এনটিএ-র প্রবেশিকা পরীক্ষায় আবার নাকাল হওয়ার আশঙ্কা ছাত্রছাত্রী

এই ধরণের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলো ক্ষেত্রে সরকারের এ হেন খামখেয়ালীপনার কোনও যুক্তি আছে কী?

 |  2-minute read |   11-07-2018
  • Total Shares

নিট-ইউজি পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্বভার এবার তুলে দেওয়া হচ্ছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সী (এনটিএ)-র হাতে। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা বাতিল করে যখন নিট চালু হওয়ার প্রস্তাব উঠলো তখন সরকারি পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে এখনও পর্যন্ত ডাক্তারিতে ভর্তির এই প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে বিভিন্ন দুর্নীতি হয়েছে তাই এই সমস্ত দুর্নীতি ঠেকাতেই পরীক্ষার ভার তুলে দেওয়া হবে সিবিএসই-র হাতে।

এনটিএ আগামী বছর থেকে জেইই-মেইন, নিট, সিম্যাট, জিপ্যাট ও ইউজিসি নেট পরীক্ষা নেবে।

নিট চালু করার পক্ষে যে যুক্তিগুলো তখন খাড়া করা হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি হল এই পরীক্ষা  চালু হলে প্রবেশিকা পরীক্ষার মান বাড়বে এবং সারাদেশ জুড়ে একই মান বজায় থাকবে।এছাড়াও বলা হয় যে একটা দেশে একটাই প্রবেশিকা পরীক্ষা হওয়া উচিৎ (ওয়ান নেশন, ওয়ান এগজামিনেশন)। সবচেয়ে বড় যে দাবিটি করা হয়েছিল সেটা হল নিট চালু হলে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে, যা আসলে ছিল সম্পূর্ণ একটা ভাওতা।  

neet_body_071118095731.jpg

এবার সেই নিট পরীক্ষা থেকেই তাদের আস্থা চলে গেলে। এবার তাই কেন্দ্র সরকার ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়ার ভার তুলে দিলো নবগঠিত ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সী (এনটিএ)-র হাতে। তাহলে নিট চালু করার সময় যে যুক্তিগুলো খাড়া করা হয়েছিল দেখা যাচ্ছে যে বাস্তবে সেগুলি পূরণ হয়নি, প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবের মধ্যে একটা বিশাল ফারাক রয়ে গেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই এখন প্রশ্ন উঠছে যে এনটিএ-র ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিগুলো কতখানি বাস্তবায়িত হবে?

যখন পরীক্ষা নেওয়ার ভার সিবিএসই-র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল তখন বলা হয়েছিল যে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ব্যাপক ভাবে দুর্নীতি হচ্ছে বলে তাদের থেকে এই দায়িত্ব সরিয়ে নিয়ে সিবিএসই-কে দেওয়া হচ্ছে। তখন আমরা প্রশ্ন তুলি যে জাতীয় স্তরে অন্যান্য আরও অনেক বোর্ড থাকা সত্ত্বেও হটাৎ সিবিএসসিকে এই দ্বায়িত্ব কেন দেওয়ার হল? তখন বলা হয় যে সবকটি বোর্ডের মধ্যে সিবিএসই সর্ববৃহৎ এবং এদের এই ধরণের পরীক্ষা নেওয়ার অভিজ্ঞতাও যেমন রয়েছে তেমন পরিকাঠামোও রয়েছে। তারপর নিট চালু হলে গোড়া থেকে বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে এই প্রবেশিকা পরীক্ষা।

এবারে আবার যখন কেন্দ্র সরকার এনটিএ গঠন করে তার হাতে পরীক্ষার সব ভার তুলে দিচ্ছে এই সন্থাটির সম্পর্কেও এখন অনেক ইতিবাচক কথা বলা হচ্ছে যদিও সংস্থাটির একদম নতুন এবং এর পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও অভিজ্ঞতাও নেই। তাই সংস্থাটি যে খুব দক্ষভাবে পরীক্ষা পরিচালনা করতে পারবে তার কী কোনও নিশ্চিয়তা রয়েছে?

neet_body2_071118095747.jpg

কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর সম্পর্কিত একটি সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন যে আগামী বছর অর্থাৎ ২০১৯ থেকে নিট পরীক্ষা বছরে দু'বার নেওয়া হবে পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে যে আগামী বছর থেকে পুরো পরীক্ষাটাই অনলাইনের মাধ্যমে হবে।

আমাদের প্রশ্ন হল ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলো ক্ষেত্রে সরকারের এ হেন খামখেয়ালীপনার কোনও যুক্তি আছে কী? কেন্দ্র সরকারকে বুঝতে হবে যে এই পরীক্ষাগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর স্বপ্ন ও ভবিষৎ। পরীক্ষা ও পরীক্ষার নিয়মকাননে বারবার এই ধরণের পরিবর্তনের ফলে ছাত্রছাত্রীদের চূড়ান্ত অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এটা একেবারেই অগণতান্ত্রিক।

আমি আগেও যেমন বলেছি কেন্দ্রীয় সরকার নিজেরাই সব ঠিক করছে এবং সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। দেশের শিক্ষাবিদ বা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কিছুই করছেন না বা তাঁদের মতামত আহ্বান করছেন না।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

DR. MRIDUL SARKAR DR. MRIDUL SARKAR

DSO, State President

Comment