শুধু নিষিদ্ধ করলেই হবে না সচেতনতা বাড়াতে পাঠক্রমে আসুক মোবাইল ফোনও

সাইবার সুরক্ষা ও মোবাইলের সঠিক ব্যবহার পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত প্রয়োজনীয়

 |  2-minute read |   12-08-2018
  • Total Shares

হাতে থাকা স্মার্টফোন যদি পড়ুয়ারা তাদের দৈনন্দিন জীবনের একটা অভ্যাস বানিয়ে ফেলে তাহলে তা খুবই চিন্তার বিষয় হয় দাঁড়াবে। একটা সময়ের পর তারা মোবাইলফোন ছাড়া থাকতেই পারবে না। আমি এমন বহু ছাত্রছাত্রী দেখেছি যাঁরা মোবাইলে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পড়াশোনা সংক্রান্ত জিনিসপত্র দেখে বলে অবিভাবকদের মোবাইলফোনের দাবি করে। এর ফলে এদের যে শুধু পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে এমনটানয় এরা বাবামা ও বাড়ির অন্যান্যদের থেকেও সম্পূর্ণ ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

এখন খবরের কাগজ খুললেই মোবাইলফোন কিংবা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার কুপ্রভাবের যেতে আত্মহত্যা, খুন, ধর্ষণের মতো সব ধারণা দেখতে পাই। এখানে তাই স্বভাবিক ভাবেই এইসব ছেলেমেয়ে যারা এখনও নিজেদের ভালোটা বা মন্দতা সম্পূর্ণ ভাবে বুঝে উঠতে পারেনি তাদের একটা সামাজিক নিরাপত্তার দিকটাও চলে আসছে।

body3_081218092841.jpgসাইবার সুরক্ষা ও মোবাইলের সঠিক ব্যবহার পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত প্রয়োজনীয়

পড়াশোনার ফাঁকে মাঝেমধ্যেই নিজেদের ফোনের স্ক্রিনে চটকরে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে দেখে নেওয়া যে আমার মেসেজের কজন উত্তর দিলে কিংবা আমাদের কে বা কারা মেসেজ পাঠাল, এর ফলে সেই পড়ুয়া পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে পারে না তার মনটা খালি মোবাইল ফোনটার দিকেই পড়ে থাকে। কাজেই সাইবার সিকিউরিটির পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা কী পদ্ধতিতে মোবাইল ব্যবহার করবে সে বিষয় তাদের সচেতন করে তোলা যায় তাহলে ছাত্রছাত্রীরা অনেকখানি উপকৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস। তাই মোবাইল ফোন তথা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার 'অ্যাপ্লিকেশনের'-এর কুখল এবং সুফলের দিকে যদি যথাযত ভাবে এদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায় তাহলে আমার বিশ্বাস তারোও নিশ্চয়ই বুঝবে। এযুগের ছেলেমেয়েরা অনেক বেশি চটপটে। প্রযুক্তির অবিশ্বাস উন্নতি ঘটেছে যাকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে অনেক অসাধ্য সাধন করা সম্ভব। তাই তাদের বোঝাতে হবে যে প্রযুক্তিকে ঠিকঠাক ভাবে কাজে না লাগালে আখেরে তারা নিজেদের জীবনেও বিপত্তি দেখে আনতে পারে।

তাই আমার মনে হয় সব স্কুলেই যদি ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম অথবা সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণী পর্যন্ত যদি সাইবার সিকিউরিটি, মোবাইলফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কিত মৌলিক জ্ঞান পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাহলে ছাত্র সমাজ উপকৃত হবে।

body2_081218092941.jpgপড়াশোনার ফাঁকে মাঝেমধ্যেই ফোনের স্ক্রিনে চট করে একবার চোখ বুলিয়ে নিচ্ছে

মাথায় রাখতে হবে শাসন করে কিংবা মারধর করে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব নয় তাতে হয়তো সাময়িক ভাবে কাজ হবে তবে তার কোনও সুদূর প্রসারী ফল হয় না।

যদিও আজ প্রায় দীর্ঘ সময় ধরেই আমরা মোবাইল ফোনের ব্যবহার বা সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ করি কিন্তু সেটাই যথেষ্ট নয়। তাই নিয়ম করে এই বিষয়টিকে যদি পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা যায় তাহলে অনেক বিপদ হয়তো এড়ান সম্ভব হবে।

body1_081218093025.jpgসোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কিত মৌলিক জ্ঞান পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত

এবার এখানে একটা প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে সেটা হল বিষয়টি কারা পড়াবেন। যথাযত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই এবিষয়টি পড়াতে সক্ষম হবে। 

স্কুলকে আমরা সেন্টার অফ এক্সসেলেন্স বলে থাকি তাই স্কুলে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করলে আমরা তাদের প্রতি সম্পূর্ণ ও যথাযত দ্বায়িত্ব পালন করা হবে না। স্কুল  থেকে বাড়ি  যাতে তারা  মোবাইলফোনটার অপব্যবহার না করে সেই বিষয়টিও স্কুলকেই নিশ্চিত করতে হবে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000
Comment