২০১৯ লোকসভা ও মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের মুখোমুখি বিজেপি-শিবসেনা

কোঙ্কন অঞ্চলে দুটি প্রকল্পকে কেন্দ্র করে দুই শাসক দলের ঠান্ডা লড়াই শুরু হতে পারে

 |  2-minute read |   16-04-2018
  • Total Shares

বিজেপির সঙ্গে শিবসেনার সম্পর্ক এখন একেবারেই মধুর নয়। এই পরিস্থিতিতে দুই শাসক দলের মধ্যে কোঙ্কন অঞ্চলে দুটি প্রকল্পকে কেন্দ্র করে ফের ঠান্ডা লড়াই শুরু হতে পারে।

কেন্দ্রীয় সরকার সৌদি আরবের কেমিক্যাল প্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যারাম্যাকোর সঙ্গে মউ সই করেছে যাতে সংস্থাটি রত্নাগিরির নানরে একটি রাসায়নিক শোধনাগার তৈরি করতে পারে। এতে রীতিমতো চটেছেন শিবসেনার শীর্ষ কর্তারা। বেশ কয়েকবছর ধরেই এই শোধনাগার নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছিল শিবসেনা। কিন্তু বিরোধিতা অগ্রাহ্য করে কেন্দ্রীয় সরকার সংস্থাটির সঙ্গে মউ সই করে ফেলায় শিবসেনার এই আন্দোলন এবার বড় ধাক্কা খেল।

শিবসেনার শীর্ষনেতা উদ্ধব ঠাকরে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশকে এক হাত নিয়ে জানিয়েছেন যে এই মউ সই করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বিজেপি। ফড়নবীশকে পাল্টা জানিয়েছেন যে স্থানীয় বাসিন্দারা যদি সত্যি সত্যি বিরোধিতা করেন তা হলে এই প্রকল্প তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে না।

ঠাকরে জানিয়েছেন, "মহারাষ্ট্রের জনগণকে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্প তৈরির কাজ যে ভাবে এগোচ্ছে তাতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে কেন্দ্রীয় সরকার মুখ্যমন্ত্রীকে পাত্তা দিচ্ছে না।" তিনি কথা দিয়েছেন যে কোনও মূল্যে শিবসেনা এই প্রকল্প বন্ধ করে দেবে। ঠাকরের কথায়, "এই প্রকল্প কোনও ভাবেই আমরা চালু করতে দেব না।"

হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়াম ও ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত এই ৬ কোটি টন ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট এই প্রকল্প বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রকল্প হতে চলেছে। এর নির্মাণে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা খরচ পড়বে। পরিকল্পটির জন্য প্রায় নিরানব্বই হাজার বিঘার জমির প্রয়োজন রয়েছে এবং এই জমি অধিগ্রহণ স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

body_040318125146_041618021018.jpg উদ্ধব ঠাকরে: মউ স্বাক্ষর করে স্থানীয়দের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বিজেপি

এই শোধনাগার অঞ্চলের চোদ্দোটি গ্রাম জুড়ে নির্মাণ করা হবে এবং জায়গাটিকে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র শিল্প উন্নয়ন আইনে শিল্পাঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করা হয়ে গেছে। এর ফলে পাঁচটি গ্রামকে পাকাপাকি ভাবে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং বাকি গ্রামগুলোর আংশিক অংশের স্থানান্তরের প্রয়োজন রয়েছে।

তবে এখানেই শেষ নয়। মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনার ঠান্ডা যুদ্ধের লড়াই আরও একটি প্রকল্পকে কেন্দ্র করে লাগবে - জয়িতাপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প। এই প্রকল্পটি একটি ফরাসি সংস্থার নির্মাণ করবার কথা এবং প্রকল্পিতকে ঘিরে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে শিবসেনা প্রকল্পটির সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সাংসদ বিনায়ক রাউট জানিয়েছেন, "পরমাণু দুর্ঘটনায় কয়েকলাখ মানুষের জীবনহানি ঘটেছে।"

body_041618021108.jpgশিবসেনা এবার সর্বশক্তি দিয়ে আন্দোলন শুরু করবে

ফরাসি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইডিএফ ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠকের পর এই প্রকল্প নিয়ে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। বৈঠকে ইডিএফ দাবি করেছে যে তাদের পারমাণবিক চুল্লি যথেষ্ট সুরক্ষিত এবং ইতিমধ্যেই ইউরোপের একটি গবেষণাগারে তা পরীক্ষা করে নেওয়া হয়েছে।

সংস্থাটির তরফ থেকে মহারাষ্ট্র সরকারের আধিকারিকদের সেই গবেষণাগার পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ২০১১ সালে জাপানের ফুকিসামাতে পারমাণবিক চুল্লি স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যের উপর বেশ খারাপ প্রভাব বিস্তার করেছিল। সংস্থাটির তরফ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে যে সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই তাদের পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণ করা হয়েছে।

জয়িতাপুর পরিকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়। পারমাণবিক চুল্লি স্বাস্থ্যের উপর কুপ্রভাব ফেলতে পারে, মূলত এই নিয়ে ক্ষোভ ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের। লোকসভা ও মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচন এখন দোরগোড়ায়।

সুতরাং, শিবসেনা দুটি প্রকল্প বন্ধ করতে সর্বশক্তি দিয়ে আন্দোলন শুরু করবে।

(সৌজন্যে: মেল টুডে)

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

KIRAN TARE KIRAN TARE @kirantare

The writer is Senior Associate Editor, India Today.

Comment