মানব দেহে মেসেনটারির আবিষ্কার কেন তাৎপর্যপূর্ণ?
জ্ঞানকে কী কোনও শিক্ষা সংস্থার ঘেরাটোপের মধ্যে আটকে রাখা যায়?
- Total Shares
মেসেনটারির পুনঃআবিষ্কারের ফলে এবার মানব দেহের ভেতরকার অঙ্গ বা যন্ত্রের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৭৯। পেরিটোনিযাম ক্ষুদ্রান্তকে ধরে রাখতে সাহায্য করে আর এই পেরিটোনিয়ামের জোড়া ভাঁজের অংশটিকে মেসেনটারি বলা হয়। ইউনিভার্সিটি অফ লিমারিকের অধ্যাপক জে ক্যালভিন কফি তাঁর গবেষণার সময় পেটের ভেতরের একটি অংশ অন্য আর একটি অজানা অংশের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে লক্ষ্য করে সেই অংশটি নিয়ে গবেষণা করেন। এর ফলেই মেসেনটারি আবিষ্কার হয়।
এবার ওষুধের সংস্থাগুলি অঙ্গটির বিষয় আরও অনেক জটিল গবেষণা করবে এবং পেটের নানা রোগের সঙ্গে এই অঙ্গটির কোনও সম্পর্ক আছে কি না সেটাও জানার চেষ্টা করবে। ফলে হয়তো পেটের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হবে যার খরচও হবে অনেক কম।
বহুমুখী প্রতিভাশালী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি মানব দেহের এই অঙ্গটির কথা বলে গিয়েছিলেন ১৫০৮ সালে। আজ তাঁর সেই কথার সত্যতা প্রমাণিত হল।
তাই আমার মনে হয় বিজ্ঞান শাস্ত্র বা অন্য কোনও শিক্ষা শাস্ত্রকে সীমাবদ্ধ করে রাখাটা উচিত নয়। একটি শিক্ষা শাস্ত্রের যে ওপর শাস্ত্রটিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে অবদান থাকতে পারে সে কথাটাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া উচিত নয়।
তাই বহু বছর আগে প্রতিভাশালী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির এই আবিষ্কার তখন উপেক্ষা করা হলেও এত বছর পরে সেটা পুনঃআবিষ্কৃত হল।

তাই শিক্ষা শাস্ত্রকে সীমাবদ্ধ করে না রেখে একটি শিক্ষা শাস্ত্র যে অনন্য আর একটিকে প্রভাবিত করতে পারে বা সবকটির সঙ্গে সবকটির যে একটা যোগাযোগ স্থাপন হতে পারে সেই সুযোগ করে দেওয়া উচিত। সম্প্রতি কয়েকটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে একটি বাদ্যযন্ত্র শিখতে গেলেও অংকের প্রয়োজন পরে। তাই, সামগ্রিক শিক্ষা শাস্ত্রকে বিজ্ঞান, কলা কিংবা মানবিক শিক্ষার ভিত্তিতে বিভাজন করা উচিত হবে কি? তাই যে শিশুটি বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছে তাকেও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি কোনও দিন কোনও কলেজে পড়াশোনা করেননি তবুও তাঁর মত একজন বিদগ্ধ মানুষ বিরল, যাঁর জ্ঞান ছিল অসীম। তিনি তাঁর গোটা জীবনে যা শিখেছেন তার সিকিভাগ আমরা জানিনা। তাই কোনও ব্যক্তির জ্ঞানের পরিমাপ সে কোন কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করেছেন বা তাঁর কতগুলো ডিগ্রী আছে সেসব দিয়ে বিচার করা যায় কি? জ্ঞানকে কী কোনও শিক্ষা সংস্থার ঘেরাটোপের মধ্যে আটকে রাখা যায়?
যদিও অনেকের মতে একটা গতে বাধা ও ছাঁচে ফেলা একটা নিয়ম হল শিক্ষা যেখানে জ্ঞানের গভীরতার বিচার করা হয় পরীক্ষার মাধ্যমে। আবার অনেকের কাছে শিক্ষা ব্যবহারিক। আমরা কেউ নিশ্চয়ই এমন কোনও চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করতে যাবো না যিনি পরীক্ষানিরীক্ষা বা গবেষণার মধ্য দিয়ে চিকিৎসা করেন। তবে অন্যদিকে যে যেকোনও ধরণের বড় আবিষ্কার করতে হলে ধরা যাক ক্যান্সার সারাতে কোনও নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির আবিষ্কার করতে হলে এই পরীক্ষানিরীক্ষা বা গবেষণার প্রয়োজন।
তাই যতদিন না শিক্ষা ব্যবস্থার নতুন কোনও পদ্ধতি আমাদের সামনে খুলছে ততদিন পর্যন্ত মেসেনটারির আবিষ্কার নিয়েই আমাদের উল্লাসিত থাকতে হবে।
লেখাটি ইংরেজিতে পড়ুন

