বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ড সফর খুব গুরুত্বপূর্ণ, বিরাটদের পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে

ইয়ো ইয়ো পরীক্ষা ভারতের সঙ্গে অন্যান্য দলগুলোর তফাৎ গড়ে দিতে পারে

 |  2-minute read |   08-07-2018
  • Total Shares

তিরাশি সালে ওই বারান্দায় দাঁড়িয়ে কপিল দেব তুলে ধরেছিলেন সুনীল গাভাস্করের হাত। ভারত অধিনায়কের অন্য হাতে তখন প্রুডেন্টিয়াল কাপ জ্বলজ্বল করছে।

তার দু'দশক পরে, ২০০২ সালে, দুই তরুণ তুর্কি মহম্মদ কাইফ ও যুবরাজ সিংয়ের লড়াকু ইনিংসের উপর ভর করে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জিতেছিল ভারত। অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় তখন ওই বারান্দায় দাঁড়িয়ে আদুল গায়ে শূন্যে গেঞ্জি ওড়াচ্ছেন।

ঠিক ওই মাঠে না হলেও সেই ইংল্যান্ডেই ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত। বার্মিংহামে ইংল্যান্ডেকে হারিয়ে।

ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটের লোকগাথার সম্পর্ক বহুদিনের। সেই ১৯৭১ সাল থেকে অজিত ওয়াড়েকরের ভারতের টেস্ট সিরিজ জয় থেকে শুরু। গত বছরও বিরাট কোহলির ভারতও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে না হারলে প্রায় ইতিহাস রচনা করে ফেলছিল।

আবার ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ বিরাটদের কাছে। আগামী বছর ইংল্যান্ডেই ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর বসছে। ভারত কি পারবে ১৯৮৩ আর ২০১১ সালের পুনরাবৃত্তি করতে?

বর্তমানে ইংল্যান্ড সফর করছে ভারত। আর, এই ইংল্যান্ড সফরটাই ভারতের কাছে বিশ্বকাপের আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

বর্তমানে ভারতীয় দলের শক্তি প্রশ্নাতীত। শক্তির নিরিখে যে কোনও দলকেই হারাবার ক্ষমতা রাখেন বিরাটরা। কিন্তু যেটা প্রয়োজন তা হল পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া। আগামী বিশ্বকাপে ৯২ সালের বিশ্বকাপের মতই গ্রূপ পর্যায়ে একে ওপরের বিরুদ্ধে ন'টি করে ম্যাচে খেলবে অংশগ্রহণকারি ১০টি দেশ। প্রথম চারটি দল সরাসরি সেমিফাইনালে প্রবেশ করবে। অর্থাৎ, ফাইনালে উঠলে মোট ১১টি ম্যাচ খেলতে হবে। 

body1_070818025830.jpg ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ জয়ী ভারত

body_070818025916.jpg২০০২ সালে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়ের পরে

body2_070818030003.jpg২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত

ইংল্যান্ডের আবহাওয়ায় ১১টি ম্যাচ খেলতে হলে (পড়ুন ম্যাচে জিততে হলে) পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা অতন্ত্য প্রয়োজনীয়। তাই এই ইংল্যান্ড সফরটা কিন্তু প্রচন্ড গুরুত্বপূর্ণ ভারতের জন্য।

দুটি টি-২০ ম্যাচে একটা জিনিস দেখে ভালো লাগল যে স্পিনাররা ছন্দে রয়েছে। সিম সহায়ক উইকেট ইংল্যান্ডে। সেই পিচে স্পিনারদের ছন্দে থাকা মানে ভারত সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে। কে এল রাহুলের মতো জুনিয়রদের পাশাপাশি কোহলি এমনকি ধোনিও রান পেয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষাও করে ফেলেছে ভারত। বোঝাই যাচ্ছে যে ইংল্যান্ড সফরটিকে আসন্ন বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন কোহলিরা।

ইংল্যান্ড সফরের ঠিক আগে আরও একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের তরফ থেকে। দলে সুযোগ পেতে গেলে প্রতিটি ক্রিকেটারকে ইয়ো ইয়ো ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে হবে। গোটা মরশুম জুড়ে এখন প্রচুর ক্রিকেট খেলেন পেশাদার ক্রিকেটাররা। বিশেষ করে টি-২০র মতো অল্প সময়ের ক্রিকেট আসার পর ম্যাচের সংখ্যা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফিটনেস ধরে রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি যে এই ইয়ো ইয়ো পরীক্ষা চালু করবার সিদ্ধান্ত নিয়ে একেবারে ঠিক কাজ করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আসন্ন বিশ্বকাপে এই পরীক্ষাই কিন্তু বাকি দলগুলোর সঙ্গে ভারতের পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।

সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্যে একেবারে ঠিক পথে এগোচ্ছে ভারতীয় দল। এখন দেখা যাক, পথ অতিক্রম করে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে কি না।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

SAFI AHMED SAFI AHMED

Former Ranji Trophy cricketer for Bengal. BCCI pitch curator.

Comment