মৃত্যুর পরেও কিছু একটা আছে, তা নিয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে গবেষণা জরুরি

বিষয়টি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক বহুদিনের, তাই বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে

 |  3-minute read |   29-03-2018
  • Total Shares

কলকাতা রাত জাগা ঝাঁ চকচকে আলোয় পরিপূর্ণ এক শহর যেখানে রাত তো হয় কিন্তু অন্ধকারের গাঢ় কালো ছায়া এই মহানগরীকে ঢেকে দিতে পারে না নিজের কালিমায়| সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় কোথাও সম্পর্ক ডানা মেলে উড়ছে তো কোথাও ধর্ষণ-খুন-আত্মহত্যার মতো জীর্ণ পরিস্থিতি মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে অনেকটা বিষণ্ণতায় ঢেকে দিচ্ছে। কিন্তু যাঁরা এই পরিস্থিতির শিকার, তাঁদের মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা তাদের জীবনের চাহিদার অপূর্ণতা... তাঁদের মৃত্যুর পর সেগুলোর কি কোনও অস্তিত্ব থাকে না? নাকি সত্যিই থেকে যায়? যেটা নিয়ে আমরা এই বাস্তবতার জীবনে ভাববার সময় পাই না বা ভাববার সাহস করে উঠতে পারি না অনেকেই।

আমরা এই অনেকের থেকে নিজেদের একটু আলাদা করে মৃত্যুর পরের জগৎ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছি। কিন্তু শুধু ভাবলেই তো হবে না, দেখতেও হবে আমাদের ভাবনা কতটা বাস্তব। এই জেদটাকেই মাথায় নিয়ে আমরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি তে গবেষণা করতে নেমে পড়ি। আমরা একটি দল গঠন করি যার নাম ডিটেক্টিভস অফ সুপারন্যাচারাল। দলের সদস্যদের কেউ নিজেদের জীবনে চাকরিরত আবার কারও প্যাশন অভিনয় করা, কিন্তু লক্ষ্য সবার একটাই - অজানাকে জানা আর সবার সামনে সত্যিটা নিয়ে আসা।

আমি ছাড়া এই দলের আর চার জন সদস্য আছেন - দেবরাজ সান্যাল, শুভজিৎ সাহা, অনিন্দম ঘোষাল ও সুমন মিত্র। আমরা মনে করি যে, কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যু যেমন খুন, দুর্ঘটনা বা আত্মহত্যার সময় আমাদের মস্তিস্কের অ্যাকটিভিটি খুব হাই থাকে। সেই জন্য মস্তিস্ক খুব হাইলি চার্জড থাকে আর হঠাৎ মৃত্যুর পর এই চার্জড পার্টিক্যালগুলো ডিফিউস না হয়ে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডে ইমপ্ল্যান্ট হয়ে যায় আর সেই মেমরি বা ইমোশনটা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডে থেকে যায় যাকে আমরা স্পিরিট বলি।

এই হলোগ্রাফিক কনসাসনেসটা যখন জীবিত মানুষের সান্নিধ্যে আসতে চায় বা ইন্টার্যাক্ট করতে চায়, তখন পারিপার্শ্বিক অনেক বদল হয়, যেমন EMF ফ্লাকচুয়েশন, টেম্পারেচার ড্রপ, গন্, ছায়া, ইনফ্রা সাউন্ড প্রভৃতি যেটা আমরা আমাদের যন্ত্রপাতি দিয়ে ধরার চেষ্টা করি।

body_032918070900.jpgবৈজ্ঞানিকভাবে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে

আমরা কলকাতার বহু জায়গায় ও কলকাতার বাইরেও অনেক জায়গায় গবেষণা করে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।

বেহালাতে একবার গবেষণা করতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের ক্যামেরায় এক ছায়া মূর্তি ধরা পড়ে আবার ফুলবাগানের এক বাড়িতে যেখানে সবাই যেতে ভয় পায় সেখানে গিয়ে আমাদের ক্যামেরাম্যান ঋত্বিক দত্ত ঘটনাস্থেলই অজ্ঞান হয়ে যায়। বারাসতের সেই বাড়িটাতেও আমরা একটা আওয়াজ শুনতে পাই যেটা কম্পিউটারে আপলোড করে সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করেছিলাম। বিশ্লেষণে মনে হয়েছিল যে কেউ বলছে "আমাকে মুক্তি দাও।"

এ ছাড়াও আমরা ডাউহিলের ডেড রোডে গবেষণার সময় শুভজিৎ সাহার পিঠে আঁচড়ের দাগ পাই আর সুইসাইড পয়েন্টে সুমন মিত্রর হাত ভেঙে যায়, সুমন বলেছিল ওর মনে হয়েছিল কেউ ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। রায়পুর রাজবাড়িতেও আমাদের অভিযান চলে যেখানে সংবাদমাধ্যমও আমাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিল।

এক ভূতচতুর্দশীর রাতে উল্টোডাঙার চটকলে আমরা অভিযান করি। সত্যি এগুলো নিয়ে ভাবলে আমার কানে যেন ভেসে আসছে হেস্টিংস হাউসের রাতের অন্ধকারের ঘোড়ার পায়ের ঠক ঠক আওয়াজ বা ন্যাশনাল লাইব্রেরির বড় বিল্ডিংয়ে বই এর সারি পড়ে যাওয়ার শব্দ আবার কখনও বা ভেসে আসছে আকাশবাণীর সুর আর চোখে ভাসছে রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশন এর অগুণতি ছায়া। 

বিষয়টি নিয়ে তর্ক বিতর্ক বহুদিনের। আর তাই তো বৈজ্ঞানিক ভাবে এ নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। গবেষণা এখনও চলছে। কিন্তু এখনও অবধি যা দেখলাম বা অনুভব করলাম তাতে কিন্তু বিষয়টি ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়া সহজ নয়।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment