কমল নাথের সংকীর্ণ প্রাদেশিকতা: সরকারি উৎসাহ পেতে মধ্যপ্রদেশের ৭০ শতাংশ কর্মী আবশ্যিক

বিহার-উত্তরপ্রদেশের শ্রমিক আটকাচ্ছেন কমল না, তাঁর নিজের জন্মই তো উত্তরপ্রদেশে

 |  2-minute read |   18-12-2018
  • Total Shares

মধ্যপ্রদেশের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ প্রথম যেদিন তাঁর দফতরে যোগ দিলেন, সেদিনই বিতর্র তৈরি করে ফেললেন।

২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ মকুবের যে প্রতিশ্রুতি ভোটের আগে কংগ্রেস দিয়েছিল, যেটা ভোটের আগে কংগ্রেসের মূল প্রতিশ্রুতি ছিল সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার সময় কমল নাথ ঘোষণা করে দিলেন, শুধুমাত্র তাঁরাই ঋণ মকুবের সুবিধা পাবেন যাঁদের শ্রমিকের অন্তত ৭০ শতাংশ মধ্যপ্রদেশের।

মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে প্রথম সাংবাদিক বৈঠকেই কমল নাথ ঘোষণা করে দেন, “তাঁদের জন্যই আমাদের এই উৎসাহ প্রদান করা হবে যেখানে মধ্যপ্রদেশের ৭০ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বিহার ও উত্তরপ্রদেশ থেকে এখানে লোকে কাজের জন্য আসে, তার ফলে মধ্যপ্রদেশের মানুষ কাজ পান না। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ফাইলে আমি সই করে দিয়েছি।”

প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া ও কৃষকদের হতাশা ছাড়াও শিবরাজ সিং চৌহান সরকারের বিরুদ্ধে আরেকটা বড় ক্ষোভ ছিল কর্মসংস্থান। গত ১৪ বছর ধরে বিজেপি সরকার বছরে মাত্র ১৭,৬০০ করে নতুন কর্মসংস্থান করতে পেরেছে।

কিন্তু যেখানে উৎসাহদানের ক্ষেত্রে কারও যোগ্যতা ও দক্ষতার বদলে বিচার করা হবে তিনি কোথাকার বাসিন্দা এবং এটাই হবে প্রধান বিচার্য – এই ধরনের সিদ্ধান্ত উৎপাদনের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে।

nath-690_12131804002_121818090218.jpgপ্রাদেশিক রাজনৈতিক দলগুলি যে ধরনের রাজনীতিতে অভ্যস্ত সেই ধরনের রাজনীতি করতে দেখা যাচ্ছে কংগ্রেসকে (ছবি:  পিটিআই)

উপযুক্ত পরিকাঠামো দিয়ে কোনও শিল্পকে সহায়তা করার বদলে এবং রাজ্যকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় করে তোলার বদলে কমল নাথ সম্ভবত নিজের রাজ্যে জনপ্রিয় হওয়ার সস্তা রাজনীতির ফাঁদে পা দিচ্ছেন। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো তরুণ প্রজন্মকে দেশের সবচেয়ে পুরোনো রাজনৈতিক দলটির দায়িত্ব না দেওয়ার কারণও সম্ভবত এটিই, তিনি এই ধরনের সংকীর্ণ এবং পশ্চাদপসারী রাজনীতি করতে পারতেন না বরং তিনি দক্ষতার উপরে জোর দিতেন এবং অবশ্যই যোগ্যতার উপরেও জোর দিতেন।

মহারাষ্ট্রের শিবসেনা ও মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) মতো প্রাদেশিক দলগুলো যে ভাবে ভূমিপুত্র ভাবনার উপরে প্রতিষ্ঠিত, এখন কংগ্রেসও সেই ধরনের বিভেদমূলক রাজনীতির আশ্রয় নিচ্ছে।

এই ধরনের কুৎসিত রাজনীতির ফল মহারাষ্ট্রকে ভুগতে হয়েছে যখন তারা অন্য রাজ্য থেকে আগতদের খলনায়ক হিসাবে দেখেছে এবং উত্তরপ্রদেশ ও বিহার থেকে আগত শ্রমিকদের উপরে গুণ্ডারা হামলা করেছে, কারণ তারা স্থানীয় কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে চাইছিল।

তাঁর যা ভাবনা রয়েছে এটি যদি তার মুখড়া হয়ে থাকে দেশের প্রধান বিরেধী দল থেকে নির্বাচিত একজন মুখ্যমন্ত্রীর তা হলে এখনই কংগ্রেসে এই সিদ্ধান্ত নতুন করে বিবেচনা করা উচিত।

২০১৯ সালে আসন্ন লোকসভা ভোটে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস এখন ক্ষমতাসীন মোদী সরকারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে চলেছে, যদি তারা নিজেকে পরিবর্ত হিসাবে তুলে ধরতে চায় তা হলে এই ধরনের তোষণের নীতি গ্রহণ না করে তাদের অন্য উপায় বিবেচনা করা উচিত।

তা ছাড়া যেখানে কমল না থের নিজের জন্ম উত্তরপ্রদেশের কানপুরে, সেখানে এই ধরনের কথা পরস্পরবিরোধীও শোনাচ্ছে।

যদি এমন কোনও নিয়ম করা হয় যে অন্য রাজ্য থেকে আগত কারা মধ্যপ্রদেশে রাজনীতি করতে পারবেন তখন কমল নাথ নিজেও হয়তো সেই তালিকা থেকে বাদ যাবেন না।

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment