আইসিস জঙ্গি হানার ছক বানচাল করেছে এনআইএ, তারা যেন আত্মতুষ্টিতে ভুগতে শুরু না করে

১০ জন দিল্লি থেকে গ্রেফতার হয়েছে, উদ্ধার রকেট লঞ্চার-সহ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র

 |  3-minute read |   28-12-2018
  • Total Shares

বুধবার দিল্লিতে একটি সম্ভাব্য একটি জঙ্গি হানার ছক বানচাল করে দেওয়ার জন্যে কৃতিত্ব দাবি করতে পারে দেশের গোয়েন্দা নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। মনে করা হচ্ছে এই জঙ্গি হানার পিছনে সরাসরি আইসিসের যোগ রয়েছে। গোয়েন্দাদের টিপ অফের উপর নির্ভর করে উত্তরপ্রদেশের অ্যান্টি টেরর স্কোয়াড (এটিএস) এবং এনআইএ যুগ্মভাবে এই ছক ব্যর্থ করে।

এই সাফল্যে ফলে আরও একটি বিষয় নজরে আসে - আইসিস মদতপুষ্ট সংগঠনগুলো এখনও প্রতিনিয়ত দেশের তরুণদের চরমপন্থায় বিশ্বাসী করে তুলে চলেছে।

এই ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরণ উদ্ধার করা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে আসন্ন বর্ষবরণ অনুষ্ঠান বা প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে দিল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ছক কষা হয়েছিল। এই দিনগুলোতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারলে আইসিসের ভাবমূর্তি অনেকটাই জোরদার হতে পারত। এই জঙ্গি হানা সফল হলেই, চরমপন্থায় বিশ্বাসী অনেক তরুণরাই কিন্তু হিংসা ছড়ানোর জন্যে উদ্বুদ্ধ হতে পারত।

সাম্প্রতিক কয়েকটি রিপোর্টে বলা হয়েছে যে সিরিয়ার আইসিস দুর্গগুলোতে ভাঙন ধরতে শুরু করেছে এবং আইসিস শিবিরে নতুন লোক নিয়োগের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। কিন্তু দিল্লির এই গ্রেফতারির পরে মনে হচ্ছে যে নিয়োগ সংখ্যা মোটেও কমেনি। উল্টে নিয়োগ পদ্ধতিতে গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়েছে। বিষয়টিকে যতটাই সহজ সরল বলে মনে হচ্ছে, বিষয়টি কিন্তু আদৌ এতটা সাধারণ নয়।

body_122818053636.jpgরাজধানী দিল্লিতে এনআইএর আধিকারিকদের অভিযান [ছবি: পিটিআই]

চরমপন্থীতে দীক্ষা নেওয়ার প্রক্রিয়া হয়েই চলেছে। আর, তাই নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে সব সময়ই সজাগ থাকতে হবে। দেখতে হবে যে বিদেশি অর্থ সাহায্যে কোনও জঙ্গি হানার ছক কষা হচ্ছে কিনা। তবে, এর মাঝেও ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর - বিশেষ করে গোয়েন্দা সংস্থার - প্রশংসা করতেই হবে। তাদের জন্যই এই জঙ্গি হানার ছক বানচাল করা সম্ভব হয়েছে। গোয়েন্দাদের জন্যই এই 'দীক্ষিত' তরুণদের সিরিয়াগামী বিমানে ওঠা সম্ভব হয়নি।

নিঃসন্দেহে এই সাফল্য যথেষ্ট প্রশংসাসূচক।

জঙ্গি হানার ছক ভেস্তে দেওয়া অবশ্যই সহজ কথা নয়। এই প্রেক্ষিতে বলতেই হচ্ছে, নিয়মিত ভাবে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশের এটিএস অসাধারণ কাজ করে চলেছে। সম্প্রতি এটিএস আধিকারিকরা পাকিস্তানের আইএসআই পরিচালিত বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেটে অভিযান চালিয়েছেন। এই সিন্ডিকেটগুলোর গুপ্তচররা আবার সেনাবাহিনীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে গোপন খবর সংগ্রহের চেষ্টা করে চলেছে।

body1_122818053735.jpgউত্তর প্রদেশের এটিএস এবং এনআইএ যৌথ ভাবে কাজ করুক

আইসিসের সঙ্গে যোগসাজসের জন্য দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোক ১১৭ জনকে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোক গ্রেফতার হয়েছে রাজ্যের আমরোহা জেলা থেকে।

এটিএস আধিকারিকদের বাহবা ও সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া উচিত যাতে তারা প্রয়োজনে জম্মু ও কাশ্মীরে গিয়ে তদন্ত চালাতে পারে। যে নতুন জঙ্গি সংগঠনটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে তার নাম 'হরকত-উল-হরব-এ-ইসলাম'। এদের সঙ্গে অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোর সম্পর্ক নিয়ে তথ্য বের করা শুধুমাত্র ম্যারাথন জেরার ফলেই সম্ভব।

এছাড়া, আরও বেশ কয়েকটি ব্যাপার প্রকাশ্যে আনতে হবে। জঙ্গিদের আরও বিভিন্ন ধরণের পরিকল্পনা রয়েছে। আর গোয়েন্দাদের সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে রকেট লঞ্চার, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র দিল্লির জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে।

জঙ্গিদের পরিকল্পনা ও জঙ্গি গোষ্ঠীদের সঙ্গে বিদেশিদের যোগাযোগ সম্পর্কিত তথ্যও জেরার মাধ্যমে জানা যাবে। যদি এই জেরাতে স্থানীয় লোকেদের নামও উঠে আসে তাহলে অবাক হওয়ার মত কিছু নেই। সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে। আর তাই এই মুহূর্তে এনআইএস এবং এটিএসকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।

বর্ষবরণের রাতে আর প্রজাতন্ত্র দিবসে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে।

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

SHANTANU MUKHARJI SHANTANU MUKHARJI @shantanu2818

The author is a retired IPS officer who has held key positions in the Government of India handling sensitive security issues within and outside India

Comment