ট্রেলার যাতায়াত বন্ধে হলে বহু মানুষ কর্মহীন হবেন, নষ্ট হবে কৃষি সামগ্রীও
শহরে ঢোকার ও বের হওয়ার বহু রাস্তায় লরি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে
- Total Shares
মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার জেরেই রাজ্য সরকার জানিয়েছে যে রাজ্যের চারটি সেতুর উপর দিয়ে পণ্যবাহী কুড়ি চাকার ও তার বেশি চাকার লরি ও ট্রাক চলাচল করতে পারবে না। কলকাতা পুলিশের তরফে জানান হয়েছে যে অরবিন্দ সেতু, বেলগাছিয়া সেতু, টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড ও বিজন সেতুর উপর দিয়ে ২০ চাকার বা তার বেশি চাকার পণ্য পরিবহণকারী লরি বা ট্রাক যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
১৮ চাকা, ২০ চাকা এবং ২২ চাকার ট্রাক বা লরিকে ট্রেলার বলা হয়। এই ধরণের ট্রাক বন্দরের দিকেই বেশি চলাচল করে, কারণ যে সব বড় জাহাজে করে বিদেশ থেকে আমাদের রাজ্যে কন্টেনারে পণ্য আসে, সেগুলো এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রেলারের ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়াও ট্রেলারে বড় ট্রাক্টার, কৃষিসামগ্রী, ছোটগাড়ি, বিভিন্ন কারখানার নানা সরঞ্জাম প্রভৃতি বহনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
লরি বন্ধ হয়ে গেলে ভবিষতে মাল কী ভাবে আনা হবে?
তাই এই ধরণের লরি বন্ধ হয়ে গেলে ভবিষ্যতে মাল কী ভাবে আনা হবে সেটা ঠিক আমাদের কাছে এখনও পরিষ্কার নয়। এই ট্রেলার বন্ধ হয়ে গেলে মাল অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটা বিরাট সমস্যা দেখা দেবে।
তাছাড়া এতগুলো ট্রাক যদি না চলতে পারে কিংবা অন্য রাজ্য থেকে আমাদের রাজ্যে বড় ট্রাক ঢুকতে না পারে তাহলে অসম্ভব অসুবিধার সৃষ্টি হবে। হঠাছ যদি এতগুলো ট্রাক বসে যায় তাহলে ট্রাক চালক থেকে শুরু করে যাঁরা এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছেন তাঁদেরও শিরে সংক্রান্তির অবস্থা হয়ে দাঁড়াবে। বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন।
সবদিক বিচার করে রাজ্য সরকারের অতি শীঘ্র কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া উচিত
তাছাড়া ২০ চাকা বা তার বেশি চাকার লরি ও ট্রাকের চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। শহরে ঢোকার এবং বেরনোর বহু রাস্তায় ইতিমধ্যেই লরি ও ট্রাক যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে আরও একটা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে সেটা হল যেসব লরিতে মাল বোঝাই করা হয়ে গেছে সে সব লরি যদি সময় মতো তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে না পারে তাহলে বহু টাকার ক্ষতি হয়ে যাবে। পাশাপাশি যেসব লরিতে খাবার ও কৃষিপণ্য বোঝাই করা আছে সেগুলো পচেও যেতে পারে।
সমস্যাটা সারা দেশ জুড়ে
যতদিন না অবৈধ ওভারলোডিংয়ের সমস্যার কোনও সমাধান হচ্ছে ততদিন আসল সমস্যার সুরাহা হবে না। যে ধরণের ট্রেলার যাতে নয় থেকে দশ টন পর্যন্ত মাল তোলা সম্ভব তাতে যদি ৩০ থেকে ৪০ টন পর্যন্ত মাল তোলা হয় তা হলে তাতে যে রাস্তাঘাটের ক্ষতি হবে সেটা বলাই বাহুল্য। এবং ইচ্ছেমতো টাকা তুলে সে সব লরিগুলো শহরের বুকে রমরমিয়ে যাতায়াতও করে চলেছে। এই বিষয় আমরা অনেকবার পরিবহণ দপ্তর থেকে শুরু করে নবান্ন পর্যন্ত চিঠিও লিখেছি। তবে তেমন একটা কাজ হয়নি। শুধু ওভারলোডিংয়ের সমস্যা বন্ধ করতে পারলেই অনেকটা সুরাহা হবে বলে আমরা মনে করি।
এই সমস্যাটা সারা দেশ জুড়ে।
ওভারলোডিংয়ের সমস্যা বন্ধ করতে পারলেই অনেকটা সুরাহা হবে
আমার মনে হয় মুখ্যমন্ত্রীর একটা বিকল্প ব্যবস্থার কথাও চিন্তা করা উচিত। এই ধরণের ট্রাকের চলাচলের জন্য যদি নির্দিষ্ট কয়েকটি রাস্তা নির্ধারণ করে দেওয়া যায় তা হলে খুব একটা অসুবিধা হবে না।
সবদিক বিচার করে রাজ্য সরকারের অতি শীঘ্র কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

