এবছর পুজো সংগঠকদের অনুদান না দিয়ে জ্বালানির উপর বেশি ছাড় দেওয়া উচিৎ ছিল

এই এক টাকা ছাড়ে মাসে যা সাশ্রয় হবে তা দিয়ে আজকালকার বাজারে একটা আলপিনও কেনা যায় না

 |  2-minute read |   12-09-2018
  • Total Shares

রুজিরোজগারের তাগিদেই আমি পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া আমার নিজের গাড়িও রয়েছে। এবং গত চার পাঁচ বছর ধরে দেশজুড়ে যা চলছে তাতে সবচাইতে বেশি ভুক্তভোগী আমার মতো গাড়ির মালিকরা। আরও বেশি করে ভুক্তভোগী আমার মতো পরিবহণ ব্যবসায়ীরা।

২০১৬ যেখানে পেট্রলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৬৫.১২ টাকা। ২০১৮ সালে, মাত্র দু'বছরের মধ্যে, পেট্রোলের দাম এখন ৮৩.৭৫ টাকা প্রতি লিটার। ২০১৬ সালে ডিজেল ছিল ৪৮. ৮০ টাকা প্রতি লিটার। আর, এখন এক লিটার ডিজেল কিনতে ৭৫.৮২ টাকা গড়চা যাচ্ছে।

এমনিতেই, এই রাজ্যের পরিবহণ ব্যাবসায়ীরা খুব সুখে নেই। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসা ইস্তক বাস, মিনিবাস ও ট্যাক্সির ভাড়া মাত্র দু'বার বেড়েছে। তাও নামমাত্র। আর এই অবস্থায় জ্বালানির দাম হুহু করে বেড়ে যাওয়ায় আমরা যারপরনাই অস্বস্তিতে পড়েছি। কত ব্যবসায়ী পরিবহণ ব্যবসা থেকে সরে গিয়ে অন্য ব্যবসায় ভাগ্য অন্বেষণে নেমেছেন। আমরা যারা পরে রয়েছি তাদের আর কোথাও যাওয়ার উপায় নেই বলেই পরে রয়েছি।

body_091218124357.jpgগত দু'বছরে জ্বালানির দাম আকাশ ছুঁয়েছে [ছবি: পিটিআই]

এমত অবস্থায় রাজ্য জুড়ে পরিবহণ ব্যবসায়ী ও গাড়ির মালিকদের অসুবিধার সুরাহা করতে নেমেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এ রাজ্যে পেট্রল ও ডিজেলে শুল্ক কমিয়ে ১ টাকা করে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ভাবতে অবাক লাগে মাত্র দু'বছরের মধ্যে পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি ১৮.৬৩ টাকা ও ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ২৭.০২ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ার পর অবশেষে ঘুম ভাঙলো রাজ্য সরকারের। আর ঘুম থেকে উঠেই লিটার প্রতি মাত্র ১ টাকা কমিয়ে সাধারণ মানুষদের অসুবিধার সুরাহা করে দিলেন সরকার।

একজন প্রাইভেট গাড়ির মালিক সারা মাসে যা জ্বালানি ক্রয় করেন তাতে মাত্র এক টাকা কমিয়ে তাদের কতটা সাশ্রয় হবে। আমরা যারা পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তাদেরও কোনও লাভ হবে না। নামমাত্র সাশ্রয় হবে আর সেই টাকা দিয়ে আজকালকার দিনে আলপিন কেনা যায় কী না সন্দেহ।

body1_091218124701.jpgনির্বাচনের দায়ে বড় দায়ে [ছবি: পিটিআই]

পুজোর জন্যে প্রতি সংগঠকদের ১০ হাজার টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। কিন্তু সময়টা যে ভুল। জ্বালানির দাম আকাশ ছুঁয়েছে। সেই সময় সরকারের উচিৎ ছিল আরও বেশি টাকা ছাড় দেওয়া।

মানছি, ১ টাকা করে ছাড় দেওয়া মানে বছরে ৫০০ থেকে ৫৫০ কোটি টাকা লোকসান হবে সরকারের। সরকারি হিসেবে বলছে এ রাজ্যে প্রতি মাসে এক লক্ষ কিলোলিটার (এক কিলোলিটার মানে ১,০০০ লিটার) পেট্রল ও তিন লক্ষ কিলোলিটার ডিজেল ব্রিক্রি হয়। এ বছর পুজো কমিটিগুলোকে ২৮ কোটি টাকা অনুদান না দিয়ে জ্বালানি করের উপর আরও বেশি ছাড় দেওয়া উচিৎ ছিল।

কিন্তু সরকার তো 'সরকারি' পথেই চলবে। বলা ভালো 'রাজনৈতিক' পথে। আসছে বছর লোকসভা নির্বাচন। পরবর্তী পাঁচ বছর ভারতের মসনদ কার দখলে থাকবে তা ঠিক হবে এই নির্বাচনে।

গদির টান বড় টান। নির্বাচনের দায়ে বড় দায়ে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

SUBRATA SHANKAR GHOSH SUBRATA SHANKAR GHOSH

Secretary General, Joint Council of Luxury Taxi Association

Comment