কখনও ঠান্ডা আবার কখনও ভীষণ গরম, জেনে নিন কী ভাবে শিশুকে সুস্থ রাখবেন
গরম থেকে ঠান্ডা লেগে অনেক বাচ্চাদের খিঁচুনি বা তড়কা হতে পারে
- Total Shares
গরমে আমরা সবাই অতিষ্ঠ। এই গরমে বাচ্চা-বড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। তার মধ্যে আবার কখনও চারিপাশ কালো করে নামছে বৃষ্টিও। গরমের তাপপ্রবাহের পরে বেশ কিছুটা শীতলতা।
প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় এই গরম আবার এই ঠান্ডা। কিন্তু জানেন কী তাপমাত্রার এমন ওঠানামার ফলে শরীর খারাপ হয় পড়তে পারে, এই সময় বাচ্চাদের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে নাহলে তার অনেক রকম অসুখ হতে পারে।
বাচ্চাকে সর্বক্ষণ এসিতে রাখা কাজের কথা নয়
শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয় বলে প্রচন্ড গরম বা হটাৎ বৃষ্টির পর ঠান্ডা থেকে তাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সহজেই হতে পারে। তাদের সর্দি, কাশি বা ঠাণ্ডা লাগে কিংবা জ্বর হতে পারে। তাই এই সময় নবজাত ও তার চেয়ে একটু বড় বাচ্ছাদের দিকে বিশেষ নজর দিন।
অতিরিক্ত গরমে তাদের গা গরম হয়ে যেতে পারে এর ফলে জ্বর আসতে পারে। অনেক নবজাত ও বিভিন্ন বয়সী বাচ্চারা খুব ঘেমে যায়। অতিরিক্ত ঘাম হলে শরীর থেকে অনেকটা জল বেরিয়ে যায় যার ফলে তাদের প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। অনেক নবজাত ও অন্যান্য বাচ্চাদের ক্ষেত্রে শরীরে জলের অভাব থেকে কিংবা গরম থেকে ঠান্ডা লেগে তাদের খিঁচুনি বা তড়কাও হতে পারে।গরমকালে শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বেরিয়ে গেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে তড়কার আশঙ্কা থাকে। শরীরে জলের অভাব হলেই যে শিশুর তড়কা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এমনটা নয়। একটি শিশুর তড়কা হলে বুঝতে হবে যে তার শরীরে কোনও গুরুতর সমস্যা হয়েছে তাই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জ্বর বা সর্দি-কাশি হলে শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম করতে দিন
এই সময় বাচ্চাদের হিট স্ট্রোক বা শরীরে গরম লেগে গিয়ে বিভিন্ন অসুবিধা দেখা দিতে পারে।
এই সময় বাচ্চাদের ভাইরাসজনিত জ্বর (ভাইরা ফিভার) হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। অতিরিক্ত গরমে শিশুরা যেন একটু ঝিমিয়ে পরে তাই এইসময় তাদের ঠিকঠাক ও সুষম আহারের খুব প্রয়োজন রয়েছে।
বাচ্চাকে যেমন খুব গরমে রাখবেন না ঠিক তেমন ভাবেই তাকে খুব ঠান্ডাও লাগতে দেবেন না। খুব গরম পড়লে বাচ্চাকে এমন একটি ঘরে রাখুন যেটা বেশ খোলামেলা ও একটু ঠান্ডা। কিছুক্ষন অন্তর তা সারা গা জল দিয়ে মুছিয়ে দিন। ঢিলাঢালা সুতির জামাকাপড় পড়ান। এখন প্রায় সকলের বাড়িই শীততপনিয়ন্ত্রিত বা এয়ারকন্ডিশনার যুক্ত। তাই খুব গরমে বাচ্চাকে সেই ঘরে রাখতে পারেন। তবে একটু হালকা জামাকাপড় পরান ।পাশাপাশি মনে রাখতে হবে বাচ্চাকে সর্বক্ষণ এসিতে রাখা কাজের কথা নয়। তাই অভিভাবককে এবিষয় সচেতন হতে হবে। খুব গরম পড়লে এসির আদ্রতা কম করে বাচ্চাকে কিছুটা সময় ঠান্ডায় রাখতে পারেন এর ফলে তাদের ঘাম হবে না। গরমে ঘাম থেকে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন ঘামাচি বা চুলকানি। দীর্ঘক্ষণ এসিতে থাকলে বাচ্চাদের শরীরের তৈলাক্ত ভাবটা কেটে গিয়ে ওপরের ত্বক খুব শুকনো হয়ে যেতে পারে তাই বাচ্চাদের এসিতে রাখলে তাকে বারবার জল খাওয়ান ও বাচ্চার ত্বকে একটা ভালো ক্রিম লাগিয়ে রাখুন। এছাড়া বেশিক্ষন এসিতে থাকলে বাচ্চাদের চোখ শুকিয়ে যেতে পারে।যাকে আমরা ডাক্তারি পরিভাষায় 'ড্রাইআইস' বলি।
শিশু যেন অসুস্থ শরীর নিয়ে বেশি দৌড়াদৌড়ি না করে
যেসব বাচ্চাদের খুব ঘাম হয় তাদের প্রচুর জল খাওয়াতে হবে যাতে শরীরে জলের অভাব না হয় ও শরীর সবসময় সম্পৃক্ত থাকে। যেসব বাচ্চাদের খুব ঘাম হয় তাদের প্রচুর জল খাওয়াতে হবে যাতে শরীরে জলের অভাব না হয় ও শরীর সবসময় সম্পৃক্ত থাকে।
জ্বর বা সর্দি-কাশি হলে শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম করতে দিন। যে সব বাচ্চারা তাদের মায়ের দুধ পান করে তাদের কিছক্ষন অন্তর খাবার বা মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। শিশু যেন অসুস্থ শরীর নিয়ে বেশি দৌড়াদৌড়ি না করে।
বাচ্চা গরমে থেকে খেলাধুলা করে বা স্কুল থেকে ফিরলে তাকে একটু বিশ্রাম করে অনেক পরিমাণে জল খাওয়ান কিংবা নুন ও চিনির জলও দিতে পারেন, যা কে আমাদের ডাক্তারি ভাষায় ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশান বলি। তারপর তাকে ভালো করে মাথা মুছিয়ে দিন সঙ্গে সারা গা মুছিয়ে দিন।
বৃষ্টিতে ভিজে গেলে বাচ্চাকে তাড়াতাড়ি স্নান করিয়ে দিন
অনেক বাচ্চারা বাইরের থেকে এসে বা খেলাধুলা করে এসে ফ্রিজের ঠান্ডা জল বা পানীয় খায়। কোনও ভাবেই বাচ্চাদের কনকনে ঠান্ডা জল খেতে দেবেন না। প্রয়োজনে একটু জিড়িয়ে নিয়ে সাধারণ জলের সঙ্গে অল্প ঠান্ডা জল মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
এইসময় বৃষ্টিতে ভিজে গেলে বাচ্চাকে তাড়াতাড়ি স্নান করিয়ে দিন। এখানে বলে রাখি বাচ্চাদের প্রত্যেকদিন ভালো করে স্নান কোরান কিন্তু তারা যেন দীর্ঘক্ষণ ধরে স্নান না করে।