সুব্রত মুখোপাধ্যায়: রাজ্যে এদিনেই ভোটের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করা অসম্ভব নয়
একদিনে ভোট গ্রহণ হলে সারা রাজ্যে 'রক্তবন্যা' বয়ে যাবে ও চলবে ব্যাপক মারদাঙ্গা এবং খুনখারাপি
- Total Shares
আমার মনে হয় আমাদের রাজ্য খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। একটা রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারছে না। বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস, অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের জন্য ভোট গ্রহণের তারিখ শুধুই পিছিয়ে চলেছে। আবার কোথাও কোথাও মনোনয়ন জমা করার পরেও তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। একজন স্বাধারণ মানুষ হিসেবে পরিস্থিতিটা দেখে খুব খারাপ লাগে। এ বারে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব সিদ্ধান্তই হচ্ছে আদালতের হস্তক্ষেপে।
১৪ই মে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে কী না সেই বিষয় এই মাসের ৪ মে জট কাটবে। সেদিন প্রধান বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলাটির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা হবে। যদিও এর আগে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ পঞ্চায়েত ভোটের উপর প্রশ্ন তুলে মামলাটি পাঠিয়ে দেয় প্রধান বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে।
কলকাতা হাইকোর্ট
আদালতে ভোট গ্রহণ মামলাটি শুনানি হলেও স্থগিতাদেশ দেবে বলে আমার মনে হয়। রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোটের যে নতুন দিনটি ঠিক করেছিল আদালত হয়ত সেটা বহাল রাখবে না। যা দেখছি তাতে আমার মনে হয় পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে হতে সেই জুলাই বা অগাস্ট মাস। গোটা রাজ্যে একদিনে ভোট গ্রহণ করলে রাজ্য যথাযত নিরাপত্তা দিতে পারবে কী না এবং নিরাপত্তার বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে সব দিকগুলো খতিয়ে দেখার পরেই চূড়ান্ত রায় গ্রহণ করবে প্রধান বিচারপতি।
তাই ভোট গ্রহণের সময় নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কী ধরণের ব্যবস্থা নিয়েছে সে বিষয় পূর্ণাঙ্গ একটি রিপোর্ট জমা দিতে হবে ডিভিশন বেঞ্চের কাছে। আমার মনে হয় বিচারপতি কয়েক দফায় নির্বাচনের কথাই বলবেন। সেদিন বিচারপতি নিশ্চয়ই জানতে চাইবেন মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার নতুন তারিখটি কী কিংবা কারা এই মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে বাধা প্রাপ্ত হয়েছিল। আবার পরিস্থিতি বুঝে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার হয়ত নির্বাচনের জন্য স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করতে পারেন।
শান্তিপ্রিয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবিতে
আর একটা কথা এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে অনেক জায়গায় নির্বাচন হলেও আবার তাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে প্রচুর জনস্বার্থ মামলা হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু যদি একদিনেই ভোট গ্রহণ করা হয় তাহলে সারা রাজ্যে 'রক্তবন্যা' বয়ে যাবে ও চলবে ব্যাপক মারদাঙ্গা এবং খুনখারাপি। অনেক এলাকায় হয়ত বহু মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হবে না। এতো বড় একটা রাজ্যে একদিনে ভোট হওয়া অসম্ভব।

