রাজ্যপালের দৌড় কতদূর?

"আদালত বা রাষ্ট্রপতি যদি কোনও নির্দেশ না দেন, এ রকম ঘটনায় আমি আবার টুইট করব"

 |  2-minute read |   14-04-2018
  • Total Shares

আমি রাজ্যপাল হওয়া সত্ত্বেও আমার একটা বদ অভ্যাস আছে: টুইট করা। এই কাণ্ডটি আমি করছি বহুকাল, ২০১০ সাল থেকে, রাজ্যপাল তো তার পাঁচ বছর পরে হয়েছি। রাজ্যপাল হওয়ার পরে টুইটারে আমি ঘোষণা করেছিলাম, রাজনৈতিক টুইট করব না, সে প্রতিজ্ঞা, আমি তো মনে করি আমি রেখেছি।কিন্তু অনেকেই তা মনে করেন না— বস্তুত কলকাতা থেকে একদল সাহিত্যিক ও অন্যান্য বুদ্ধিজীবী আমার নামে নাকি রাষ্ট্রপতির কাছে এমন নালিশ করেছেন যে আমি নিশ্চিত, আমার হযবরল-বর্ণিত তিনমাসের জেল ও সাত দিনের ফাঁসি হবেই। এর মধ্যে কিছু লোক ফড়ে-জাতীয়, তাদের নালিশ আমার বিশেষ কিছু এসে যায় না, কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার পরম প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ও এঁদের দলে আছেন। কী আর করা যাবে?

রাজ্যপাল কী করতে পারেন আর কী করতে পারেন না— অর্থাত্ আইনত— তার দিকনির্দেশ পাওয়া যাবে প্রথমত আমাদের সংবিধানে। এই সংবিধানকে ব্যাখ্যা করার অধিকার সুপ্রিম কোর্ট এবং বিভিন্ন হাইকোর্টগুলির, রামা-শ্যামা-যদু-মধুর নয়। অথবা, রামা-শ্যামা-যদু-মধু যদি ব্যাখ্যা করেও, তা হলেও তা মানবার বাধ্যবাধকতা কারুর নেই, রাজ্যপালের তো নেই-ই। এ ছাড়া এই বিষয়ে নির্দেশনামা জারি করতে পারেন একমাত্র রাষ্ট্রপতি, অবশ্যই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার পরামর্শে।আমার যতদূর জানা আছে, রাজ্যপালের টুইট করার ব্যাপারে সংবিধানে, সুপ্রিম কোর্ট এবং বিভিন্ন হাইকোর্ট প্রদত্ত ব্যাখ্যায় অথবা রাষ্ট্রপতির কোনও নির্দেশনামায় কিছু নেই।তা হল এই সব লম্বাচওড়া কথা কিসের জোরে?

 

 

আমি নিশ্চিত, যাঁরা আমার টুইট পড়ে ব্যথিত তাঁরা এর একটা প্রশ্নেরও উত্তর দিতে পারবেন না। আমি তাঁদের একটু সাহায্য করি। এঁদের একমাত্র যুক্তি হতে পারে, এটা প্রথাবিরুদ্ধ, কোনওদিন কোনও রাজ্যপাল এটা করেননি।তাতে কী হয়েছে? নোট বাতিল তো এর আগে কখনও হয়নি। তা হলে? আইনে একটা জিনিস আছে, custom having the force of law, অর্থাত্ যে প্রথা আইনের সমান জোরদার। কিন্তু কে বলবে জোরদার কি জোরদার নয়? আবার সেই সুপ্রিম কোর্ট এবং বিভিন্ন হাইকোর্টগুলিই বলবে, রামা-শ্যামা-যদু-মধু নয়।

একটা উদাহরণ দিই। আমার টুইটটি পড়ে সবচেয়ে বেশি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই-ই, সেটি আফজলগুরুর জানাজা বা শবযাত্রা উপলক্ষ্যে। আফজলগুরু একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সন্ত্রাসবাদী অপরাধী, উচ্চতম আদালতে পর্যন্ত তার বিচার হয়েছে এবং শেষপর্যন্ত ফাঁসি হয়েছে। তাহলে তার জানাজায় হাজার হাজার মানুষের ভিড় কিসের? এই প্রসঙ্গে আমি টুইট করেছিলাম, যারা এই জানাজায় গেছে, তাদের মধ্যে আত্মীয়-বন্ধু বাদ দিলে, বাকিরা সন্ত্রাসবাদী হতে পারে, গোয়েন্দা দপ্তরের উচিত্ তাদের উপর নজর রাখা। বাপ রে বাপ, এর পর কি বিস্ফোরণ!

কিন্তু আমি মনে করি, আমি ঠিকই লিখেছিলাম। এটা রাজনীতির কথা নয়, দেশের নিরাপত্তা সম্বন্ধীয় কথা। সে কথা আমার টুইট করার অধিকার আছে, এবং এ রকম কোনও ঘটনা হলে আমি আবার এরকম টুইট করব। যদি না ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট বা কোনও হাইকোর্ট এ রকম কোনও ব্যাখ্যা দেয়, অথবা রাষ্ট্রপতি কোনও নির্দেশনামা দেন।

 

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Tathagata Roy Tathagata Roy @tathagata2

Right-wing Hindu socio-political thinker,writer,ideologue. Plus civil engineer,metro man,contract expert,former professor & politician. Also Governor of Tripura

Comment