না, ইন্দিরা গান্ধী ও রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর সময়ে জেড প্লাস নিরাপত্তা ছিল না
দাবি, জেড প্লাস নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও প্রাণ হারাতে হয়েছিল ইন্দিরা ও রাজীবকে
- Total Shares
নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আক্রমণের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে বিভিন্ন ধরণের দাবি করা হচ্ছে।
নন্দীগ্রামের ঘটনাটির ঠিক দু'দিন বাদেই 'আমরা TMC' নামের এক ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে, "জেড প্লাস নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও আমরা ইন্দিরা গান্ধী ও রাজীব গান্ধীকে হারিয়েছিলাম। দেশে বেঈমানের অভাব নেই।"

এখানে পোস্টটির আর্কাইভ দেখতে পাবেন।
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে এই পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর।
তদন্তে নেমে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ইন্দিরা গান্ধী নিজের দেহরক্ষীর গুলিতে ৩১শে অক্টোবর, ১৯৮৪ সালে নিহত হন। তখন তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
সেই সময়ে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকত দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সিকিউরিটি ডিস্ট্রিক্ট-এর কাছে যার নেতৃত্বে থাকতেন একজন ডিসিপি পদের অফিসার। এছাড়া, আইবি-র একটি স্পেশাল টাস্ক ফোর্সও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োগ করা হয়েছিল।
ইকনোমিক টাইমস-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৯৮৫ সালের এপ্রিল মাসে, ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পরে, স্পেশাল সিকিউরিটি গ্রূপ-এর সৃষ্টি করা হয় এবং দেশের ভিআইপি পি ও ভিভিআইপি-দের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রকারভেদ করা হয়। বলা যেতে পারে, জেড প্লাস নিরাপত্তার প্রচলন সেই সময়তেই। কিন্তু সেই সময়ে এই এসপিজি নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুধুমাত্র দেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্য সীমিত ছিল।
১৯৮৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে হেরে যান রাজীব গান্ধী। আর, তাই তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে সেই সময়ে এসপিজি-কে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২১শে মে, ১৯৯১ সালে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুরে যখন বিস্ফোরণে মারা যান রাজীব গান্ধী তখন তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তামিলনাড়ু রাজ্য পুলিশ।

খবরের প্রকাশ, সেদিন বিশাখাপত্তনম থেকে চেন্নাই পৌছিয়েছিলেন রাজীব গান্ধী। বিশাখাপত্তনমে বিমান ধরতে যাওয়ার সময়ে তিনি জানতে পারেন যে তাঁর বিমানে যান্ত্রিক গোলোযোগ রয়েছে। সেই সময়ে তিনি বিশাখাপত্তনমে সরকারি গেস্ট হাউসে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু এর কিছুক্ষন পরে বিমান সংস্থার কাছ থেকে তিনি খবর পান যে যান্ত্রিক গোলযোগ ঠিক হয়ে গিয়েছে। রাজীব গান্ধী আবার গাড়ি ঘুরিয়ে বিমানবন্দরে ফেরেন। সে সময় অন্য গাড়িতে তাঁর ব্যক্তিগত কিছু নিরাপত্তা রক্ষী ছিল। তাঁদের ছাড়াই তিনি চেন্নাইয়ের অভিমুখে যাত্রা করেছিলেন।
বিষয়টি, আরও নিশ্চিত করতে আমরা এনএসজি-র প্রাক্তন কমান্ডার দীপাঞ্জন চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করি। নব্বইয়ের দশকে বহু প্রথম শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। দীপাঞ্জন চক্রবর্তীও নিশ্চিত করেন যে রাজীব ও ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর সময়ে তাঁদের জন্য জেড প্লাস নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। "দেশের মাত্র দু'জন রাজনৈতিক নেতা এনএসজি-র জেড প্লাস নিরাপত্তা থাকার সময়ে মৃত্য বরণ করেছেন। একজন রাজেশ পাইলট। অন্যজন, পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিং," দীপাঞ্জন চক্রবর্তী ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছেন।
সুতারং, বলা যেতেই পারে ফেসবুকের পোস্টের এই দাবির অধিকাংশটাই ভুয়ো।
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE
The number of crows determines the intensity of the lie.
- 1 Crow: Half True
- 2 Crows: Mostly lies
- 3 Crows: Absolutely false

