প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে থাকা রাহুল গান্ধী সংসদীয় রীতিনীতিতে কতটা দড়?
সংসদের রীতি, নীতি, কার্যপদ্ধতি এবং গাম্ভীর্যের দিক থেকে বারবারই 'কাঠগড়া'য় দাঁড়িয়েছেন
- Total Shares
সংসদীয় গণতন্ত্রে মতপ্রকাশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দু’টি — প্রথম: জনগণের ভোটদান এবং দ্বিতীয়: নির্বাচিত সদস্যদের জন্য সংসদ ভবনের অন্দরমহল। আর ঠিক এই কারণেই এই দু’টো প্রক্রিয়াকেই সম্মনের সর্বোচ্চ আসনে রাখা হয় সংসদীয় গণতন্ত্রে।
বারবার প্রশ্ন উঠেছে যে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধরা সংসদের ভিতরে সংসদীয় রীতিনীতি সঠিক ভাবে পালন করছেন কিনা। বিশেষ করে যবে থেকে সংসদের কার্যপ্রণালী সরাসরি সম্প্রচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তখন থেকে মানুষের মনেও বারবার প্রশ্ন জেগেছে যে, বাস্তবে তাঁরা কাদের নির্বাচিত করছেন এবং কেনই বা করছেন!
#WATCH Moment when Congress MPs threw paper planes towards FM Arun Jaitley while he was speaking during #Rafaledeal debate in Lok Sabha (Source:LS TV) pic.twitter.com/4LuuBIUSPU
— ANI (@ANI) 2 January 2019
প্রত্যেকটি সংসদীয় অধিবেশনের পরে সংবাদমাধ্যমে হিসাব-নিকাশ হয় যে সংসদের কার্যপ্রণালী কত সময়ের জন্য নষ্ট হয়েছে বা কতটা নষ্ট হয়েছে। এটাও আলোচনা হয় যে সংসদে বিতর্কের মান কতটা নিম্নমুখী হচ্ছে। ভূপেশ গুপ্ত, ফিরোজ গান্ধী, ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, অটলবিহারী বাজপেয়ী এমন অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বের নাম আসে বারবার। এমনকি হাল আমলের সৈফুদ্দিন চৌধুরীর নামও এখনও উচ্চারিত হয়।
কিন্তু এখন মান তো দূরের কথা, সাংসদ রাহুল গান্ধীর বদান্যতায় সংসদের ঐতিহ্য এবং গাম্ভীর্য এতটাই তলানিতে এসে ঠেকেছে যে তাঁর সহযোগীরাও চিন্তিত – এই ব্যক্তিকে আগামী দিনে কেমন ভাবে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। সবার প্রথম মানুষ বিরক্ত হয়েছিলেন যখন তিনি সংসদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মস্করা করার চেষ্টা করেছেন এবং একই দিনে তাঁর চোখের অঙ্গভঙ্গি তাঁর চূড়ান্ত সমর্থকদেরও বিস্মিত করেছিল।
সংসদের মধ্যে রাহুল গান্ধীর এই আচরণে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল (ছবি সৌজন্য: লোকসভা টিভি)
এই আচরণের জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও (ছবি সৌজন্য: লোকসভা টিভি)
সেই একই সময়ে, এটাও ঠিক যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাচনভঙ্গীও দেশবাসীর একাংশের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলেছিল। কিন্তু যখন তুলনামূলক আলোচনা হয়েছে তখন সংসদের রীতি, নীতি, কার্যপদ্ধতি এবং গাম্ভীর্যের দিক থেকে বারবারই কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন রাহুল গান্ধী।
একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানো রাফাল বিতর্ক নিয়ে। কোনও গোপন ক্যামেরার ছবি অথবা কোনও অডিয়ো টেপ কোনও ভাবেই বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা ছাড়া আজকার সংবাদমাধ্যমও স্বীকৃতি দেয় না, আদালত তো দেয়ই না। আর এটা তো ছিল সংসদ ভবনের ভিতরে বিতর্কের একটা অংশ।
Goa Minister Vishwajit P Rane writes to Goa CM Manohar Parrikar in regard with the audio tape released by Congress on Rafale, states, "This is a doctored audio & I have never had any discussion on this subject with anyone. there should be a thorough inquiry in this matter" pic.twitter.com/OVHkYOHtfz
— ANI (@ANI) 2 January 2019
The audio clip released by the congress party is a desperate attempt to fabricate facts after their lies were exposed by the recent Supreme Court verdict on Rafale. No such discussion ever came up during Cabinet or any other meeting.
— Manohar Parrikar (@manoharparrikar) 2 January 2019
হতে পারে যেহেতু সংসদের কার্যপ্রণালী সরাসরি সম্প্রচার হয় এবং সাধারণ ভাবে মানুষ সংসদীয় রীতিনীতি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল নন, সে জন্য রাহুল শস্তা রাজনীতি করে নিজের বাজারদর বাড়ানোর চেষ্টা হয়তো করছেন, এতে হয়তো তিনি সফলও হতে পারেন, কিন্তু একটা উৎপটাং অডিয়ো টেপ জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সংসদের ভিতরে চালানোর চেষ্টা করবেন, আর অধ্যক্ষ বসে বসে আঙুল চুষবেন এবং সেটাকেই রাজনৈতিক হাতিয়ার করার চেষ্টা করবেন তাঁর চাটুকারেরা, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
Rahul Gandhi: I asked the Lok Sabha Speaker can I play the tape, Speaker refused to allow me to play it, so there was no question of authenticity of the tape there. Congress has already played it. Also, there might be other tapes as well #RafaleDeal pic.twitter.com/b91QeTgpZ0
— ANI (@ANI) 2 January 2019
যদি রাহুল গান্ধী এটি জেনে করে থাকেন তা হলে তিনি শস্তা রাজনীতি করছেন। আর যদি তিনি না জেনে করে থাকেন তা হলে তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়াই উচিত নয়।
এই বছরের নির্বাচনে মানুষ কাকে সমর্থন করবে তা ভবিষ্যৎ বলবে। কিন্তু যে রাহুল গান্ধী এবং তাঁর চাটুকারের দল অভিযোগ তুলেছেন যে বর্তমান সরকার দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা নষ্ট করছেন তিনি খোদ সংসদের মর্যাদা ধুলোয় মেশাচ্ছেন।
রাজনীতি করা রাহুল গান্ধীর অধিকার, এবং রাজনীতির মধ্য দিয়ে মানুষকে নিজের পক্ষে নিয়ে আসা – এটা যে কোনও রাজনৈতিক দলের কাজের মধ্যে পড়ে। কিন্তু সংসদকে কলুষিত করে মানুষকে মিথ্যা বোঝানো এটা অপরাধ হিসাবে গণ্য হওয়া কাম্য।

