স্টেশনে যখন দু'জন প্রহৃত হলেন তখন নিরাপত্তা রক্ষীরা কী করছিলেন
আইন ভাঙার এই প্রবণতা ভালো নয়, অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে আমাদের কিন্তু ভুগতে হবে
- Total Shares
দেশের গন্ডগ্রামগুলিতে এখনও সালিশি সভার প্ৰথা আছে। কিন্তু, তাই বলে খোদ কলকাতার বুকে, তাও আবার মেট্রো স্টেশনের ভিতর। আজ সকাল থেকেই খবরটা ভাইরাল হয়েছে। মেট্রোর কামরায় আলিঙ্গন করছিল বলে যুগলকে গণপ্রহার করল সহযাত্রীরা।
গোটা শহর জুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে - কে ঠিক, আর কে ভুল। মানে, জনসমক্ষে মেট্রোর কামরায় আলিঙ্গন করাটা কী ঠিক? নাকি, তাঁরা কোনও অন্যায় করেননি। বরঞ্চ আইন হাতে তুলে নিয়ে সহযাত্রীরাই অন্যায় করেছেন?
ঘটনার পর স্টেশনের বাইরে ছাত্রদের প্রতিবাদ
আমাকে কিন্তু অন্য একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় চিন্তায় রাখছে। মেট্রো স্টেশনের মধ্যে যখন এই ধরণের একটা ঝামেলা চলছিল তখন মেট্রো রেলের সুরক্ষা সংস্থাগুলোর আধিকারিকরা কী করছিলেন? কলকাতা পুলিশের মেট্রো রেল পুলিশ ও রেল পুলিশ যৌথ ভাবে মেট্রোর সুরক্ষার দায়িত্বে আছে। মেট্রো স্টেশনের মধ্যে কোনও বেআইনি ঘটনা ঘটলে স্টেশনটি যে থানার আওয়তায় পরে সেই থানাতে মামলা রুজু হয়।
এক্ষেত্রে আরপিএফের বা মেট্রো রেল পুলিশের উচিৎ ছিল ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সকলকে আটক করে স্থানীয় থানার হাত তাঁদের তুলে দেওয়া। শুধু তাই নয়, মামলা রুজু হলে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া উচিৎ মেট্রো কতৃপক্ষের। কিন্তু এসবের কিছুই করা হলো না। ভাবতে বেশ অবাক লাগছে কী ভাবে মেট্রো স্টেশনের মতো একটি সুরক্ষিত জায়গায় একদল লোক দু'জনকে মারধর করেও সাবলীল ভাবে মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে যেতে পারল।
একটা বাহানা দেওয়া হচ্ছে যে কোনও রকম অভিযোগ জমা পড়েনি বলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যাঁরা প্রহৃত হলো তাঁদের কী অভিযোগ করবার জন্য ভরসা দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের মতো নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর দায়িত্ব ভরসা দেওয়া। কিন্তু তাঁরা তা করলেন না।
A young couple embraced in Kolkata metro. It made a bunch of frustrated old losers angry. They beat them up. Scenes of hatred are allowed. Scenes of love are considered obscene. pic.twitter.com/Jv4zNaMDe8
— taslima nasreen (@taslimanasreen) May 1, 2018
এভাবে চললে মেট্রোর সুরক্ষা ব্যবস্থা কিন্তু প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়তে বাধ্য। যা কোনওভাবেই অভিপ্রেত নয়।
এই ঘটনায় আরও একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেল। আমরা সহিষ্ণুতা কী ভাবে হারিয়ে ফেলেছি। ধরে নিলাম ওই যুগল ভুল করেছেন। কিন্তু তাই বলে সহযাত্রীরা তো দেশের আদালত নয়। সহযাত্রীরা কী ভাবে শাস্তি ঘোষণা করে ফেলতে পারেন? এক্ষেত্রে শুধু শাস্তি ঘোষণা করেই তাঁরা থেমে থাকেননি।শাস্তিও নিজে হাতে দিয়ে দিলেন তাঁরা।
আইন ভাঙার এই প্রবণতা কিন্তু সমাজের পক্ষে ভালো নয়। এর বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে আমাদের কিন্তু ভুগতে হবে।

