নীরব মোদী ধৃত: লন্ডনে গ্রেফতারি ম্যায়ভিচৌকিদার প্রচারে অনুঘটকের কাজ করবে

এতে স্পষ্ট যে হাজার হাজার কোটি টাকা অনাদায়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বিচার শুরু হতে চলেছে

 |  3-minute read |   22-03-2019
  • Total Shares

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর #ম্যায়ভিচৌকিদার (#MainBhiChowkidaar) প্রচার শুরু করার পরেই মুম্বই-কেন্দ্রিক প্রাক্তন হীরে ব্যবসায়ী ও স্বর্ণালঙ্কার শিল্পী নীরব মোদীর গ্রেফতারি তাঁর প্রচারে হাওয়া জোগাবে। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক থেকে ১১,৩৬০ কোটি না ঋণখেলাপিতে প্রধান অভিযুক্ত নীরব মোদী ২০ মার্চ লন্ডনে গ্রেফতার হলেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার প্রায় ১৭ মাসের মাথায়।

1-nirav_032219012205.jpg প্রায় ১৭ মাস কেটে যাওয়ার পরে লন্ডনে গ্রেফতার হলেন নীরব মোদী। (ছবি: টিভি গ্র্যাব)

নীরব মোদীকে লন্ডনের একটি আদালতে পেশ করা হয়।

এই গ্রেফতারির পরে মনে করা হচ্ছে এ দেশে বিচার করার জন্য নীরব মোদীকে দেশে ফেরানোর ব্যাপারে প্রথম পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে নীরব মোদী ও তাঁর মামা মেহুল চোক্সির বিরুদ্ধে পঞ্চাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে ঋণ খেলাপের অভিযোগ ওঠার পরেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। যখন রাহুল গান্ধীর চৌকিদার চোর হ্যায় অভিযোগের পাল্টা হিসাবে যখন নরেন্দ্র মোদী ম্যায় ভি চৌকিদার বলে পাল্টা প্রচার শুরু করেন তখন তিনি দেশের মানুষকে আশ্বাস দেন যে পলাতক ব্যবসায়ীদের দেশে ফেরাতে তাঁর সরকার সব রকম চেষ্টা করবে।

আশ্চর্যের বিষয় হল, যে দিন লন্ডনের টিভি চ্যানেলে নীরব মোদীকে দেখা গেল ঠিক তার পরের দিনই তাঁকে গ্রেফতার করা হল।

2-nirav_032219012239.jpgএই হীরকবণিকের গ্রেফতারি মোদীর প্রচারে হাওয়া জোগাবে। (সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে)

টুইটারে লক্ষ লক্ষ লোক #ম্যায়ভিচৌকিদার (#MainBhiChowkidaar) ক্যাম্পেনে সামিল হওয়ার পরে বিজেপি ঠিক করে যে মোদী সরকার দুর্নীতি ও দুর্নীতিগ্রস্তদের সমর্থক বলে অভিযোগ তুলে রাহুল গান্ধী যে প্রচার করছেন তা একেবারে ভোঁতা করে দেবে।

এমনকি যখন এই প্রচার শুরু হয়েছিল তখন কংগ্রেস তো বটেই, অন্য কয়েকটি রাজনৈতিক দলও নীরব মোদী ও বিজয় মালিয়া কোথায় সেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছিল।

ভারতে বিজয় মালিয়ার প্রত্যর্পণের ব্যাপারে গত ৪ ফেব্রুয়ারি নির্দেশিকায় সই করেছেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রসচিব সাজিদ জাভিদ এবং এখন মল্ল উচ্চ আদালতে এ ব্যাপারে আবেদন জানিয়েছেন। এ কথা অস্বীকার করা যাবে না যে এটা ভারতের একটি বিশাল পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে বিজয় মালিয়া ও নীরব মোদী যদি সবক’টি আইনি পদক্ষেপ সম্পূর্ণ করেন তা হলে তাঁদের দেশে ফেরাতে সাত থেকে আট মাস সময় লাগবে।

ব্যাঙ্কে ঋণখেলাপিদের দেশে ফেরানোর ব্যাপারে ভারত যে রকম কঠিন-কঠোর ভাবে পদক্ষেপ করছে তাতে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই “না খাউঙ্গা না খানে দুঙ্গা”র প্রভাবও পড়তে পারে এ বারের নির্বাচনে।

২০১৮ সালে দেশের চোখে পলাতক হওয়ার আগে সুইটজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে নীরব মোদীকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা যায়। ভারতীয় বণিক প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন এই হিরে ব্যবসায়ী।

এই ঘটনা তখন বিজেপিকে ব্যাপক বিড়ম্বনায় ফেলেছিল।

তবে এখন নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সহযোগীরা নিজেদের চৌকিদার বলছেন, তাঁরা ছোট ছোট শহরে গিয়ে #ম্যায়ভিচৌকিদার (#MainBhiChowkidaar) বলে প্রচার করছেন, নীরব মোদীর গ্রেফতারি ও বিজয় মালিয়ার প্রত্যর্পণের ব্যাপারে যে অগ্রগতি হয়েছে তাতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইযের ব্যাপারে যে প্রতিশ্রুতি ছিল তা বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে।

নীরব মোদী হয়তো খুব শীঘ্রই জামিন পেয়ে যাবেন, যেমন পেয়েছেন বিজয় মালিয়া – তবে তাঁর গ্রেফতারিতে একটা ব্যাপার স্পষ্ট হয়ে গেছে যে দেশে এসে দেশের আইনের সামনে জালিয়াতদের দাঁড় করাতে সরকার বদ্ধপরিকর। এটাও ভোটারদের কাছে সদর্থক বার্তা বহন করে নিয়ে যাবে।

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment