সংবাদপত্রের খবরের শিরোনাম নয়, এগুলো রাজনৈতিক দলের বিজ্ঞাপন
দাবি, অসমের বেশকিছু সংবাদপত্রে শিরোনাম 'আপার অসমে সবকটি আসন বিজেপির'
- Total Shares
প্রতিবেশী রাজ্য অসমেও বিধানসভা নির্বাচন চলছে। তা নিয়েও উৎসাহের অন্ত নেই বঙ্গ ভোটারদের। সেই রাজ্যের নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও পোস্ট খুবই দ্রুতই বাংলা ভাষাতেও ভাইরাল হয়ে পড়ছে।
'অমিত নাথ' নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, "এখন থেকে আর ভোট গণনা না করলেই হবে। কারণ এই দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন সংবাদপত্র বিভাগের কর্মকর্তারা।"

যে ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে সেই ছবিতে অসমের বেশ কিছু সংবাদপত্রের কাটিং দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এবং, সবকটি কাগজে একটি কমন শিরোনাম ছাপা হয়েছে যার বাংলার তর্জমা, "আপার অসমে সবকটি আসন দখল করতে চলেছে বিজেপি।"
এখানে পোস্টটির আর্কাইভ দেখতে পাবেন।
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে এই পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর। কারণ, এগুলোতে কোনোটাই সংবাদপত্রগুলোর প্রকাশিত খবর নয়। এগুলো বিজেপির বিজ্ঞাপন যা সংবাদপত্রগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে।
তদন্তে নেমে প্রথমেই আমাদের একটা জিনিস খটকা লাগে। ছবিতে যে কাগজগুলোর কাটিং দেওয়া হয়েছে সবক'টি সংবাদপত্রের শিরোনাম একেবারে এক। বিভিন্ন সংবাদপত্র এক সংবাদ প্রকাশ করতেই পারে কিন্তু সেই খবরের শিরোনামের ভাষা বা শব্দচয়ন একদম এক হওয়া কিন্তু বাস্তবসম্মত নয়।
তাই আমরা প্রথমেই কি ওয়ার্ড সার্চ করে দেখি যে এই এক শিরোনাম নিয়ে কোনও সংবাদমাধ্যমে কোনও খবর প্রকাশিত হয়েছে কিনা। দেখা যাচ্ছে, 'দ্য হিন্দু' পত্রিকা একটি খবর প্রকাশ করেছে।
সেখানে বলা হচ্ছে, এইগুলো কোনও প্রকাশিত খবর নয়। বিজেপির বিজ্ঞাপন যা সংবাদপত্রগুলোতে প্রকাশ করা হয়েছিল। তাই, অসম কংগ্রেসের আইনি সেল থেকে অসম নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এমনকি, জাতীয় কংগ্রেসে তরফ থেকেও জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে আরও একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

বিষয়টিকে আরও নিশ্চিত করার জন্যে আমরা অসম কগ্রেসের আইনি সেলের চেয়ারম্যান নিরন ভোরার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি জানান, "বিজেপির তরফ থেকে এই বিজ্ঞাপনটি অসমের বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এই বিজ্ঞাপনটি দেখে মনে হচ্ছে এক্সিট পোল। আপার অসমে ভোটপর্ব প্রথম দফায় শেষ হয়ে গিয়েছে। এখনও আরও দুটি দফার ভোট বাকি রয়েছে। এই ধরণের বিজ্ঞাপন বাকি দুটি দফার নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি এবং দিসপুর থানাতেও একটি মামলা দায়ের করেছি। "
এর পরে আমরা আজতক-এর গৌহাটির প্রতিনিধি হেমন্ত কুমার নাথের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি মূল সংবাদপত্রগুলোর ছবি তুলে পাঠান। সেই ছবি থেকে পরিষ্কার যে এগুলো সংবাদপত্রের খবর নয়, বিজ্ঞাপন।

এটা সংবাদপত্রের প্রতিবেদন নয়, বিজেপির বিজ্ঞাপন, সেই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত। কিন্তু বিজ্ঞাপনটি বিজেপি দলের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে কিংবা কোনও ব্যক্তি বিশেষের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে তা আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি।
সুতরাং, বলা যেতেই পারে এই ফেসবুক পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর।
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE
The number of crows determines the intensity of the lie.
- 1 Crow: Half True
- 2 Crows: Mostly lies
- 3 Crows: Absolutely false

