দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কী ভাবে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে

গোটা ২০১৮ সালে জুড়েই চুপ ছিলেন একমাত্র তিনি, তাঁর হয়ে প্রযোজন পড়লে কথা বলেছেন মনীশ সাসোদিয়া

 |  3-minute read |   02-01-2019
  • Total Shares

প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল আম আদমি পার্টি (আপ) ও কংগ্রেস নাকি দেশের রাজধানী শহরের সাতটি লোকসভা আসনে নির্বাচনী জোট গড়ার লক্ষে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে।

২০১৪ লোকসভায় দিল্লির এই সাতটি লোকসভা আসনেই জয়লাভ করেছিল বিজেপি।

এই জোট গঠনের প্রক্রিয়া চলাকালীন আরও একটি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে আপ। দলের বিধায়ক আলকা লম্বাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। দিল্লির বিধানসভাতে, ১৯৮৪ সালে শিখ বিরোধী দাঙ্গার জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ভারতরত্ন উপাধি কেড়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।

body_010219045251.jpg প্রতিদ্বন্ধি অরবিন্দ কেজরিওয়াল আর রাহুল গান্ধীকে কি এক হতে দেখা যাবে? [ছবি: পিটিআই]

লম্বা জানিয়েছেন যে আপের শীর্ষনেতা তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল স্বয়ং তাঁকে বিধায়ক হিসেবে পদত্যাগ করতে বলেছেন।

এর পরেই আপের তরফ থেকে জানানো হয়েছে রাজীব গান্ধীর ভারতরত্ন উপাধি কেড়ে নেওয়ার কোনও দাবি দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। দলের কোনও বিধায়ককে পদত্যাগ করতে বলার কথাও অস্বীকার করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।

body3_010219045308.jpg

এ সব বিতর্কের পরেও আপের একজন মাত্র নেতাই রয়েছেন যিনি এখনও মুখ খোলেননি। তিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। একটা সময় অবশ্য এই সব বিতর্কে নিজের মতামত দিতে বেশ সিদ্ধহস্ত ছিলেন তিনি।

এর আগে বিভন্ন বিতর্ক সৃষ্টি করে ও আদালতে মামলা করে কোটি কোটি টাকা নষ্ট করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই কেজরিওয়াল কিন্তু এখন চুপ থাকতে পছন্দ করছেন। তাঁর হয়ে, প্রয়োজন পড়লে, কথা বলছেন মনীশ সিসোদিয়া।

গত এক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ কোনও বিরোধী নেতাকে সরাসরি আক্রমণ করছেন না। একটা সময় দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কিন্তু সর্বদাই কেজরিওয়ালের আক্রমণের মুখে পড়তেন। এমনকি ২০১৪ লোকসভার সময়ে বেনারসে গিয়েও মোদির বিরুদ্ধে টপ দেগেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।

শুধু বক্তৃতায় নয়, টুইটার অ্যাকাউন্টেও বিরোধীদের আক্রমণ বন্ধ করে দিয়েছেন কেজরিওয়াল।

body1_010219045439.jpgআবারও বিতর্ক: বিধায়ক আলকা লম্বার দাবি কেজরিওয়াল নাকি তাঁকে পদত্যাগ করতে বলেছিলেন [সৌজন্যে: ইনস্টাগ্রাম]

হিন্দুস্তান টাইমস প্রত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, মে ২০১৬ থেকে ফেব্রুয়ারী ২০১৭ অবধি করা ১,৩০৩টি টুইটের মধ্যে ২৬৫টি তে মোদীর নাম উল্লেখ করেছিলেন তিনি। কিন্তু এর পরে থেকে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে আর মোদীর নাম খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

তাহলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এখন ঠিক কী রাজনীতি করছেন?

কেজরিওয়াল এখন তাঁর সরকারের রূপায়ণ করা বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচারে ব্যস্ত। সোশ্যাল মিডিয়া ও তাঁর ভাষণে তিনি বারংবার এই প্রকল্পগুলোর কথা তুলে ধরছেন।

body2_010219045552.jpgমৌনব্রত পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল [সৌজন্যে: পিটিআই]

গোয়া থেকে গুজরাট নির্বাচনে নিজেদের মেলে ধরতে ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে আপ। তাই আপ নেতৃত্ব জাতীয় স্তরের দল হওয়া ওঠার স্বপ্ন পূরণের জন্য এই মুহূর্তে শুধুমাত্র তাদের ঘাঁটি দিল্লির উপর মনোনিবেশ করে চলেছে। যদিও পাঞ্জাবেও আঞ্চলিক দল হিসেবে পরিচিত আপ, তাও কেজরিওয়াল বর্তমানে শুধু দিল্লির উপর মনোনিবেশ করছেন কারণ এখান থেকেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর আসনটি দখল করতে পেরে ছিলেন।

২০১৮ সালের জুলাই মাস থেকে আপ আবার তাদের মুখ্য ভোটব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে চলেছেন। এই ভোটব্যাঙ্কের সদস্যরা হলেন দিল্লির অটো চালকরা। রাজধানীর ৭০টি বিধানসভা আসনে অটো চালকদের হাতে বেশ কিছু দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্বাচনে লড়াই করে কেজরিওয়াল হয়ত বুঝতে পেরেছেন, "জঙ্গলে দুটি পাখি খুঁজতে যাওয়ার চাইতে হাতের পাখিটির যত্ন নিলে কাজ দেয় বেশি"।

আর, রাজনীতির ময়দানে বিভিন্ন জ্বালাময়ী বক্তৃতা ও বিরোধীদের বিরুদ্ধে তোপ দেগেও এখন মৌনিতা অবলম্বনের পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। সত্যি সত্যিই বদলে গিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment