ভারতের স্মারক নোট ও কয়েনে মহাত্মা গান্ধী

ভারতে স্মারক নোট বার হয়েছিল একবারই, গান্ধীর জন্মশতবর্ষে

 |  4-minute read |   28-12-2018
  • Total Shares

ভারতে নানা ধরণের স্মারক কয়েন প্রকাশ হলেও স্মারক নোট একবারই মাত্র প্রকাশ করা হয়েছিল, সেটি মহাত্মা গান্ধীর জন্মশতবর্ষে। তারপরে ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত ৫০০ টাকায় প্রথম কারও মুখ ছাপা হয়, এবং তারপর থেকে একমাত্র গান্ধীর ছবি দেওয়া নোটই প্রকাশ হয়ে আসছে।

ইন্ডিয়ান কয়েনেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী এক টাকার কাগজের হলেও সেটি কয়েন এবং সে জন্য সেই কাগজের কয়েনে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক লেখা থাকে না, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের সইও থাকে না। ১৯৬৯ সালে কাগজের সেই এক টাকায় ছিল গান্ধীর ছবি।

re_1_gandhi_122818034239.jpgগান্ধীর কয়েনের ছবি এক টাকায়

সেই বছরই বেশ কয়েকটি নোট প্রকাশ করা হয় গান্ধীর স্মরণে। ২ টাকা, পাঁচ টাকা, ১০ টাকা ও ১০০ টাকার স্মারক নোট। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সেই একবারমাত্র কোনও স্মারক নোট প্রকাশিত হয়েছে। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বহু স্মারক নোট প্রকাশিত হয়ে থাকে।

2-rupee-gandhi-note_122818034323.jpgগান্ধীর স্মারক ২ টাকা

rs5-gandhi_122818034408.jpgগান্ধীর স্মারক ৫ টাকা

gandhi-10-note_122818034455.jpgগান্ধীর স্মারক ১০ টাকা

100-gandhi_122818034518.jpgগান্ধীর স্মারক ১০০ টাকা

সেই বছরই গান্ধীর স্মারক ২০ পয়সা, ৫০ পয়সা, এক টাকা ও ১০ টাকার কয়েন বার হয়। গান্ধীই একমাত্র ব্যক্তি যাঁর ছবি দেওয়া ২০ পয়সার স্মারক মুদ্রা প্রকাশিত হয়েছে। সরকারি ভাবে ২৫ পয়সা বা তা নীচের সমস্ত মুদ্রা বাতিল করা হয়েছে ২০১১ সালের ২৯ জুন। অর্থাৎ ৩০ জুন তারিখ থেকে ২৫ পয়সা বা তার চেয়ে কম মূল্যের সব মুদ্রাই অচল হয়ে গেছে। স্বভাবতই নতুন করে ২০ পয়সার মুদ্রা প্রকাশের আপাতত আর কোনও উপায় নেই।

20gandhi_122818034605.jpgগান্ধীর স্মারক ২০ পয়সা

50-paise-1968_122818034633.jpgগান্ধীর স্মারক ৫০ পয়সা

1_rupee_122818034712.jpgগান্ধীর স্মারক ১ টাকা

দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে প্রথম ১০ টাকার কয়েনটিও গান্ধীর ছবি দেওয়া। মুদ্রাটি বাজারে সাধারণের ব্যবহারের জন্যই ছিল। কিন্তু রুপোর এই মুদ্রাটি অল্প দিনের মধ্যেই বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় সঙ্গত কারণেই। এই মুদ্রায় থাকা রুপোর দাম ১০ টাকার চেয়ে বেশি হয়ে যায় ১৯৭২ সালের মধ্যেই। তা ছাড়া সেই সময়ে ১০ টাকার দাম ছিল অনেক, তাই সাধারণ কেনাকাটার জন্য এত টাকা দরকার হত না।

10-coin_122818034739.jpgগান্ধীর স্মারক ১০ টাকা

গান্ধীর ছাপ দেওয়া টাকাই এখন বাজারে চালু রয়েছে। তবে ২০১৬ সালে বিমুদ্রাকরণের পরে নতুন নকশার যে সব নোট চালু হচ্ছে তাতে স্বচ্ছ ভারতের বিজ্ঞাপন দেওয়া গান্ধীজির চশমার ছবি থাকছে।

শুধু গান্ধীর স্মারক মুদ্রা নয়, বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন স্মারক মুদ্রায় গান্ধীর প্রকিকৃতি ব্যবহার করা হয়েছে। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সুবণর্জয়ন্তী বর্ষে প্রকাশিত মুদ্রায় গান্ধী না থেকেও ছিলেন। তিনিই ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, তাই সেখানে তাঁর না থাকাটাই অস্বাভাবিক।

quit-india_122818035544.jpgভারত ছাড়ো আন্দোলনের স্মারক ১ টাকা

১৯৯৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৫০ বছরের স্মারক মুদ্রায় গান্ধীর ছবি ছিল। ১৯৪৭ সালে অন্য কোনও চিহ্ন ব্যবহার না করে (অন্তত লালকেল্লা ছবি ব্যবহার করা যেত বা জাতীয় পতাকার) কেন ডান্ডি অভিযানের ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল তা নিয়ে তর্ক চলতে পারে।

independence_122818034844.jpg১৯৯৭ সালের স্মারক ৫০ পয়সা

তবে ডান্ডি অভিযান নিয়ে পৃথক মুদ্রাও বার হয়েছে, ২০০৫ সালে।

dandi-5_122818034923.jpgডান্ডি অভিযানের স্মারক মুদ্রা

dandi100_122818034957.jpgডান্ডি অভিযানের স্মারক মুদ্রা, শুধুমাত্র সংগ্রাহকদের জন্য

খাদি গ্রামোদ্যোগ শুদু হয়েছিল ১৯৫৪ সালে, গান্ধীর মৃত্যুর ছ’বছর পরে। আশ্চর্য়জনক ভাবে সেখানেও গান্ধীর ছবিই ব্যবহার করা হয়েছিল, কারণ সরকারি ভাবে যবেই তা শুরু হয়ে থাকুক, গান্ধীর চরকায় সুতো কাটা তো প্রতীক হয়ে গিয়েছে।

khadi5_122818035025.jpgখাদি গ্রামোদ্যোগের ৫০ বছর

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মহাত্মা গান্ধীর ভারতে ফেরার মুদ্রাটি বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য। একই মুদ্রায় তাঁর দুই বয়সের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। আমি অন্তত এমন কোনও মুদ্রা কখনও দেখিনি। একই মুদ্রায় একাধিক নামী ব্যক্তির ছবি এ দেশের স্মারক মুদ্রায় ছাপা হয়েছে, কিন্তু একই ব্যক্তির বিভিন্ন বয়সের মুখাবয়ব চাপা নজিরবিহীন।

return_122818035106.jpgস্মারক মুদ্রায় গান্ধীজির দুই বয়সের মুখ, একসঙ্গে

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু যাঁকে জাতির জনক বলে সম্বোধন করেছিলেন, এ বছর তাঁর জন্মের সার্ধ্বশতবর্ষ পালন করা শুরু হয়ে গেছে। সম্ভবত তা নিয়ে ২০১৯ সালে স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করবে ভারত সরকার।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

SUMITRO BANDYOPADHYAY
Comment