ওলা উবেরের ভাড়া বৃদ্ধি নয়, আমাদের দাবি কমিশনের পরিমাণ কমান
আর কোনও ব্যবসায় শুধুমাত্র 'দালালির' কমিশন ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ হয় না
- Total Shares
ধর্মঘট আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যেবেলা পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর আমরা ঠিক করেছি আগামী সপ্তাহে আমরা ধর্মঘট নিয়ে ফের সিদ্ধান্ত নেব।পরিবহণ মন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।যদি শেষ পর্যন্ত ধর্মঘটই আমাদের দাবি আদায়ের পথ হয় তাহলে এই ভারতে এই প্রথমবার অ্যাপ ক্যাব ধর্মঘটে যাবে। তাও আবার একদিন বা দু'দিন নয়, পর পর তিনদিনের জন্য।
আমাদের এই আন্দোলনে নিয়ে নিশ্চয়ই ওলা উবেরের যাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। ডিজেল ভাড়া আকাশ ছোয়া হওয়ার পর সরকারের তরফ থেকে বাস ও ট্যাক্সি ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। বহুদিন বাস ও ট্যাক্সি ভাড়া বাড়েনি। তাই যাত্রীরা বাস ও ট্যাক্সি ভাড়া বৃদ্ধির পিছনে একটা যুক্তি খুঁজে পেতে পারেন। ট্যাক্সি মালিক বা চালকদের উপর সহানুভূতিশীল হয়ে সরকারের ভাড়া বৃদ্ধি সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেন। কিন্তু অ্যাপ ক্যাবের ভাড়া এমনিতেই বেশি এবং সময় বিশেষে সারচার্জ যোগ হয়ে এই ভাড়া আকাশ ছোঁয়া হয়ে যায়। তাহলে এই পরিষেবার ভাড়া বৃদ্ধির প্রয়োজনটা কোথায়? আমাদের এই ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে যাত্রী সাধারণের ক্ষোভে ফেটে পড়ার যথেষ্ট কারণও রয়েছে।
আসলে কিছু সংবাদমাধ্যমের সৌজন্যে যাত্রীদের কাছে আমাদের দাবি বা আন্দোলন নিয়ে ভুল তথ্য পৌঁছিয়েছে। আমদের এই আন্দোলনের দাবি কোনও মতেই ভাড়া বৃদ্ধি নয়। আমরা এই আন্দোলনের মাধ্যমে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলোর কমিশনের পরিমাণ কমানোর দাবি জানিয়েছি। ভাবতে পারেন! প্রতি ১০০ টাকা ভাড়ায় অ্যাপ সংস্থাগুলো ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কমিশন নেয়। সহজ সরল ভাষায় ওলা বা উবেরের কমিশন ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ আর চালকের আয়ে মাত্র ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ।

নিয়মানুযায়ী, ডিজেলের দাম থেকে শুরু করে গাড়ির পিছনে সব রকমের খরচ মালিকদের বহন করতে হয়। এমনকি যে মালিক ড্রাইভার দিয়ে গাড়ি চালান তাঁদের প্রতি দিন একটি নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক ড্রাইভারদের দিতে হয়। এই নির্দিষ্ট ভাড়ার সঙ্গে গাড়ি কতগুলো যাত্রী তুলল বা কতগুলো ভাড়া খাটল তার কোনও সম্পর্ক নেই। তাহলে বুঝুন, শুধুমাত্র একটি অ্যাপের মাধ্যমে যাত্রী খুঁজে দিচ্ছে বলে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলো ভাড়ার ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ নিয়ে নিচ্ছে। এ ভাবে কী কোনও ব্যবসা হয়। আমি নিশ্চিত আর অন্য কোনও ব্যবসায় শুধুমাত্র 'দালালি' করে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ আয়ে করা যায় না।
আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কথা অ্যাপ সংস্থাগুলোকে বহুবার জানিয়েছিলাম। লাভ হয়নি। সরকারকেও জানিয়েছিলাম। তাও লাভ হয়নি। এর পরেই আমরা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিলাম।
অবশেষে গত শনিবার সরকারের তরফ থেকে একটা ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অ্যাপ সংস্থাগুলোকে চিঠি পাঠিয়ে ভাড়া সংক্রান্ত কিছু তথ্য ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তাই শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে আমরা খানিকটা হলেও
আশাবাদী যে এই কাগজগুলো পাওয়ার পর, বিষয়টি খতিয়ে দেখে আমাদে দাবি বিবেচনা করে দেখবে পরিবহণ দপ্তর।
ধর্মঘট হোক বা না হোক ওলা উবেরের ভাড়া বাড়ানো কখনই আমাদের লক্ষ নয়। আমরা শুধু কমিশন কমিয়ে আমাদের আয়ের পৰিমাণ বাড়লেই খুশি।

