য গোপন, আত্মহত্যা এবং চূড়ান্ত পরিণতির মধ্য দিয়ে গল্পটি একটা অন্য মাত্রা পেয়েছে।

তাহলে কী গল্পের চরিত্র নন্দিতা রায় শয়তান, না কি তিনি ত্রাতা? এবং আমুদে পুলিশ কর্মী রেশমি গাবুজি, যিনি মামলার তদন্তের জন্য সন্দেহভাজনদের জেরা করার চেয়ে অফিসে বসে দরকারি কাগজপত্র দেখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তাঁর সব অনুমান ভুল? যদিও বইটি পড়লেই সেটা আমরা জানতে পারব, কিন্তু তবুও তাঁর মধ্যে যে রাগের আগুনটা ধিক ধিক করে জ্বলছিল, সেটা তিনি ঠিক যে ভাবে কাজে লাগিয়েছেন, সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়।

নারীরা কেন ক্ষুব্ধ হন সেই বিষয় নিয়ে যদি এখনও কারও মনে কোনও সন্দেহ থাকে তা হলে তাঁরা এই বইগুলো খুব তাড়াতাড়ি পড়ে ফেলুন।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

KAVEREE BAMZAI
Comment