নানুরের ছবি পোস্ট করে সাইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের কথা বলা হচ্ছে ফেসবুকে
সাইবাড়ি হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ফেসবুকে
- Total Shares
নির্বাচন আসন্ন। তাই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে নানান ধরণের রাজনৈতিক পোস্ট ভাইরাল হয়েই চলেছে। এরই মধ্যে, অনেকেই আবার এ রাজ্যের পুরোনো রাজনৈতিক ইতিহাসগুলো মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
১৭ই মার্চ, 'সায়ন খান' নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী দুটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, "মনে পড়ে আজ থেকে ঠিক ৫১ বছর আগের কথা। সিপিআইম ওয়েস্টবেঙ্গল, আজ তোদের হার্মাদরা সেই মা-কে ছেলের রক্ত মাখানো ভাত খাইয়েছিল! ১৭ মার্চ, ১৯৭০।"
এই দুটি ছবির মধ্যেই প্রথমটি একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদের স্ক্রিনশট। অন্য ছবিটিতে আমরা একটি বিধ্বংস বাড়ির সামনে একজন মহিলা, একজন লোক ও দুটি কিশোরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পাচ্ছি।

এখানে পোস্টটির আর্কাইভ দেখতে পাবেন।
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে এই পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর। কারণ দ্বিতীয় ছবিটির সঙ্গে সাই বাড়ি হত্যাকাণ্ডের কোনও যোগাযোগ নেই।
তদন্তে নেমে আমরা প্রথমে দেখি যে সাইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ১৭ই মার্চ ১৯৭০ সালে হয়েছিল। জানা যায় সেইদিন সিপিএম-এর একটি মিছিল বেরিয়েছিল। সেই মিছিল থেকে জনাকয়েক লোক আচমকাই হানা দেয় তৎকালীন বর্ধমানের দোর্দন্তপ্রতাপ সাই পরিবারের বাড়িতে। এই ঘটনায় ওই পরিবারের দুই ভাই, মলয় ও প্রণব-কে হত্যা করা হয়। এবং, এর পরে এই দুই পুত্রের রক্ত মাখা ভাত তাঁদের মা-কে খাওয়াতে বাধ্য করা হয়।
এরপর পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূল ছবিটি একটি ওয়েবসাইট খুঁজে পাই।
দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি প্রবন্ধে নানুর হত্যা সম্পর্কে আলোচনার সময়ে এই ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত ছবিটি যে অন্য কোনও সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবির স্ক্রিনশট তাও বলার অপেক্ষা রাখে না।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত এই ছবিটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, "নানুরে তৃণমূল দুষ্কৃতীদের পুড়িয়ে দেওয়া বাড়ি।" সঙ্গে, ফোটোগ্রাফারের নামও দেওয়া হয়েছে।

এই ছবিটিকেই জুম করে ফেসবুক পোস্টে ব্যবহার করে হয়েছে।
বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে আমরা এরপর সেই ফটোগ্রাফার জয়দীপ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি জানান, "ছবিটি আমার তোলা এবং ছবিটি সিপিএম-এর মুখপত্র 'গনশক্তি'-তে প্রকাশিত হয়েছিল। এটা নানুরের থুপসুরা গ্রামের ছবি।"
বিষয়টিকে আরও নিশ্চিত করতে আমরা সেই গ্রামের এক বয়সজ্যেষ্ঠ নাগরিক আনন্দ ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি বিষয়টিকে নিশ্চিত করে জানান, "২০১৩ সালের ছবি এটি। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে বিবাদের জেরে সেদিন এই মহিলা সহ আরও কিছু লোকের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল।"
সুতরাং, বলা যেতেই পারে এই পোস্টের দাবি বিভ্রান্তিকর। কারণ ছবিটির সঙ্গে সাইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের কোনও যোগাযোগ নেই।
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE
The number of crows determines the intensity of the lie.
- 1 Crow: Half True
- 2 Crows: Mostly lies
- 3 Crows: Absolutely false

